নয়া দিল্লি: তাপমাত্রা যত নীচেই নেমে যাক, ভারতীয় সেনার (Indian Army) ট্যাঙ্কগুলি সচল থাকবে। তাঁবুগুলি থাকবে গরম। লাদাখে শীত (Winter) শুরুর ঠিক মুখে সেনার কাছে পৌঁছে গেল শুধুমাত্র সেনার জন্য বিশেষভাবে তৈরি উইন্টার ডিজেল। ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশন শুধু সেনার জন্য এই বিশেষ জ্বালানি তৈরি করেছে যা আগের উইন্টার ডিজেলের থেকে অনেক উন্নত বলে সংস্থার দাবি। আইওসির দাবি, সাধারণ মাইনাস ৩০ ডিগ্রির বেশি শীতে উইন্টার ডিজেলের জমে যাওয়ার সম্ভাবনা ছিল। নতুন ডিজেলে সেই ভয় থাকছে না। তার উপর তাঁবু গরম করতেও এই ডিজেল ব্যবহার করা যাবে।
আর কয়েকদিন পরই ভয়ঙ্কর শীত নামবে। শীতের সঙ্গে যুঝতে লাইন অফ অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোলের ইস্টার্ন ফ্রন্ট অর্থাত্ পূর্ব লাদাখে চলছে সেনার নিঃশব্দ প্রস্তুতি। আসলে লাদাখে বা এলএসি-র পরিস্থিতি কেমন জানেন? ডাক্তাররা যাকে বলেন, ক্রিটিক্যাল বাট স্টেবল। শীতের মুখে চিন হঠাত্ করেই বাড়তি দুই ডিভিশন সেনা মোতায়েন করেছে। সঙ্গে ট্যাঙ্ক ডিভিশন, মিসাইল ফোর্স। ভারতও একইভাবে বাড়তি সেনা মোতায়েন সেরে ফেলে। এরইমধ্যে এলএসি-তে বিভিন্ন সেক্টরে দুই দেশের কোর কম্যান্ডার স্তরের বৈঠক হল। যদিও সেই বৈঠকে আশাপ্রদ কিছু হয়নি বলেই জানা যাচ্ছে। সূত্রের খবর, সেখানে চিন শুধু বলেছে, দ্বিপাক্ষিক সমঝোতা অনুযায়ী সৈন্য সংখ্যা কমানো হোক। ভারত পাল্টা বলেছে, চিন তা হলে হঠাত্ করে আরও ডিভিশন নিয়ে এল কেন? মিসাইল, ট্যাঙ্ক আনলো কেন? সূত্রের খবর, চিন বেশ একটা মজার যুক্তি দিয়েছে। তাঁদের বক্তব্য, বাড়তি সেনা আসেনি। রিজার্ভ ফোর্স শীতের আগে মহড়া দিচ্ছিল। সেটা বাড়তি সেনা নয়।
শীতের আগে প্রতিবার এই ধরনের বৈঠক হবে বলে গত বছর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল দুই দেশ। একইসঙ্গে ঠিক হয়, ভয়ঙ্কর শীতের মধ্যে অর্থাত্ ১৫ নভেম্বর থেকে ২৫ জানুয়ারি দু’দেশই কম সেনা মোতায়েন রাখবে। তারপরও চিন নতুন করে দুই ডিভিশন সেনা নিয়ে এল কেন? প্রতিরক্ষামন্ত্রক বা সেনাকর্তারা মুখ খুলছেন না। বরং তাঁরা বলছেন, চিনের এই প্রেশার ট্যাকটিক্স নতুন কিছু নয়। ভারতও তাই সেনা বাড়িয়ে প্রস্তুত থাকছে। শেষ মুহূর্তে সেনা কমানো হলেও রিজার্ভ ফোর্স তৈরি থাকবে।
এলএসি-র ইস্টার্ন ফ্রন্ট মানে কারাকোরাম পাস থেকে চুমুর পর্যন্ত এলাকা। এলএসি-তে এই এলাকাকে শীতকালকে বলা হয় ড্রপ ডেড উইন্টার। এই সময় তাপমাত্রা মাইনাস ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত নেমে যায়। ২০২০ সালে গালওয়ান সংঘর্ষের পর থেকেই শীতেও এখানে সেনা মোতায়েন রাখে দুই দেশ। গত কয়েক বছরে এলএসি-র ইস্টার্ন ফ্রন্টে পরিকাঠামো ঢেলে সাজিয়েছে ভারতীয় সেনা। ইস্টার্ন ফ্রন্টে সিকিম, উত্তরাখণ্ড ও অরুণাচল সীমান্তে ১ হাজার ৫৯৭ কিলোমিটার সীমান্ত। এলএসি-তে দায়িত্বপ্রাপ্ত এক সেনা অফিসার পিটিআইকে জানিয়েছেন, দেড় হাজার কিলোমিটারের বেশি সীমান্তেও প্রতিটি ইঞ্চিতে ভারতীয় সেনার নজরদারি রয়েছে। প্যাংগং লেক ও পার্শ্ববর্তী এলাকা ছাড়াও ডেমচক ও চুমুর সেক্টরেও নজরদারি চলছে।