মুম্বই : মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা বর্ষীয়ান এনসিপি নেতা অনিল দেশমুখকে আবারও ১৪ দিনের বিচার বিভাগীয় হেফাজতের নির্দেশ দিল মুম্বইয়ের বিশেষ আদালত। তাঁর বিরুদ্ধে আর্থিক তছরূপে যুক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে।
টানা ১২ ঘণ্টা ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদের পর ১ নভেম্বর তাঁকে গ্রেফতার করেছিলেন এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের আধিকারিকরা। তারপর প্রথমে তাঁকে ৬ নভেম্বর পর্যন্ত ইডি হেফাজতে পাঠানো হয়েছিল। এরপর ৬ নভেম্বর তাঁকে আদালতে পেশ করা হলে ইডির তরফে ফের তাঁকে হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানানো হয়েছিল। কিন্তু সেই আবেদন খারিজ করে আদালত অনিল দেশমুখকে ১৪ দিনের বিচারবিভাগীয় হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছিল। এরপর আজ ফের একবার আদালত তাঁকে ১৪ দিনের বিচার বিভাগীয় হেফাজতের নির্দেশ দেয়।
শিল্পপতি মুকেশ অম্বানীর বাড়ির সামনে থেকে বিস্ফোরক বোঝাই গাড়ি উদ্ধারের পরই গত মার্চ মাসে তৎকালীন পুলিশ কমিশনার পরমবীর সিংকে সরিয়ে দেন তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল দেশমুখ। এরপরই পরমবীর সিং মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরেকে চিঠি লিখে অনিল দেশমুখের বিরুদ্ধে তোলাবাজির অভিযোগ আনেন। তিনি জানান, অম্বানীকাণ্ডে ধৃত পুলিশ অফিসার সচিন ভাজ়ে এবং এসিপি সঞ্জয় পাটিলকে প্রতিমাসে ১০০ কোটি টাকা তোলাবাজির লক্ষ্যমাত্রা দিয়েছিলেন। এর জন্য মুম্বইয়ের ১৬০০ বার-রেস্তোরাঁকেও চিহ্নিত করেছিলেন তিনি।
বিষয়টি আদালত অবধি গড়ালে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয় এবং তারপরই ইডিও আর্থিক তছরূপের মামলা দায়ের করে। সূত্রের খবর, ইডি আধিকারিকরা ৪ কোটি টাকা তছরূপের খোঁজ পেয়েছেন। অম্বানীকাণ্ডে অভিযুক্ত সচিন ভাজ়ের মাধ্যমে হাতবদল হয়ে তা অনিল দেশমুখের কাছে এসেছিল। এই তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে গ্রেফতারও হতে পারেন অনিল দেশমুখ। এর আগে মুম্বই পুলিশের তরফে জানানো হয়, তোলাবাজি মামলায় পরমবীর সিংয়ের বিরুদ্ধেও লুকআউট নোটিস জারি করা হয়েছে। যদিও পরমবীর সিং গত ৪ মে’র পর থেকে কোথায়, তার কোনও খোঁজ নেই।
এদিকে জেলের খাবার মোটেই মুখে রুচছে না অনিল দেশমুখের। বাড়ির রান্না খাবার খেতে চাইছেন তিনি। তাঁকে যাতে বাড়ির থেকে আনা খাবার খাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়, এই মর্মে মুম্বইয়ের বিশেষ আদালতে আবেদনও করেছিলেন প্রাক্তন মন্ত্রী। কিন্তু সেই আবেদন নাকচ করে দিয়েছেন বিচারক। অনিল দেশমুখকে বিচারক বলেছেন, “আগে জেলের খাবার খেয়ে তো দেখুন। যদি সমস্যা হয়, তখন বিষয়টি বিবেচনা করে দেখা হবে।”
তবে ৭১ বছর বয়সি নেতার শারীরিক অবস্থার কথা মাথায় রেখে, জেল কুঠুরিতে তাঁকে একটি খাটে শোয়ার অনুমতি দিয়েছে আদালত। উল্লেখ্য, এর আগেও অনিল দেশমুখের শারীরিক অবস্থার কথা আদালতে তুলে ধরেছিলেন তাঁর আইনজীবী। প্রথমে তাঁকে গ্রেফতারির পর যখন ইডি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছিল আদালত, সেই সময় বর্ষীয়ান এনসিপি নেতার আইনজীবী বলেছিলেন, তাঁর কাঁধের সমস্যা রয়েছে। কাঁধের হাড় সরে গিয়েছে। তাঁকে সবসময় নিজের কাজের জন্য কারও না কারও সাহায্য প্রয়োজন।