Electoral Bonds: গোপন কথাটি রবে না গোপনে, নির্বাচনী বন্ডের তথ্য প্রকাশ হলে কী হবে?

ঈপ্সা চ্যাটার্জী |

Feb 16, 2024 | 1:39 PM

Supreme Court Verdict on Electoral Bond: সম্প্রতিই লোকসভায় কেন্দ্রীয় অর্থ প্রতিমন্ত্রী পঙ্কজ চৌধুরি জানিয়েছিলেন, স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে এখনও অবধি মোট ১৬ হাজার ৫১৮ কোটি টাকার বন্ড কেনা হয়েছে। তবে এর মধ্যে কোন দল কত টাকা পেয়েছে, তা জানাননি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। তবে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর, আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই বিগত ছয় বছরে নির্বাচনী বন্ড সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য  প্রকাশ্যে আসবে।

Electoral Bonds: গোপন কথাটি রবে না গোপনে, নির্বাচনী বন্ডের তথ্য প্রকাশ হলে কী হবে?
ফাইল চিত্র
Image Credit source: TV9 বাংলা

Follow Us

নয়া দিল্লি: হাতে মাত্র কয়েক মাস। তারপর লোকসভা নির্বাচন হবে। নির্বাচনের বছরেই ঐতিহাসিক রায় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। ২০১৭ সালে কেন্দ্রীয় সরকারের আনা ইলেকটোরাল বন্ড বা নির্বাচনী বন্ডকে অসাংবিধানিক বলে ঘোষণা করা হয়েছে। শীর্ষ আদালতের এই রায়ের পরই ধাক্কা খেয়েছে রাজনৈতিক দলগুলি। সুপ্রিম কোর্টের তরফে কড়া নির্দেশে বলা হয়েছে, এই প্রকল্প চালু হওয়ার পর থেকে এখনও অবধি নির্বাচনী বন্ড সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য জাতীয় নির্বাচন কমিশনের কাছে জমা দিতে হবে। অর্থাৎ গোপন কথাটি আর রইবে না গোপনে, কে কোন দলকে কত টাকার বন্ড কিনে দিয়েছে, সেই সমস্ত তথ্য প্রকাশ করতে হবে।

সুপ্রিম কোর্টে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ জানিয়েছে, নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে রাজনৈতিক দলগুলিকে আর্থিক সাহায্য করা নাগরিকের তথ্য জানার অধিকারকে লঙ্ঘন করে। তাই এই ব্যবস্থা অসাংবিধানিক। রাজনৈতিক দল ও অনুদানদাতার মধ্যে সুবিধার সম্পর্ক নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে শীর্ষ আদালত। স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়াকে অবিলম্বে ইলেকটোরাল বন্ড বিক্রি বন্ধ করতে বলা হয়েছে। যে ইলেকটোরিয়াল বন্ড বা নির্বাচনী বন্ড কেনা হয়েছে কিন্তু এখনও ভাঙানো হয়নি, তা ফেরত দিতে হবে। ব্যাঙ্ক ওই বন্ডের বিনিময়ে টাকা ফেরত দেবে।

সুপ্রিম কোর্টের তরফে সাফ জানানো হয়েছে, ২০১৯ সাল থেকে এতদিন অবধি ইলেকটোরাল বন্ড বা নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে রাজনৈতিক দলগুলি যে আর্থিক অনুদান পেয়েছে, তার বিস্তারিত তথ্য জাতীয় নির্বাচন কমিশনকে জানাতে হবে। এর মধ্যে কে নির্বাচনী বন্ড কিনেছেন, কত টাকার বন্ড কিনেছেন এবং কোন রাজনৈতিক দলকে সেই বন্ড দেওয়া হয়েছিল, সেই সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য প্রকাশ করতে হবে। আগামী ৬ মার্চের মধ্যে নির্বাচন কমিশনকে এই তথ্য জানাতে হবে। স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়াকেই এই তথ্য জানাতে হবে কারণ রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাঙ্কের মাধ্যমেই একমাত্র ইলেকটোরাল বন্ড কেনা যায়।

নির্বাচন কমিশনের কাছে এই তথ্য জমা পড়ার পর তা কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে। আগামী ১৩ মার্চের মধ্যে নির্বাচন কমিশনকে নির্বাচনী বন্ড সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে।

ইলেকটোরাল বন্ডের তথ্য প্রকাশ হলে কী হবে?

এতদিন অবধি নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলিকে কোটি কোটি টাকা খরচ করতে দেখা গেলেও, এই টাকা কোথা থেকে আসছে, সেই তথ্য আমজনতা জানতে পারত না। সুপ্রিম নির্দেশের পর এবার স্টেট ব্যাঙ্ক-কে নির্বাচনী বন্ড সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্যই প্রকাশ করতে হবে। অর্থাৎ কে ইলেকটোরাল বন্ড কিনেছেন, কত টাকার বন্ড এবং সেই বন্ড কোন রাজনৈতিক দলকে দেওয়া হয়েছিল, তা প্রকাশ করতে হবে। এরফলে নির্বাচনের সময় বা সারা বছর ধরে রাজনৈতিক দলগুলি বন্ড বাবদ কত টাকা পেয়েছে, তা প্রকাশ করতে হবে। ভোটাররা নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট থেকে এই তথ্য জানতে পারবেন।

সম্প্রতিই লোকসভায় কেন্দ্রীয় অর্থ প্রতিমন্ত্রী পঙ্কজ চৌধুরি জানিয়েছিলেন, স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে এখনও অবধি মোট ১৬ হাজার ৫১৮ কোটি টাকার বন্ড কেনা হয়েছে। তবে এর মধ্যে কোন দল কত টাকা পেয়েছে, তা জানাননি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। তবে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর, আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই বিগত ছয় বছরে নির্বাচনী বন্ড সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য  প্রকাশ্যে আসবে।

কোন দল কত অনুদান পেয়েছে?

অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্রেটিক রিফর্মস বা এডিআর রাজনৈতিক দলগুলির নির্বাচনী বন্ড বাবদ প্রাপ্ত অর্থের হিসাব প্রকাশ করেছিল। ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে নির্বাচনী বন্ড থেকে সবথেকে বেশি আর্থিক অবদান পেয়েছিল বিজেপি। মোট ৭১৯.৮৫ কোটি টাকা অনুদান পেয়েছিল বিজেপি, যা আগের অর্থবর্ষের তুলনায় ১৭ শতাংশেরও বেশি। ২০২১-২২ অর্থবর্ষে  বিজেপি অনুদান ৬১৪.৬২ কোটি টাকা পেয়েছিল।

দ্বিতীয় স্থানে ছিল কংগ্রেস, তাদের প্রাপ্ত অনুদানের পরিমাণ ছিল ৭৯.৯২ কোটি টাকা। গত অর্থবর্ষের তুলনায় ১৬.২৭ শতংশ আয় কমেছে কংগ্রেসের। অনুদান কমেছে সিপিআই(এম) ও আম আদমি পার্টিরও।  চলতি অর্থবর্ষে সিপিআইএমের আয় ৩৯.৫৬ শতাংশ কমে, ৩.৯৭৮ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। আম আদমি পার্টির প্রাপ্ত অনুদান মাত্র ১.১৪ কোটি টাকা, যা গত বছরের তুলনায় ২.৯৯ শতাংশ কম।

Next Article