নয়া দিল্লি: আজ ৭ অক্টোবর। বাকি পাঁচটা দিনের তুলনায় আজকের দিনটি বিশেষ কারণ এই দিনেই ২০ বছর আগে গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী(Narendra Modi)। গুজরাটের অতি সাধারণ এক যুবক, যার শৈশব স্টেশনে চা বিক্রি করে কেটেছে, তিনিই কীভাবে পরবর্তী সময়ে প্রথমে মুখ্যমন্ত্রী ও পরে দেশের প্রধানমন্ত্রী হয়ে উঠলেন, সেই রঙিন যাত্রাপথই তুলে ধরার এক বিশেষ উদ্য়োগ নেওয়া হল TV9 নেটওয়ার্কের তরফে। প্রশাসনিক পদে প্রধানমন্ত্রীর ২০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে মুখ্যমন্ত্রী থেকে প্রধানমন্ত্রী হয়ে ওঠার সফর, দেশের অগ্রগতিতে বিভিন্ন যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত, নীতি নিয়েই একটি বিশেষ অনুষ্ঠানের উপস্থাপন করা হবে।
অতিতে ভারতের যে বিশ্বব্য়াপী একটি উজ্জ্বল ভাবমূর্তি ছিল, তা বিগত কয়েক দশকে ধুলোয় মিশে গিয়েছিল নানা কারণে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী রূপে নরেন্দ্র মোদী দায়িত্ব গ্রহণের পরই একাধিক বড় সিদ্ধান্ত নেন তিনি, যা আগে কোনও দেশনেতা কল্পনাও করতে পারেননি। প্রধানমন্ত্রীর জনকল্যাণ নীতি এবং কৌশলই ফের একবার ভারতকে শক্তিশালী, সমৃদ্ধ দেশ হিসাবে বিশ্বের সামনে তুলে ধরেছে । প্রশাসক হিসাবে নরেন্দ্র মোদীর এই ২০ বছরের যাত্রাকেই তুলে ধরতে TV9-এর তরফে প্রধানমন্ত্রী মোদীর কাজের উপর একটি বিশেষ সিরিজ তৈরি করা হয়েছে। এই সিরিজের প্রথম পর্বটি বৃহস্পতিবার রাত ১০টায় সম্প্রচারিত হবে।
প্রাচীন ভারত বিশ্বগুরুর কল্পনায় সজ্জিত হয়েছিল, আজকের ভারত যে বিশ্বের প্রথম সারিতে অবস্থান করছে, তার উপর নির্ভর করেই টেলি সিরিজ “বিশ্ব গুরু – ভারতীয় গৌরব পুনরুদ্ধার” সম্প্রচারণ শুরু হবে। প্রথম পর্বে “অংশ ও মাত্রা “রাষ্ট্র রক্ষক রক-দৃঢ় মনোভাব”, “ইস্পাতমানব- শত্রুর দুঃস্বপ্ন”, “ইয়ারানা-আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্ব” এবং “মিশাল-বিশ্বের পথপ্রদর্শক” প্রভূতি পর্বের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কৃতিত্বের বিভিন্ন অংশ তুলে ধরা হবে।
১৯৫০ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর গুজরাটের মেহসানায় জন্ম নরেন্দ্র মোদীর। উত্তর পূর্ব গুজরাটের এই ছোট শহরেই বেড়ে ওঠেন মোদী। সেখান থেকেই তিনি প্রাথমিক শিক্ষা পূরণ করেন। একইসঙ্গে সংসারে হাত লাগাতে তিনি বাবার সঙ্গে ভাদনগর রেল স্টেশনে চা-ও বিক্রি করতেন। পরে নিজের দাদার সঙ্গে বাস টার্মিনাসে একটি চায়ের দোকান দেন। পড়াশোনায় মাঝারি মানের হলেও যেকোনও বিষয়ে গঠনমূলক আলোচনা ও বিতর্ক করতে ভালবাসতেন ছোট্ট নরেন্দ্র, পরে সেই গুণই প্রতিফলিত হয় প্রশাসনিক পদে দায়িত্ব গ্রহণের পর।
মাত্র ৮ বছর বয়সে তিনি রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘে যোগ দেন। ১৯৭৮ সালে তিনি আরএসএস সংভাগ প্রচারকের দায়িত্ব পান। ১৯৮৫ সালে আরএসএস থেকেই তাকে বিজেপিতে পাঠানো হয়। ১৯৯০ সালে লালকৃষ্ণ আদবাণীর রাম রথ যাত্রা, ৯১-৯২ সালে মুরলী মনোহর যোশীর একতা যাত্রার আয়োজন করেছিলেন তিনি। গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার আগে তিনি বিজেপির জাতীয় সম্পাদক ও সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করেছিলেন।
গুজরাটে নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে ভারতীয় জনতা পার্টি পরপর তিনবার সরকার গঠন করেছিল। এই সময়ে তাঁর একাধিক সিদ্ধান্ত গুজরাটে পরিবর্তন ও উন্নয়নের জোয়ার আনে। একইসঙ্গে তাঁকেও জাতীয় স্তরের রাজনৈতিক নেতা হিসাবে গড়ে তোলে।
বিপুল জনপ্রিয়তার কারণেই ২০১৩ সালে বিজেপির পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসাবে নরেন্দ্র মোদীকে মনোনীত করা হয়েছিল। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে এবং নরেন্দ্র মোদী মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এরপর ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে গতবারের তুলনাতেও বেশি সংখ্যক আসন পেয়ে পূর্ণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পুনরায় শপথ গ্রহণ করেন। বিগত ৭ বছর ধরে দেশের প্রধানমন্ত্রীর পদেই রয়েছেন নরেন্দ্র মোদী এবং তার দেখানো পথেই সাফল্যের শিখরে পৌঁছেছে ভারত।
আরও পড়ুন: Road Accident: দুর্ঘটনায় আহতকে হাসপাতালে পৌঁছে দিলে এবার থেকে নগদ পুরস্কার দেবে কেন্দ্র