চণ্ডীগঢ়: পঞ্জাব কংগ্রেসের ‘কাটা ঘায়ে নুনের ছিটে’ দিলেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং। শনিবারই (৪ জুন), বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন রাজ্য কংগ্রেসের পাঁচ বড় নেতা তথা প্রাক্তন মন্ত্রী – রাজ কুমার ভার্কা, বলবীর সিং সিধু, সুন্দর শ্যাম অরোরা, গুরপ্রীত সিং কাঙ্গার এবং কেওয়াল ধিলোঁ। টুইট করে ক্যাপ্টেন অমরিন্দর এই নেতাদের অভিনন্দন জানিয়েছেন শুধু নয়, পাঁচ কং নেতার এই পদক্ষেপ তাঁর মতে ‘হিমশৈলের চূড়া’। তাহলে কি পঞ্জাবে ক্ষমতা হারানোর পর কংগ্রেসের আরও রক্তক্ষয় হতে চলেছে? রাজ্যে আপের উত্থান ঠেকাতে দল বেঁধে কংগ্রেস নেতারা গেরুয়া শিবিরে ভিড়বেন?
অমরিন্দর সিং টুইটে লিখেছেন, ‘সঠিক পথে পদক্ষেপ করা এবং আজ বিজেপিতে যোগদান করার জন্য, বলবীর সিং সিধু, গুরপ্রীত সিং কাঙ্গার, ডাক্তার রাজ কুমার ভের্কা, সুন্দর শ্যাম অরোরা এবং কেওয়াল সিং ধিলোঁকে আমার শুভকামনা। এটা শুধুমাত্র হিমশৈলের চূড়া মাত্র।’
My best wishes to Balbir S. Sidhu, Gurpreet S. Kangar, Dr Raj Kumar Verka, Sunder Sham Arora and Kewal Singh Dhillon for taking a step in the right direction and joining @BJP4India today.
This is just the tip of the iceberg!
— Capt.Amarinder Singh (@capt_amarinder) June 4, 2022
প্রসঙ্গত চলতি বছরের শুরুতে পঞ্জাব বিধানসভা নির্বাচনে ক্ষমতা হারিয়েছে কংগ্রেস। অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টি বিরাট জয়ের সঙ্গে সরকার গড়েছে রাজ্যে। এই নির্বাচনের কয়েক মাস আগেই অমরিন্দর সিং-কে মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ার থেকে সরিয়ে দিয়েছিল কংগ্রেস। ক্যাপ্টেনও কংগ্রেস ছেড়ে নিজের পৃথক দল গঠন করেছিলেন। বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের ভরাডুবির জন্য তিনি সরাসরি গান্ধী ও তাদের ঘনিষ্ঠদেরই দায়ি করেছেন। তাঁর দাবি, তিনি মুখ্যমন্ত্রী থাকা পর্যন্ত পঞ্জাবে জেতার মতো জায়গায় ছিল কংগ্রেস।
নির্বাচনে ভরাডুবির পর, এখনও পর্যন্ত পঞ্জাবে কংগ্রেস দলের ঘুরে দাঁড়ানোর কোনও রাস্তা দেখা যাচ্ছে না। শনিবার আবার বড় ধাক্কা খেতে হয়েছে শতাব্দী প্রাচীন দলটিকে। দলত্যাগী পাঁচ নেতাই পঞ্জাবের রাজনীতিতে বড় নাম। মোহালির তিনবারের বিধায়ক বলবীর সিধু কংগ্রেস সরকারে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ছিলেন। রামপুরা ফুলের তিনবারের বিধায়ক গুরপ্রীত কাঙ্গার ছিলেন রাজস্ব মন্ত্রী। তিনবারের বিধায়ক রাজ কুমার ছিলেন সামাজিক ন্যায়বিচার ও ক্ষমতায়ন এবং সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রী। তবে তাঁর আরও বড় পরিচয়, মাঝা অঞ্চলের অত্যন্ত জনপ্রিয় দলিত নেতা। এছাড়া, হোশিয়ারপুরের প্রাক্তন বিধায়ক সুন্দর শ্যাম অরোরা ছিলেন শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী। আর কেওয়াল সিং ধিলোঁ একসময় প্রদেশ কংগ্রেসের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন। তবে, ২০২২ সালের রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনে এই পাঁচ নেতাই হেরেছিলেন।
২০২২ পঞ্জাব বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের পাশাপাশি বলার মতো কোনও সাফল্য পায়নি বিজেপি-ও। ক্যাপ্টেন অমরিন্দরের নতুন দলের সঙ্গে জোট বেঁধে লড়ে মাত্র ২টি আসন জুটেছে গেরুয়া শিবিরের। তবে, এই পাঁচ বিশিষ্ট কংগ্রেস নেতা শিবির বদল করায় এক ধাক্কায় রাজ্যে বিজেপির শক্তি যে অনেকটাই বাড়ল, তা বলাই বাহুল্য। তবে, অমরিন্দর সিং-এর ‘হিমশৈলের চুড়া’ টুইটের ইঙ্গিত খুব স্পষ্ট বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। হিমশৈলের অধিকাংশটাই ডুবে থাকে জলের নিচে। জলের উপরে দেখা যায় শুধু চূড়াটুকুই। অমরিন্দরের দাবি অনুযায়ী, পাঁচ কংগ্রেস হেভিওয়েট নেতার বিজেপিতে যোগদান যদি শুধুই চূড়া হয়, তাহলে আগামী দিনে পঞ্জাবেও কংগ্রেসের অস্তিত্ব সংকট তৈরি হতে পারে।