হায়দরাবাদ: দক্ষতা উন্নয়ন কেলঙ্কারি মামলায় তেলেগু দেশম পার্টির প্রধান চন্দ্রবাবু নাইডুর গ্রেফতারি নিয়ে মুখ খুললেন অন্ধ্র প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী জগনমোহন রেড্ডি। শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর), গোদাবরী জেলার নিদাদাভোলুর এক জনসভায় চন্দ্রবাবুকে এই দুর্নীতি মামলার মাস্টারমাইন্ড বলেছেন জগনমোহন। তিনি অভিযোগ করেন, মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন, অস্তিত্বহীন এক সংস্থার সঙ্গে চুক্তি হয়েছে দেখিয়ে, ৩৭১ কোটি টাকা আত্মস্মাৎ করেছিলেন চন্দ্রবাবু। তার জন্যই তাঁকে কারাবন্দি করা হয়েছে। জগনমোহন বলেন, “সরকারি নিয়ম লঙ্ঘন করে, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডু এক অস্তিত্বহীন সংস্থার প্রচার করে একটি ভুয়ো চুক্তি করেছিলেন। শেষ পর্যন্ত, প্রশ্নবিদ্ধ সংস্থা, সিমেন্স, এক লিখিত বিবৃতি জারি করে ৩৭১ কোটি টাকার লেনদেন ও চুক্তির সঙ্গে তাদের কোনও যোগাযোগ নেই বলে জানিয়েছে।”
তিনি আরও জানান, রাজ্যের তদন্তকারী সংস্থাগুলির পাশপাশি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটও এই কেলেঙ্কারি মামলার তদন্ত করেছে। বেশ কয়েকজন ব্যক্তি এই কেলেঙ্কারিতে জড়িত। তাদের জেরা করে এই ৩৭১ কোটি টাকার তহবিলের খোঁজ মেলে। সরকারি অর্থ অপব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া যায়। তিনি আরও জানান, তদন্তকারী সংস্থাগুলি বিভিন্ন আবশ্যক প্রমাণ ও নথি যাচাই করার পরই এই কেলেঙ্কারির মূল পরিকল্পনাকারীর পরিচয় জানা যায়। এই জাল চুক্তিতে চন্দ্রবাবু নাইডুর ‘উল্লেখযোগ্য ভূমিকা’ স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে বর্তমানের আরও অভিযোগ, সরকারী আধিকারিকদের অনেকেই এই চুক্তির বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছিলেন। তাঁদের, এই চুক্তি মানতে বাধ্য করেছিলেন চন্দ্রবাবু। তিনি আরও জানান, ইডির তদন্তে জানা গিয়েছে, চুক্তির অর্থ কিছু ভুয়ো সংস্থাকে দেওয়া হয়েছিল। সেই তদন্তের সাপেক্ষে আরও কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সব প্রমাণই আঙুল তুলছে চন্দ্রবাবুর দিকেই। আয়কর বিভাগের তদন্তে চন্দ্রবাবু নাইডুর ব্যক্তিগত সহকারীর বেশ কিছু ‘চ্যাট’, পাওয়া গিয়েছে, যেগুলিও অপরাধের প্রমাণ বলে দাবি করেছেন জগনমোহন।
এদিকে, চন্দ্রবাবুর বিরুদ্ধে ওঠা এই অভিযোগ এবং তাঁর গ্রেফতারির বিরোধিতা রাজনৈতিকভাবে করা সিদ্ধান্ত নিয়েছে টিডিপি। তাদের দাবি, চন্গ্রবাবুর বিরুদ্ধে তোলা সকল অভিযোগ ‘মিথ্যা’। তাঁকে ‘অনৈতিকভাবে’ গ্রেফতার করা হয়েছে। শনিবার, প্রতিবাদে টিডিপির পক্ষ থেকে রাজমুন্দ্রিতে একটি মোমবাতি মিছিলের আয়োজন করা হয়েছিল। চন্দ্রবাবুর স্ত্রী এবং পুত্রবধূ সেই মোমবাতি মিছিলে অংশ নেন। ২০২৪-এ লোকসভা নির্বাচনের পাশাপাশি অন্ধ্র প্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনও রয়েছে। তার আগে অন্ধ্রপ্রদেশের রাজনীতিতে ঝড় তুলেছে টিডিপি প্রধানের গ্রেফতারি।