নয়া দিল্লি: গত ৯ ডিসেম্বর অরুণাচল প্রদেশের (Arunachal Pradesh) তাওয়াং সেক্টরে (Tawang Sector) প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় (Actual Line of Control) লাল ফৌজ (PLA) ও ভারতীয় সেনার (Indian Army) মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধার খবর পাওয়া গিয়েছে। এরপর গতকাল সোমবার টুইট করে দেশের সেনাদের প্রশংসা করেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল (Arvind Kejriwal)। গতকাল তিনি বলেন, ‘আমাদের সেনারা দেশের গর্ব’।
গত শুক্রবার নিয়ন্ত্রণ রেখার ইয়াংস দুই দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। গতকাল ভারতীয় সেনার তরফে জানানো হয়, দুই দেশের সেনাবাহিনীর সংঘর্ষে দুই তরফের সেনা আহত হয়েছে। ২০২০ সালে জুন মাসে পূর্ব লাদাখে দুই দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষের পর আবার মুখোমুখি সংঘর্ষে ভারত-চিন। জানা গিয়েছে, চিনা সেনারা প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা অতিক্রম করে ভারতের দিকে ঢুকে পড়েছিল। তারপরই সংঘর্ষ বাঁধে দুই তরফের সেনার মধ্যে।
এদিকে এই ঘটনার বিষয়ে সংবাদ সংস্থা পিটিআই-র একটি টুইট ট্যাগ করে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল হিন্দিতে টুইটে লেখেন, ‘দেশের গর্ব আমাদের সেনারা। আমি তাঁদের বীরত্বকে কুর্নিশ জানাই। ভগবানের কাছে তাঁদের দ্রুত সুস্থতার প্রার্থনা করছি।’ এদিকে এই সংঘর্ষ প্রসঙ্গে গতকালই টুইট করেছেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গে। তিনি টুইটে লেখেন, ‘আবারও আমাদের ভারতীয় সেনাদের উস্কানি দিয়েছে চিনা সেনারা। আমাদের সেনা জওয়ানরা দৃঢ়ভাবে লড়াই করেছেন এবং তাঁদের মধ্যে কয়েকজন জখমও হয়েছেন। জাতীয় নিরাপত্তার ইস্যুতে আমরা দেশের সঙ্গে রয়েছি। এটা নিয়ে আমরা রাজনীতি করতে চাই না।’ তিনি টুইটে আরও লেখেন, ‘চিনা সেনার সীমা লঙ্ঘন নিয়ে আসল তথ্য প্রকাশ করা উচিত মোদী সরকারের। পাশাপাশি, ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে প্রকৃত নিয়ন্ত্ররেখার কাছে চিন যেসব নির্মাণ কাজ করেছে, সেই বিষয়ে সৎ হওয়া উচিত মোদী সরকারের। এ বিষয়ে সংসদে আলোচনা করে সরকারের উচিত জাতির আস্থা অর্জন করা। আমরা আমাদের সেনাদের মূল্য এবং আত্মত্যাগের জন্য চিরকাল ঋণী থাকব।’
এদিকে সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে টুইট করেছিলেন সর্বভারতীয় কংগ্রেস কমিটির সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশও। তিনি টুইটে লেখেন, ‘সশস্ত্র বাহিনীর বীরত্বে আমরা গর্বিত। সীমান্তে চিনের পদক্ষেপ একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়। গত দুই বছর ধরে আমরা বারবার সরকারকে জাগানোর চেষ্টা করছি। কিন্তু মোদী সরকার শুধুমাত্র নিজেদের রাজনৈতিক ভাবমূর্তি বাঁচাতে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে। এই কারণেই বাড়ছে চিনের সাহস।’ প্রসঙ্গত, পূর্ব লাদাখে গালওয়ান উপত্যকায় ২০২০ সালে লাল ফৌজ ও ভারতীয় সেনার মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধেছিল। সেই সংঘর্ষে ভারতের প্রায় ২০ জন সেনা শহিদ হয়েছিলেন। চিনের সেনাবাহিনীর ৪০ জনেরও প্রাণ গিয়েছিল বলে পরে জানা যায়। তবে ২০২০ সালের পর এই প্রথম আবার প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় সংঘর্ষে জড়াল দুই দেশ।