ইম্ফল: আধাসামরিক বাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার চেষ্টা চলছে মণিপুরে। বিশেষ করে উপত্যকার বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলির পক্ষ থেকে এই প্রচেষ্টা দেখা যাচ্ছে। অসম রাইফেলস-এর অভিযোগ, উপত্যকার বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলি বাজার থেকে বহু ট্রাক কিনেছে। অসম রাইফেলস-এর গাড়িগুলিতে যেরকম জঙ্গলা ছাপ দেওয়া যাকে, এই ট্রাকগুলিতেওঅবিকল সেইভাবে রং করছে উপত্যকার বিদ্রোহীরা। এমনই অভিযোগ করেছে আধাসেনা। এই বিষয়ে ইতিমধ্যে মণিপুর পুলিশে অভিযোগ জানিয়েছে অসম রাইফেলস। তাদের অভিযোগ এই প্রবণতা বেশি দেখা যাচ্ছে, কাকচিং জেলায়।
আধাসেনার লেখা চিঠিতে অভিযোগ করা হয়েছে, “অসামরিক যানবাহনগুলিকে অসম রাইফেলসের গাড়ির মতো রূপ দেওয়া হচ্ছে। সেগুলিকে দেশবিরোধী কর্মকাণ্ডে ব্যবহার করা হচ্ছে। এই ভাবে অসম রাইফেলসের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এই বিষয়ে উপত্যকার বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলির ঘৃণ্য অভিপ্রায় অত্যন্ত স্পষ্ট।” এই অবস্থায় অসম রাইফেলস-এর পক্ষ থেকে চুরাচাঁদপুর জেলার পুলিশকে বলা হয়েছে, এই তথ্যগুলি কাকচিং জেলার পুলিশ সুপার এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। ভুয়ো সামরিক যানবাহনকে কেন্দ্র করে যাতে কোনও উত্তেজনা না ছড়ায়, তা নিশ্চিত করতে আগাম ব্যবস্থা নিতে হবে।
গত চার মাসেরও বেশি সময় ধরে মণিপুরে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে হিংসা চলছে। তফসিলি উপজাতির মর্যাদা পাওয়ার দাবি তুলেছিল রাজ্যের সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতেই সম্প্রদায়। ৩ মে, এই দাবির প্রতিবাদে,মণিপুরের পার্বত্য জেলাগুলিতে একটি ‘সংহতি মিছিল’ সংগঠিত করেছিল রাজ্যের আদিবাসী শিক্ষার্থী সংগঠন। এখনও পর্যন্ত ১৭৫ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন কয়েক শতাধিক। ঘর ছেড়ে আশ্রয় শিবিরে দিন কাটাচ্ছেন প্রায় ৬০,০০০ মানুষ।
মণিপুরের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৫৩ শতাংশই মেইতেই সম্প্রদায়ের। তারা বেশিরভাগই ইম্ফল উপত্যকায় বাস করেন। অন্যদিকে, রাজ্যের মোট জনসংখ্যার ৪০ শতাংশ হল কুকি এবং নাগা-সহ আদিবাসী গোষ্ঠীগুলি। তারা মূলত পার্বত্য জেলাগুলির বাসিন্দা। রাজ্যে শান্তি ফেরানোর লক্ষ্যেই অসম রাইফেলসকে মোতায়েন করা হয়েছে। তবে, প্রথম থেকেই উপত্যকার বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলি তাদের কাজে বাধা দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন আধাসামরিক বাহিনীর জওয়ানরা। এমনকী, মণিপুর পুলিশের সঙ্গেও বিরোধ বেধেছিল অসম রাইফেলস-এর।