নয়া দিল্লি: ন্যাশনাল হেরাল্ডের সঙ্গে যুক্ত অর্থপাচার মামলায় তাঁর প্রয়াত বাবার নাম করেছেন রাহুল গান্ধী, এই কথা বিশ্বাসই করতে পারছেন না কংগ্রেস বিধায়ক অরুণ ভোরা। সূত্রের খবর, ‘ইয়ং ইন্ডিয়ান’ এবং ‘অ্যাসোসিয়েট জেনারেল’এর চুক্তির সমস্ত দায় প্রয়াত কংগ্রেস নেতা মোতিলাল ভোরার ঘাড়ে চাপিয়েছেন রাহুল। ইন্ডিয়া টুডের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, অরুণ ভোরা এই অভিযোগ পুরোপুরি ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন। অরুণ আরও জানিয়েছেন, তাঁর বাবার বিরুদ্ধে রাহুল গান্ধী এমন অভিযোগ করেছেন, তা তিনি বিশ্বাস করেন না। প্রতিবেদন অনুযায়ী অরুণ ভোরা বলেছেন, ‘এসব ভিত্তিহীন অভিযোগ। কংগ্রেস নেতৃত্ব কোনও ভুল করতে পারে না, ভোরাজিও কোনও ভুল করতে পারেন না। রাহুলজি আমার বাবার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করতেই পারেন না।’
ন্যাশনাল হেরাল্ড পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত তহবিল তছরুপের তদন্তে গত সোমবার থেকে পরপর তিনদিনে, অন্তত ৩০ ঘন্টা এনফোর্সমেন্ট ডাইরেক্টরেটের জেরা সম্মুখীন হয়েছেন রাহুল গান্ধী। সূত্রের খবর, বুধবার তদন্তকারীদের রাহুল জানিয়েছেন, অ্যাসোসিয়েট জার্নাল এবং ইয়ং ইন্ডিয়ান সংস্থার মধ্যে সমস্ত আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে, স্বাক্ষর করা অধিকার ছিল একমাত্র প্রয়াত কংগ্রেস নেতা মোতিলাল ভোরার। প্রসঙ্গত, এর আগে একই মামলার তদন্তে ইডির প্রশ্নের মুখে কংগ্রেস নেতা পবন বনসল এবং মল্লিকার্জুন খর্গেও, মোতিলাল ভোরার নাম নিয়েছিলেন। ইডির তদন্তকারী কর্তাদের এই দুই কংগ্রেস নেতা জানিয়েছিলেন, ওই চুক্তি সংক্রান্ত সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত কোনও একক ব্যক্তি নেননি। তবে, সমস্ত আর্থিক লেনদেনের দায়িত্বে ছিলেন মোতিলাল ভোরা। এই বিষয়ে অরুণ ভোরা বলেছেন, ‘পবন বনসল এবং খর্গে কী বলেছেন, আমি জানি না। তবে সর্বদা সত্যেরই জয় হবে। সনিয়াজি, রাহুলজি, ভোরাজির জয় হবে।’
ন্যাশনাল হেরাল্ড পত্রিকার মালিক সংস্থা, ‘ইয়াং ইন্ডিয়া’য় বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে এই মামলার তদন্ত করা হচ্ছে। ২০১৩ সালে, এই বিষয়ে একটি ব্যক্তিগত ফৌজদারি অভিযোগ দায়ের করেছিলেন বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ সুব্রমণিয়ন স্বামী। তিনি অভিযোগ করেন, ন্যাশনাল হেরাল্ডের প্রকাশক ‘অ্যাসোসিয়েটেড জার্নালের’ মূল্য ২০০০ কোটি টাকারও বেশি ছিল। কিন্তু, ইয়ং ইন্ডিয়া মাত্র ৫০ লক্ষ টাকা দিয়ে সেই সংস্থা অধিগ্রহণ করেছিল। ইয়ং ইন্ডিয়ার ৮০ শতাংশের বেশি মালিকানা রাহুল ও সনিয়ার হাতে আছে বলে দাবি করেছিলেন তিনি। তাঁদের বিরুদ্ধে কর ফাঁকির অভিযোগ আনেন।
এদিকে, সোম, মঙ্গল, বুধে একটানা হাজিরা দিলেও, শুক্রবার এনফোর্সমেন্ট ডাইরেক্টরেট অফিসে হাজিরা দেওয়া থেকে অব্যাহতি চেয়েছেন রাহুল, এমনটাই জানা গিয়েছে। সূত্রের খবর, এই বিষয়ে তিনি ইডিকে একটি চিঠি দিয়েছেন। শুক্রবারের বদলে জেরা পর্ব সোমবার করার অনুরোধ জানিয়েছেন রাহুল। তাঁর অনুরোধের ভিত্তিতেই, বৃহস্পতিবার জেরার কাজ বন্ধ রেখেছিল ইডি। কোভিড-১৯ আক্রান্ত মা সনিয়া গান্ধীর সঙ্গে থাকার জন্যই তাঁকে এদিন ছুটি দেওয়া হয়েছিল। রাহুল এবং প্রিয়াঙ্কা গান্ধী – দুজনেই এদিন দিল্লির স্যার গঙ্গারাম হাসপাতালে সনিয়া গান্ধীর সঙ্গেই ছিলেন। সূত্রের দাবি, মায়ের অসুস্থতার কারণেই শুক্রবারও জেরায় যোগ দিতে চাইছেন না প্রাক্তন কং সভাপতি। ইডি তাঁর এই অনুরোধ মনে নেয় কিনা সেটাই এখন দেখার।