নয়া দিল্লি: বগটুই কাণ্ডে জড়িত লালন শেখের রহস্য মৃত্যুর তদন্তে ভিন রাজ্যের পুলিশকর্তা নিয়োগের ইঙ্গিত দিল সুপ্রিম কোর্ট। মৃত্যুর কারণ যাই হোক, সিবিআই এই ঘটনার তদন্ত করতে পারে না বলে পর্যবেক্ষণ সুপ্রিমকোর্টের বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার।সিবিআই, রাজ্য পুলিশ, রাজ্য সরকার-সব পক্ষকে নোটিস জারি করার নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের। এই মামলার পরবর্তী শুনানি ৩০ অক্টোবর।
এদিনের শুনানিতে সিবিআই-এর পক্ষ থেকে এডিশন্যাল সলিসেটর জেনারেল সওয়াল করেন, লালন শেখের মৃত্যু মামলার তন্তভার তৃতীয় কোনও পক্ষের হাত দেওয়ার প্রয়োজনই। বগটুই মামলায় প্রথম থেকেই তদন্ত করছে সিবিআই। তা অনেকটাই এগিয়েছে। তদন্তের মাঝেই মূল অভিযুক্ত লালন শেখের দেহ উদ্ধার হয় সিবিআই-এর অস্থায়ী ক্যাম্প থেকে। সেক্ষেত্রে লালন আত্মহত্যা করেছিলেন বলেই সিবিআই দাবি করে।
যদিও এই মামলায় প্রথম থেকেই লালনের মৃত্যুতে খুনের অভিযোগ তুলছিল পরিবার। কারণ লালনের শরীরে ক্ষত ছিল। সেক্ষেত্রে বিচারপতির বক্তব্য, এই মামলায় কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে সিবিআই। সেক্ষেত্রে যার বিরুদ্ধে অভিযোগ, সে কী করে এই মামলার তদন্ত করবে? অর্থাৎ সিবিআই-এর হাতেই লালন শেখের মৃত্যমামলার তদন্ত থাকা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে সুপ্রিম কোর্টের। শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ, এক্ষেত্রে ভিন রাজ্য থেকে, সেটা হতে পারে ওড়িশা থেকে কোনও উচ্চ পদস্থ আধিকারিককে এনে, তাঁর নেতৃত্বে টিম গঠন করে তদন্ত করানো যায়। এক্ষেত্রে রাজ্য পুলিশ, সিবিআই, রাজ্য সরকার, সব পক্ষকেই নোটিস জমা দিতে বলা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, বীরভূমের বগটুইয়ে যে নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটেছিল, তার মূল অভিযুক্ত ছিলেন লালন শেখ। ঘটনার ৯ মাস পর ঝাড়খণ্ড থেকে গ্রেফতার করা হয় লালন শেখকে। আর গ্রেফতারির ঠিক ৯ দিনের মাথায় সিবিআইয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পের শৌচালয়ে ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় লালনের। পরিবার প্রথম থেকেই সিবিআই-এর বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলে। প্রাথমিকভাবে ময়নাতদন্তের রিপোর্টে উল্লেখ থাকে, গলায় ফাঁস লাগার কারণেই মৃত্যু হয়েছে লালনের। কিন্তু পরিবারের দাবি, লালনের জিভ কাটা ছিল, পায়ে ক্ষত ছিল। তাকে খুন করে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। হাইকোর্ট পেরিয়ে লালনের মৃত্যু মামলা পৌঁছয় সুপ্রিম কোর্টে।