আগরতলা : ‘ফুটবে এবার পদ্মফুল, বাংলা ছাড়ো তৃণমূল…!’ ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের আগে ভাইরাল হয়ে গিয়েছিল বাবুল সুপ্রিয়র গাওয়া গান। সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে বাবুলের সেই গান ‘এই তৃণমূল আর না।’ ১৯ থেকে একুশ! মাঝে জল গড়িয়েছে অনেক। সেই গান গাওয়া আসানসোলের ‘সাংসদ’ এখন দিল্লি ছেড়ে কলকাতায়, গেরুয়া ছেড়ে সবুজে। ছেড়েছেন সাংসদ পদও। বিজেপির সভা মঞ্চে দাঁড়িয়ে গায়ক- নেতার দিদিকে আক্রমণের সেই সব বক্তব্য আজও অনেকের মনে আছে। তবে ত্রিপুরায় রাজনৈতিক সংঘাতের পরিস্থিতি নতুন মাত্রা পেল বাবুলের সভায়। তাঁর সভার অদূরেই বেজে উঠল তাঁরই গাওয়া সেই গান।
শুক্রবার আগরতলায় যখন তৃণমূলের প্রচার সভায় উপস্থিত বাবুল সুপ্রিয় ও তৃণমূলের যুব নেত্রী সায়নী ঘোষ, তখন সভার পাশ দিয়ে ছুটে গেল একটি গাড়ি, তাতে বাজছে বাবুলের সেই গান। আগরতলায় পুরভোটের প্রচারে ব্যস্ত সব দলই। এবার প্রথমবার লড়ছে তৃণমূল। তাই প্রচারের কর্মসূচিতে কোনও খামতি রাখছে না ঘাসফুল শিবির। পিছিয়ে নেই বিজেপিও। আজ তাদেরই একটি প্রচার গাড়ি যাচ্ছিল বাবুলের সভার পাশ দিয়ে। প্রায় প্রতিদিন বিপ্লব দেব সরকারের সঙ্গে তৃণমূল নেতাদের সংঘাতের ছবি সামনে আসছে। তাই প্রশ্ন উঠছে, নিছকই প্রচার নাকি তৃণমূল শিবিরের অস্বস্তি বাড়াতে এমনটা করেছে বিজেপি?
শুক্রবার সকালেই ত্রিপুরায় পৌঁছেছেন বাবুল। এ দিন সন্ধেয় তাঁর একটি জনসভা ছিল আগরতলায়। সায়নী যখন বক্তব্য রাখছেন, তখনই পাশ দিয়ে যাচ্ছিল বিজেপির গাড়ি। তাতেই বাজছিল বাবুলের কন্ঠে সেই গান। গান শুনে ক্ষুব্ধ হন সায়নী। উঠে এসে মাইক্রোফোন টেনে নেন বাবুল। তিনি বলেন, ‘ভেবে দেখুন, নেতারা কতটা অহঙ্কারি হলে, নীচু তলার নেতাদের সঙ্গে কতটা দুর্ব্যবহার করলে এই গানটা যে ছেলেটা লিখেছিল, সেও আজ দল বদলে দিদির হাত ধরে তৃণমূলে চলে আসে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি ওই গান শুনছি না। আমি যা করি সেটা মন থেকে করি, তৃণমূলের জন্য আরও ভালো গান বানাব।’ বাবুলের দাবি, এই গান বাজালে আসলে এটাই প্রমাণিত হচ্ছে যে, দলের অহঙ্কারের জন্যই ছেড়ে চলে এসেছেন তিনি।
আজ ত্রিপুরায় রাজ্য নির্বাচন কমিশনের দফতরের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ করে তৃণমূল। সেখানেও যোগ দিয়েছিলেন বাবুল। বাবুলের বক্তব্য, “এখানে যে ভাবে গুন্ডামি হচ্ছে, সিসিটিভি না রাখা, ভিভিপ্যাট না রাখা। এগুলো ভোট বিধির উপেক্ষা ছাড়া কিছুই নয়। এগুলো চলতে পারে না। বাইক নিয়ে গুন্ডারা ছেলেদের ভয় দেখাচ্ছে, প্রার্থীদের হুমকি দিচ্ছে। পুলিশ আর সরকারের মধ্যে যে সমীকরণ এটা খুব খারাপ। রাজ্য নির্বাচন কমিশনের ব্যবস্থা নেওয়া উচিৎ।”
তাঁদের মূলত দু’টি দাবি। প্রথমটি হল, ভিভিপ্যাট এবং সিসিটিভিতে যথাযথ ভাবে নজরদারি চালাতে হবে। না হলে নির্বাচনের ক্ষেত্রে সন্ত্রাস বা কারচুপির অভিযোগ বেশি করে উঠবে। একই সঙ্গে তৃণমূলের অভিযোগ, যে ভাবে লাগাতার সন্ত্রাস চলছে ত্রিপুরায়, তাদের প্রার্থী-কর্মিসমর্থকদের উপর হামলা হচ্ছে তা রুখতে হবে নির্বাচন কমিশনকে। ত্রিপুরায় বিরোধী যে সমস্ত প্রার্থীরা রয়েছে, তাদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার দাবিতেও এদিন সরব হয় তৃণমূল।
আরও পড়ুন : Uttarakhand BJP : সোশ্যাল মিডিয়ায় কতটা অ্যাকটিভ? সেই দেখেই উত্তরাখণ্ডে প্রার্থীদের টিকিট দেবে বিজেপি