মনিপুর : পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের পর্ব শুরু হয়েছে ইতিমধ্যেই। তবে মনিপুরের প্রথম দফা ভোটের এখনও বাকি দু দিন। তার আগে ভোট ময়দানে নেমে পড়েছেন গেরুয়া শিবিরের শীর্ষস্তরের নেতারা। ইয়াইসকুল বিধানসভায় দেখা গেল বাড়ি বাড়ি ঘুরে বিজেপি প্রার্থীর হয়ে প্রচার করছেন খোদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। মনিপুরের রাজনীতিতে কান পাতলে শোনা যাচ্ছে, এই বিধানসভা আসনের প্রার্থী ভোট ময়দানে আনকোরা হলেও তাঁকে খুব কম গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে না। তাই গেরুয়া শিবিরের হয়ে ওই জনতা দল (ইউনাইটেড)-এর ওই প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রচার চালাচ্ছেন খোদ শাহ। এই কেন্দ্রে বিজেপির প্রতিপক্ষ রাজ্যের প্রাক্তন পুলিশ আধিকারিক বৃন্দা দাউনাউজাম। আর বিজেপির প্রার্থী রাজ্যের আইনমন্ত্রী সত্যব্রত সিং।
রাজ্য পুলিশের অফিসার ছিলেন বৃন্দা। তাঁর শ্বশুর মনিপুর সরকারের বিরুদ্ধে সশস্ত্র আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন। নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত বৃন্দার শ্বশুরের নাম। কিন্তু, বৃন্দার উত্থানটা একেবারে অন্যরকম। পুলিশ অফিসার হিসেবে রাজ্যর প্রতি নিজের কর্তব্যে অবিচল থেকেছেন তিনি। মূলত মাদক পাচারকারীদের মাফিয়াকে হাতে নাতে ধরে ফেলার জন্য শিরোনামে এসেছিলেন তিনি। মনিপুর সরকার তাঁকে পুলিশ মেডাল দিয়ে সম্মানিতও করেছিল। কিন্তু, খোদ মনিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং-এর সঙ্গে মাদক পাচারকারীদের যোগ থাকার প্রমাণ হাতে আসতেই সেই সম্মান ফিরিয়ে দেন বৃন্দা।
৪৩ বছর বয়সী বৃন্দা ২০১৮ সালে এক বিশেষ অভিযানে ধরে ফেলেছিলেন মাদক পাচারকারীদের। ২৭ কোটি টাকার মাদক উদ্ধার করেছিলেন তিনি। ওই বছরেই তাঁকে বিশেষ সম্মান দেন মনিপুরের মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু বছর দুয়েকের মধ্যেই বৃন্দা জানতে পারেন ওই মাদক-কাণ্ডের মূল অভিযুক্তের সঙ্গে যোগ রয়েছে মুখ্যমন্ত্রী। ২০২০ সালে সেই পুরস্কার ফিরিয়ে দেন তিনি।
এই সাহসিকতার জন্য তরুণ প্রজন্মের কাছে বেশ জনপ্রিয়তা রয়েছে বৃন্দার। আইনের রক্ষক হয়ে কাজ করেছেন তিনি। আর আজ তাঁর লড়াই খোদ আইনমন্ত্রীর বিরুদ্ধে। পুলিশের চাকরি ছেড়ে দিলেও তাঁর অভিযানের কথা আজও মনে রেখেছেন সবাই। তাঁর এক অনুগামী বলেন, তরুণ নেত্রী হওয়ার সব ক্ষমতা রয়েছে বৃন্দার। তিনি জানেন রাজ্যের মানুষ ঠি কী চায়। আর এক অনুগামীর কথায়, সবসময় দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন তিনি, আর এটাই এ রাজ্যের এক জ্বলন্ত সমস্যা। তবে অনেকেই তাঁকে ইরম শর্মিলা চানুর সঙ্গে তুলনা করেছেন। তাঁরা বলছেন, শর্মিলা তাঁর জনপ্রিয়তা নিয়ে রাজনীতির ময়দানে এলেও সাফল্য পাননি। তাই বৃন্দার সাফল্য নিয়েও রয়েছে প্রশ্ন।
তাঁর সাফল্য নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও বিজেপি বিষয়টাকে বেশ গুরুত্ব দিয়ে দেখছে। অমিত শাহের বৃন্দা জানান, বিজেপির একজন মন্ত্রীর প্রচারের জন্য কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে আনতে হয়েছে, এটা তিনি ইতিবাচক বলেই ধরছেন। তিনি সাফ জানিয়েছেন, তাঁর লড়াই দুর্নীতির বিরুদ্ধে, মাদক পাচারের বিরুদ্ধে।
আরও পড়ুন : Russia-Ukraine Conflict : রাশিয়ার সমালোচনা, পাশে দাঁড়াল না ইউক্রেনেরও, কী অবস্থান ভারতের?