চণ্ডীগঢ়: দীর্ঘ ২০ মাস পর খুলছে কর্তারপুর সাহিব করিডর। পাকিস্তানের গুরুদ্বার দরবার সাহিবে এ বার যেতে পারবেন সম্পূর্ণ টিকাপ্রাপ্ত ভারতীয়রা। মঙ্গলবারই দুই দেশের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, পূণ্য দর্শনের জন্য আগত দর্শনার্থীদের অবশ্যই করোনার দুটি টিকাপ্রাপ্ত হতে হবে। একইসঙ্গে যাত্রার আগে করানো আরটি-পিসিআর পরীক্ষার নেগেটিভ রিপোর্টও দেখাতে হবে।
গুরু নানক দেব গুরুদ্বার দরবার সাহিবেই শেষ নিশ্বাঃস ত্যাগ করেছিলেন বলে মনে করা হয়। বর্তমানে পাকিস্তানে অবস্থিত এই গুরুদ্বারকে শিখ ধর্মাবলম্বীরা অত্যন্ত পবিত্র স্থান বলেই মনে করেন। পঞ্জাবের গুরদাসপুরের ডেরা বাবা নানক স্মৃতি সমাধি থেকে সরাসরি পাকিস্তানের গুরুদ্বার দরবার সাহিবকে সংযুক্ত করে এই করিডর।
২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে কর্তারপুর করিডর খোলা হলেও করোনা সংক্রমণের কারণে মাত্র চার মাসের মধ্যেই সেই করিডর বন্ধ করে দেওয়া হয়। প্রায় দেড় বছরের ব্যবধানের পর ফের একবার খুলতে চলেছে এই করিডর। গত ১৫ নভেম্বরই কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে ওই করিডর খুলে দেওয়ার ঘোষণা করা হয়। প্রতিদিন ১০০ থেকে ২০০ জন করে পুণ্যার্থীকে যেতে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। ভারত ও পাকিস্তান-দুই দেশের কাছেই পুণ্যার্থীদের তালিকা জমা দেওয়া হবে দৈনিক ভিত্তিতে। তবে ১৯ নভেম্বর গুরু নানক জন্মজয়ন্তী থাকায় সেদিন পুণ্যয়ার্থীর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে।
কর্তারপুর সাহিব করিডর ব্যবহার করে যারাই পাকিস্তানের গুরুদ্বারে যাবেন, তাদের নিয়মিত তাপমাত্রা পরীক্ষা ও স্যানিটাইজ়েশনের দিকে নজর রাখা হবে। সমস্ত পুণ্যার্থীদেরই সর্বদা মাস্ক পরে থাকতে হবে ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। করোনা টিকার শংসাপত্র ছাড়াও যাত্রার ৭২ ঘণ্টা আগে করানো আরটি-পিসিআর পরীক্ষার নেগেটিভ রিপোর্টও দেখাতে হবে। সূত্রের খবর, পাকিস্তানে পৌঁছে পুণ্যার্থীদের ফের একবার ব়্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষা করানো হতে পারে। যদি কারোর মধ্য়ে করোনার উপসর্গ দেখা যায়, তবে তাঁকে আইসোলেশনে রাখার ব্যবস্থা করা হবে।
এদিকে, আগামী বছরই পঞ্জাবে বিধানসভা নির্বাচন থাকায়, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলিও কর্তারপুর করিডর খোলা নিয়ে অতি আগ্রহ দেখাচ্ছে। গত সপ্তাহেই বিজেপির একটি সদস্যদল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ও বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার সঙ্গে দেখা করে এই করিডর খুলে দেওয়ার অনুরোধ জানান।
পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী চরণজিৎ সিং চন্নিও করিডর খোলার খবর টুইটারে জানিয়ে বলেন, “শিখ সম্প্রদায়ের মানুষের অনুরোধ শুনে কর্তারপুর করডোর খুলে দেওয়ায় অত্যন্ত খুশির মুহূর্ত আজ। আমি মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ জানিয়েছিলাম। তাদেরকেও ধন্যবাদ জানাচ্ছি। পঞ্জাব মন্ত্রিসভার সদস্যরাও প্রথম যাত্রায় অংশ নেবে।”