নয়া দিল্লি: জম্মু ও কাশ্মীরের পর এবার ভোটমুখী হিমাচল প্রদেশেও বিদ্রোহের মুখে কংগ্রেস। রবিবার (২১ অগস্ট) দলের হিমাচল প্রদেশ শাখার ‘স্টিয়ারিং কমিটি’র প্রধানের পদ থেকে পদত্যাগ করলেন, হিমাচল প্রদেশে কংগ্রেসের মুখ হিসেবে পরিচিত আনন্দ শর্মা। কংগ্রেসের অন্তর্বর্তীকালীন সভানেত্রী সনিয়া গান্ধীকে এদিন একটি চিঠি পাঠিয়ে তিনি বলেছেন, আত্মসম্মান নিয়ে তিনি আপোস করতে পারবেন না। তাই তিনি সরে যাচ্ছেন। প্রসঙ্গত, কয়েকদিন আগেই জম্মু ও কাশ্মীরে আরেক টি-২৩ নেতা গুলাম নবি আজাদের নেতৃত্বে একইরকমের বিদ্রোহ দেখা গিয়েছিল। জম্মু ও কাশ্মীরের প্রচার কমিটির চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করেছিলেন আজাদ।
কংগ্রেস দলের মধ্যে ভিন্নমতাবলম্বীরা পরিচিত ‘জি-২৩’ নামে। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের পর থেকেই দলের সর্বস্তরে নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছে এই গোষ্ঠী। গুলাম নবি আজাদ, আনন্দ শর্মা ছাড়াও ভূপিন্দর সিং হুডা, মণীশ তিওয়ারিদের মতো বিশিষ্ট কংগ্রেস নেতারা এই গোষ্ঠীর পরিচিত মুখ। সেই গোষ্ঠীরই সদস্য আনন্দ শর্মাকে গত ২৬ এপ্রিল হিমাচল প্রদেশের স্টিয়ারিং কমিটির চেয়ারম্যান হিসাবে নিযুক্ত করা হয়েছিল। তবে, এদিন তিন সেই রদ ছেড়ে দিলেন।
প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা রাজ্যসভায় কংগ্রেসের উপনেতা আনন্দ শর্মা এদিন কংগ্রেস প্রধানকে লেখা চিঠিতে বলেছেন, দলের পক্ষ থেকে তাঁর আত্মসম্মানে আঘাত করা হয়েছে। কারণ দলের কোনও বৈঠকেই তাঁকে আমন্ত্রণ জানানো হয় না। তাঁর কোনো পরামর্শও নেওয়া হয় না। পরামর্শ প্রক্রিয়ায় তাঁকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করা হয়েছে। তবে, এরপরও রাজ্যে দলীয় প্রার্থীদের পক্ষে তিনি প্রচার চালিয়ে যাবেন বলেই জানিয়েছেন সনিয়া গান্ধীকে।
প্রসঙ্গত, ১৯৮২ সালে আনন্দ শর্মা প্রথমবার বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। ১৯৮৪ সালে তাঁকে রাজ্যসভার টিকিট দিয়েছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী। সেই থেকে তিনি একটানা রাজ্যসভার সদস্য। বিভিন্ন সময়ে তিনি দলের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদের দায়িত্বও সামলেছেন। বলাই বাহুল্য, এই মাপের এক নেতার পদত্যাগ হিমাচল প্রদেশে কংগ্রেসের পক্ষে বড় ধাক্কা। বিশেষ করে চলতি বছরের শেষেই রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে। হিমাচল প্রদেশে বিজেপির কাছ থেকে ক্ষমতা কেড়ে নেওয়ার আশা করছে কংগ্রেস। একের পর এক রাজ্যে বিশিষ্ট নেতারা বিদ্রোহ ঘোষণা করার পর, গান্ধীরা দলে আর কতদিন নির্বাচন না করে কাটাতে পারেন, এখন সেটাই দেখার।