নয়া দিল্লি: সদ্য রহস্যময় পরিস্থিতিতে মৃত্য়ু হয়েছে দুই লস্কর-ই-তৈবা কমান্ডার, হাঞ্জলা আদনান এবং সাজিদ মীরের। ২০১৫ সালে জম্মু ও কাশ্মীরের উধমপুরে বিএসএফ-এর কনভয়ে হামলার মাস্টারমাইন্ড ছিল আদনান, আর ২৬/১১ মুম্বই হামলার অন্যতম চক্রী ছিল সাজিদ। ২ ডিসেম্বর মধ্যরাতে তার বাড়ির বাইরেই অজ্ঞাতপরিচয় আততায়ীদের হাতে গুলিবিদ্ধ হয়েছিল আদনান, পরে হাসপাতালে চিকিৎসা চলাকালীন মৃত্যু হয় তার। অন্যদিকে, পাকিস্তানের সেন্ট্রাল জেলেই বিষ খাইয়ে হত্যা করা হয়েছে সাজিদকে বলে, অভিযোগ। কারা এই দুই খুনের পিছনে রয়েছে? এই প্রশ্নের উত্তর অজানা। তবে, বৃহস্পতিবার এই বিষয়ে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, এই সকল জঙ্গি নেতার ভারতে এসে বিচার ব্যবস্থার সামনে আত্মসমর্পণ করা উচিত।
এদিন বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি বলেছেন, “যারা ভারতে অপরাধমূলক এবং সন্ত্রাসবাদী কর্মকাণ্ডের জন্য বিচারের সম্মুখীন হতে চায়, আমরা চাই তারা ভারতে এসে আমাদের বিচার ব্যবস্থার সামনে আত্মসমর্পণ করুক। তবে পাকিস্তানে যা ঘটছে সেই সম্পর্কে আমি মন্তব্য করতে পারব না।”
মজার বিষয় হল, শুধু এই দুই জঙ্গিই নয়, গত কয়েক মাসে বিদেশে মাটিতে, বিশেষ করে পাকিস্তানে এমন বেশ কয়েকজন জঙ্গি নেতার রহস্যময় পরিস্থিতিতে মৃত্যু হয়েছে। ‘ওয়ান্টেড’ হিসেবে প্রত্যেকেরই নাম ছিল ভারত সরকারের খাতায়। ১০ নভেম্বর ভোরে, পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে, অজ্ঞাতপরিচয় আততায়ীদের হাতে খুন হয়েছিলেন লস্কর-ই-তৈবার শীর্ষস্থানীয় কমান্ডার, আক্রম খান ওরফে গাজি। লস্করের কেন্দ্রীয় নিয়োগ কমিটির অন্যতম সদস্য ছিল সে। তার ৫ দিন আগেই, অপহরণ করা হয়েছিল লস্করের আরেক কমান্ডার খোয়াজা শহিদকে। পরে, পাক অধিকৃত কাশ্মীরে নিয়ন্ত্রণরেখার কাছেই এক জায়গায় মাথা কটা দেহ পাওয়া গিয়েছিল সুনজাওয়ান হামলার অন্যতম এই মাস্টারমাইন্ডের।
তার আগে, করাচির গুলিস্তান এলাকায় খুন হয়েছিল লস্কর নেতা মৌলানা জিয়ায়ুর রহমান এবং মুফতি কাইজার ফারুক। ১০ অক্টোবর, শিয়ালকোটের এক মসজিদে অজ্ঞাতপরিচয় আততায়ীদের হাতেই খুন হয়েছিল জইশ-ই-মহম্মদ নেতা শহিদ লতিফ। ২০১৬ সালে পাঠানকোটে হামলা চালিয়েছিল যে বাহিনী, তাদের প্রধান হ্যান্ডলার ছিল সে। এর মধ্যে কানাডায় খুন হয়েছে খালিস্তানি জঙ্গি নেতা হরদীপ সিং নিজ্জর এবং পাকিস্তানে খুন হয়েছে আরেক খালিস্তানি জঙ্গি নেতা পরমজিৎ সিং পাঞ্জওয়ার। প্রতিটি ক্ষেত্রেই আততায়ীর পরিচয় জানা যায়নি। ফলে ভারত বিরোধী এই জঙ্গি নেতাদের কারা হত্যা করছে, তাই নিয়ে রহস্য তৈরি হয়েছে। এই অবস্থায়, ভারত স্পষ্ট বার্তা দিল, বাঁচতে চাইলে ভারতে এসে আত্মসমর্পণ কর।