দেশেও মিলল করোনার নয়া রূপের হদিস, ডেল্টা বা ডেল্টা প্লাসের থেকেও কি ভয়ঙ্কর এই অভিযোজিত ভাইরাস?

জ্যোতির্ময় রায় | Edited By: ঈপ্সা চ্যাটার্জী

Jul 09, 2021 | 2:11 PM

ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের দুটি অভিযোজিত রূপের খোঁজ মিলেছে, একটি ডেল্টা প্লাস এবং অপরটি এআই.২- হিসাবে পরিচিত। ইতিমধ্যেই অভিযোজিত দুটি রূপই ভারতে পাওয়া গিয়েছে।

দেশেও মিলল করোনার নয়া রূপের হদিস, ডেল্টা বা ডেল্টা প্লাসের থেকেও কি ভয়ঙ্কর এই অভিযোজিত ভাইরাস?
দেশে কমল সংক্রমণ (প্রতীকী চিত্র।)

Follow Us

নয়া দিল্লি: আমেরিকা ও ব্রিটেনের মতো ভারতেও ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের আরও অভিযোজিত রূপের হদিস মিলেছে, তবে কেন্দ্রীয় সরকার বিগত ২০ দিন ধরে এই বিষয়ে নীরবই ছিল। সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা আনুষ্ঠানিকভাবে জানান, ডেল্টা প্লাসের মতো ভারতেও AY.2 অভিযোজিত ভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া গিয়েছে। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিকেল রিসার্চ (ICMR) জানিয়েছে যে, এখনও পর্যন্ত দেশে কমপক্ষে পাঁচ জন রোগীর দেহে এআই.২ অভিযোজিত ভাইরাস ধরা পড়েছে। রাজস্থান, কর্ণাটক ও মহারাষ্ট্রে এই অভিযোজিত ভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া গিয়েছে। এখনও পর্যন্ত আমেরিকাতেই সর্বাধিক সংখ্যক এওয়াই.২ অভিযোজিত ভাইরাসে আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে।

গত বছর অক্টোবরে, মহারাষ্ট্রে দ্বৈত অভিযোজিত (Double Mutated COVID-19) করোনার ভাইরাস পাওয়া গিয়েছিল। তারপরে ডেল্টা ও কাপা ভ্যারিয়েন্টগুলির উপস্থিতি  সম্পর্কে জানা যায়।উল্লেখ্য, ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের দুটি অভিযোজিত রূপের খোঁজ মিলেছে, একটি ডেল্টা প্লাস এবং অপরটি এআই.২- হিসাবে পরিচিত। ইতিমধ্যেই অভিযোজিত দুটি রূপই ভারতে পাওয়া গিয়েছে। তবে এই নতুন রূপের প্রভাব কতটা, সে সম্পর্কে খুব বেশি কিছু এখনও জানা যায়নি। তবে বিজ্ঞানীরা আশঙ্কাও করছেন, দেশে যদি দেশে তৃতীয় ঢেউয়ের তৃতীয় হয়, তবে তার পিছনে ডেল্টা প্লাস ও এআই.২-এর বড় ভূমিকা থাকতে পারে।

ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের তৃতীয় মিউটেশন বা অভিযোজন ইতিমধ্যেই সামনে এসেছে, গত ২৩ জুন এই নতুন অভিযোজিত রূপ সম্পর্কে জানা যায় ও তা নথিভুক্ত করা হয়। তবে স্বস্তির খবর, ভারতে এখনও অবধি এই অভিযোজিত রূপটি দেখা যায়নি। এআই .৩ রূপান্তরটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যের কয়েকটি রাজ্যে জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের মাধ্যমে নিশ্চিত করা হয়েছে।

ভারতে ডেল্টা প্লাসে আটজনেরও বেশি আক্রান্তের খোঁজ মেলার পরও কেন্দ্র বেশ কিছুদিন এই তথ্য গোপন করে রাখে। ওই সময় কেন্দ্র সাংবাদিক সম্মেলনে দেশে ডেল্টা প্লাসে আক্রান্তের কথা অস্বীকার করলেও, পরের সপ্তাহেই ৪৯ জন আক্রান্তের খোঁজ মেলার কথা স্বীকার করে নেয়। সন্ধ্যায় সাংবাদিক সম্মেলনে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য সচিব রাজেশ ভূষণ এটিকে করোনার ভয়াবহ কোনও রূপ হিসাবে বিবেচনা না করার কথা জানালেও, পরে রাত্রেই স্বাস্থ্য মন্ত্রক একটি বিবৃতি জারি করে ডেল্টা প্লাসকে উদ্বেগের কারণ বা ভ্যারিয়েন্ট অব কনসার্ন বলে ঘোষণা করে। দেশে এখনও অবধি ৮০জনেরও বেশি ডেল্টা প্লাসে আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে। মোট ১৪ টি রাজ্যে ডেল্টা প্লাসে আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে।

জিআইএসআইডি(GISID) প্ল্যাটফর্ম অনুযায়ী, বিশ্বে এখনও অবধি ২৫০ টিরও বেশি এআইওয়াই.২  ভ্যারিয়েন্টের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। এর মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজ্যগুলি থেকে সর্বোচ্চ ২৩৯ টি নমুনা পাওয়া গিয়েছে। উল্লেখ্য, জিআইএসআইডি প্ল্যাটফর্মটি সমস্ত দেশ যৌথভাবে তৈরি করেছে, যেখানে প্রতিটি দেশ নমুনাসহ নতুন মিউটেশন সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য জমা দেয়। এখনও অবধি ভারত থেকে চারটি মামলার তথ্য দেওয়া হয়েছে, যেখানে এওয়াই.২-এর সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। ২ থেকে ২১ মে-র মধ্যে রাজস্থান, মহারাষ্ট্র এবং কর্ণাটক থেকেই এই নমুনাগুলি মিলেছে ।

কোভিড সংক্রমণ থেকে সুস্থ হয়ে ওঠা ব্যক্তিদের মধ্যে যখন অ্যান্টিবডি পরীক্ষা করা হয়, তখন দেখা গিয়েছিল যে, বি ১.১০৭  ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে অ্যান্টিবডির পরিমাণ ৯৭.৮ শতাংশ ছিল, সেখানেই বিটা ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে ২৯.৬ শতাংশ এবং ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে কেবল ২১.২ শতাংশ অ্যান্টিবডি পাওয়া গিয়েছে।

আরও পড়ুন: ডিসেম্বরের মধ্যেই কি সকল প্রাপ্তবয়স্কদের টিকাকরণ সম্ভব? কোন পথে এগোলে মিলবে সমাধান?

Next Article