গুয়াহাটি: রাজ্যে এখনও ওমিক্রন (Omicron) আক্রান্তের খোঁজ না মিললেও, দেশজুড়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। এই পরিস্থিতিতে ঝুঁকি নিতে রাজি নয় অসম সরকার (Assam Government)। সেই কারণেই শনিবার রাজ্য সরকারের তরফে নৈশ কার্ফু (Night Curfew) সহ একাধিক করোনাবিধির ঘোষণা করা হল। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, এবার থেকে রাত সাড়ে ১১টা থেকে ভোর ৬টা অবধি নৈশ কার্ফু জারি থাকবে।
অসম সহ উত্তর পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলিতে এখনও পৌঁছয়নি করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন। তবে বিশ্বজুড়ে যে গতিতে ওমিক্রন ছড়িয়ে পড়ছে, তাতে উত্তর-পূর্ব ভারতেও ওমিক্রন প্রবেশের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। অসম রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর (Assam Disaster Control Department) শনিবারই নতুন নির্দেশিকা জারি করে নৈশ কার্ফুর কথা ঘোষণা করা হয়। আজ, ২৬ ডিসেম্বর থেকেই এই কার্ফু শুরু হবে। তবে বছরের শেষ ও নতুন বছরের প্রথম দিন এই নিয়মের কড়াকড়িতে ছাড় দেওয়া হয়েছে। ৩১ ডিসেম্বর ও ১ জানুয়ারি এই কার্ফু থাকবে না বলেই জানানো হয়েছে।
রাজ্য সরকারের নয়া নির্দেশিকা অনুযায়ী, সমস্ত কর্মক্ষেত্র, ব্যবসা, প্রতিষ্ঠান, রেস্তরাঁ, শোরুম, মুদি দোকান, সবজি, ফল, ডেয়ারি ও দুধের দোকানগুলি রাত সাড়ে ১০টার মধ্যে বন্ধ করে দিতে হবে। সেল কাউন্টার, কোল্ড স্টোরেজ ও ওয়্যারহাউসগুলির ক্ষেত্রেও একই নিয়ম প্রযোজ্য।
খোলা ও বদ্ধ জায়গায় জনসমাগমের ক্ষেত্রেও নয়া বিধিনিষেধ চালু করা হচ্ছে। রাজ্য প্রশাসনের তরফে বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরকেই জেলায় করোনা পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে সেখানে জনসমাগমের সর্বোচ্চ সীমা স্থির করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, আপাতত বদ্ধ জায়গায় বসার জায়গার সর্বোচ্চ সংখ্যার ৫০ শতাংশ অতিথি নিয়েই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা যাবে।
ধর্মীয় স্থানগুলিতেও চালু করা হয়েছে টিকাকরণের নিয়ম, কেবল সম্পূর্ণ টিকাপ্রাপ্ত ব্যক্তিরাই ধর্মীয় স্থানগুলিতে প্রবেশ করতে পারবেন। প্রশাসনের নির্দেশিকা অনুযায়ী, বড় বড় ধর্মীয় স্থান, যেখানে বিপুল জনসমাগম হয়, সেখানে প্রতি ঘণ্টায় ৬০ জন সম্পূর্ণ টিকাপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা প্রবেশ করতে পারবেন। অন্যান্য ধর্মীয় স্থানগুলিতে প্রতি ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৪০ জন টিকাপ্রাপ্ত ব্য়ক্তিদের ঢুকতে দেওয়া হবে।
সিনেমা হলগুলিতেও ৫০ শতাংশ দর্শক সংখ্যা নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। তবে সেক্ষেত্রেও কেবলমাত্র সম্পূর্ণ টিকাপ্রাপ্ত ব্যক্তিরাই যেতে পারবেন। মানতে হবে সমস্ত করোনাবিধিও।
ওমিক্রনের জন্য আলাদাভাবে বিশেষ কোনও নির্দেশিকা জারি না করা হলেও, সমস্ত জেলাশাসক, পুলিশ সুপারিন্ডেন্ট সহ শীর্ষ অধিকর্তাদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে এবং করোনাবিধি যাতে সঠিকভাবে পালন করা হয়, তা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। যদি কাউকে রাস্তায় থুতু ফেলতে বা মাস্ক ছাড়া দেখা যায়, তবে এক হাজার টাকা জরিমানা করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।