নয়াদিল্লি: দেশের প্রথম আদিবাসী হিসাবে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব সামলাচ্ছেন দ্রৌপদী মুর্মু। ওড়িশার বাসিন্দা দ্রৌপদী মুর্মুকে রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী করার পর থেকেই আদিবাসী বিষয়টি নিয়ে প্রচার করতে দেখা গিয়েছে বিজেপিকে। এই বিষয়টি নিয়েই বুধবার লোকসভায় সরব হলেন কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরী। বিষয়টি নিয়ে বিজেপিকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেছেন তিনি। এক জন রাষ্ট্রপতির জাত বা ধর্ম নিয়ে প্রচার যে আসলে তাঁর কর্মদক্ষতাকে হেয় করে, তাঁকে সম্মানকে ক্ষুণ্ণ করে বলে মনে করেন বহরমপুরের সাংসদ। এ ব্যাপারে বলতে উঠে অধীর রঞ্জন চৌধুরী বলেছেন, “এর আগে অনেক জন ভারতের রাষ্ট্রপতি হয়েছেন। আমিও অনেক দিন ধরেই সাংসদ রয়েছি। এক জন রাষ্ট্রপতির জাত বা ধর্মের ব্যাপারে আলোচনা হতে শুনিনি। বিজেপি দ্রৌপদী মুর্মুকে নিয়ে এমন প্রচার চালাচ্ছে, তা নিন্দনীয়। বিজেপি এটাকে নির্বাচনী ইস্যু বানাতে চাইছে।”
রাষ্ট্রপতির জাতি-ধর্ম নিয়ে বিজেপির প্রচারকে কটাক্ষ করলেন অধীর চৌধুরী। সংসদের যৌথ অধিবেশনে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর ভাষণের পরের দিন নিজের বক্তব্য রাখতে গিয়ে রাখতে গিয়ে অধীর চৌধুরী বলেছেন, “দ্রৌপদী মুর্মু ভারতে ১৫ তম রাষ্ট্রপতি। সংসদে যখন প্রেসিডেন্টের ভাষণ হয়, তখন তাঁর জাত-ধর্মের ব্যাপারে কথা হয় বলে শুনিনি। কিন্তু এ বার প্রথম এ রকম ঘটনা ঘটছে। সারা ভারতে ঢ্যাড়া পেটানো চলছে- বিজেপি এক জন আদিবাসীকে প্রেসিডেন্ট বানিয়েছে। বিষয়টিকে নির্বাচনী ইস্যু বানানোর চেষ্টা চলছে।” এর পরই বিজেপি-কে কড়া আক্রমণ করেছেন কংগ্রেস সাংসদ। বলেছেন, “আমার অবাক লাগছে। আগে কখনও এ রকম হয়নি। বিজেপি যেমন করে রাষ্ট্রপতির পরিচয় তুলে ধরেছে যেন দয়া করছে।”
রাষ্ট্রপতির বিষয়টি বোঝাতে মোদীকেও টেনে এনেছিলেন অধীর। তিনি বলেছেন, “প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্রী মোদীজিকে তো আমরা কখনও ওবিসি দাদা, ওবিসি দাদা বলি না। আমরা বলি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রাষ্ট্রপতির ক্ষেত্রে কেন এ রকম হচ্ছে না।“ এর পরই বিজেপির উদ্দেশে অধীর বলেছেন, “রাষ্ট্রপতির কর্মক্ষমে ভরসা রাখুন, এতেই রাষ্ট্রপতিকে সম্মান দেওয়া হয়।” রাষ্ট্রপতিকে নিয়ে এই মন্তব্যের পরই অধীরের বক্তব্যের বিরোধিতা করেন বিজেপি সাংসদরা। লোকসভার ভাষণে এ ভাবে রাষ্ট্রপতিতে জড়িয়ে কথা বলা যায় না বলে দাব তাঁদের। রাষ্ট্রপতিকে নিয়ে অধীর চৌধুরীর মন্তব্য নজর এড়ায়নি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। রাষ্ট্রপতির ব্যাপারে অধীর চৌধুরীর নাম নমা করেই খোঁচা দিয়েছেন তিনি। মনে করিয়ে দিয়েছেন অধীরের ‘রাষ্ট্রপত্নী’ মন্তব্যের কথা।