নয়া দিল্লি: পাকিস্তানে একজন গরিব মানুষের জীবনের দাম কত বলুন তো? মাত্র ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা। বইয়ের লেখক সেলিব্রিটি আইপিএস অফিসার রাকেশ মারিয়া। ২০১৭ সালে চাকরি থেকে অবসর নেন। তারপর এই বইটি লেখেন।
মুম্বই হামলার তদন্তের দায়িত্বে ছিলেন রাকেশ মারিয়া। আজমল কাসভকে তিনি জেরা করেছিলেন। কাসভকে জেরায় কী কী বলেছিল, সেই সব মারিয়া তাঁর বইয়ে লিখেছেন। বাড়িতে অভাব। তাই ছিঁচকে চুরি দিয়ে শুরু। তারপর ডাকাতি করা শুরু করে কাসভ। পড়ে যায় লস্করের খপ্পরে। মগজ ধোলাই হয়। আত্মঘাতী জঙ্গি হিসাবে তাঁকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় মুম্বই। মরার জন্য কাসভের পারিশ্রমিক ছিল এক লাখ পঁচিশ হাজার টাকা। রাকেশ মারিয়াকে সে জানায়, জঙ্গি শিবিরে লস্কর তাঁকে ওই কটা টাকাই দিয়েছিল। মুম্বই রওনা হওয়ার আগে কাসভ সেই টাকা তাঁর বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছিল বোনের বিয়ের জন্য। এরই নাম গরিবি। এর নামই হল পাকিস্তান।
স্বাধীনতার সময় পরিস্থিতি এমন ছিল না। বরং পাকিস্তানের অবস্থা তুলনামূলক ভাবে ভারতের থেকে ভাল ছিল। ১৯৬০ সালে পাকিস্তানের মাথাপিছু জিডিপি ছিল ৮৩ ডলারের কিছু বেশি। সেখানে ভারতের ছিল ৮২ ডলারের আশেপাশে। আর আজ কোথায় ভারত, কোথায় পাকিস্তান। এখন পাকিস্তানের মাথাপিছু জিডিপি ১৫৩৮ ডলার। ভারতের সেখানে ২২৭৪ ডলার!
দুই দেশের অর্থনীতির পার্থক্য বোঝাতে আরেকটা উদাহরণ দেওয়া যাক। ১৯৬০ সালে পাকিস্তানে বিদেশি মুদ্রার ভান্ডারে ছিল ২ লক্ষ ৬১ হাজার কোটি রুপি। ভারতের ছিল ৫ লক্ষ ৪৬ হাজার কোটি টাকা। গতবছর পাকিস্তানের ভাঁড়ারে ছিল দেড় লক্ষ কোটি রুপি। ভারতের রিজার্ভে প্রায় ৪৬ লক্ষ কোটি টাকা।
বিশ্বের অর্থনৈতিক মানচিত্রে ভারতের স্থান আজ ৫ নম্বরে। পাকিস্তান ৪৫-এ। কারণ, স্বাধীনতার পর সাড়ে ৬ দশকের মধ্যে ৪ দশক জুড়ে পাকিস্তানে চলেছে সেনাশাসন। বিদেশি আর্থিক সাহায্য যা আসে তার দুই-তৃতীয়াংশই সেনাবাহিনীর খরচ মেটাতে চলে যায়। রফতানি করে যেটুকু আয় হয়, জ্বালানি তেল কিনতেই বেরিয়ে যায় তার চেয়ে বেশি। আর স্বাধীনতার সাড়ে সাত দশক পরেও গণতন্ত্র হামাগুড়ি দিচ্ছে পাকিস্তানে।
সম্প্রতি পাক সংসদে বালুচিস্তানের এক সাংসদ অভিযোগ করেন যে তাঁর এলাকায় তীব্র জলকষ্ট চলছে। জলের পাইপ মেরামতিতে টাকা দরকার। প্রায় ৬০০ কোটি টাকৈ। পাক জলসম্পদ মন্ত্রী সাফ জানিয়ে দেন, সরকারের টাকাই নেই। নতুন করে বাজেট বরাদ্দ না হলে কিছু করা যাবে না। মানে মানুষ খাবার জল না পেলেও কিচ্ছু করতে পারবে না পাক প্রশাসন। আসলে ভারতের সঙ্গে পাল্লা দিতে সেনাবাহিনীর পিছনে কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা ঢেলেছে পাকিস্তান, নিজের দেশবাসীর ভাতরুটির ব্যবস্থা না করেই।