ভুবনেশ্বর: আড়াই দিন কেটে গিয়েছে দুর্ঘটনার। শুক্রবার রাতে বালেশ্বরের (Balasore) বাহানগায় যেখানে শুধু আর্তচিৎকার, গোঙানি ও কান্নার শব্দ শোনা গিয়েছিল, সেখানেই আজ ফের শোনা যাচ্ছে ট্রেনের হর্ন। উদ্ধারকাজ শেষে স্বাভাবিক হয়েছে রেল চলাচল ব্যবস্থাও। অন্যদিকে, চিত্রটা সম্পূর্ণ ভিন্ন ওড়িশার হাসপাতালে। সেখানে এখনও মৃতদেহ স্তূপাকার হয়ে পড়ে রয়েছে। লাশকাটা ঘরে এখনও শতাধিক দেহ পড়ে রয়েছে, যাদের শনাক্ত (Identify) করা সম্ভব হয়নি। এদিকে, দুর্ঘটনার দুই দিন পার হয়ে যাওয়ায়, উদ্ধার হওয়া দেহগুলিতে পচন ধরতেও শুরু হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে যদি আগামী দুইদিনের মধ্যে দেহ শনাক্তকরণ না করা হয়, তবে দেহে সম্পূর্ণ পচন ধরে যাবে। পরবর্তী সময়ে দেহ শনাক্ত করার জন্য ডিএনএ পরীক্ষা (DNA Test) ছাড়া আর কোনও উপায় থাকবে না প্রশাসনের।
দুর্ঘটনার পরই দেহগুলি উদ্ধার করা হলেও, এত সংখ্যক দেহ কোথায় রাখা হবে, তা নিয়েই সংশয় তৈরি হয়েছিল। শেষ অবধি দুর্ঘটনাস্থলের কাছেই একটি স্কুলের ক্লাসরুমে ঠাঁই হয় মৃতদেহগুলির। কিন্তু এত গরম, তার উপরে ছিন্নভিন্ন হওয়া দেহ। পচন ধরতে খুব বেশি সময় লাগেনি। সংরক্ষণ করে রাখতেই জায়গা বদল করা হয়, চেম্বার অব কমার্স ভবনে স্থানান্তরিত করা হয় মৃতদেহ। পরে রবিবার ভুবনেশ্বরের এইমস ও কটক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় দেহগুলি।
ওড়িশা সরকারের তথ্য অনুযায়ী, মৃতদের মধ্যে এখনও ১৮২ জনের শনাক্তকরণ সম্ভব হয়নি। তাদের ঠিকানা আপাতত লাশকাটা ঘর। যাদের আত্মীয়-পরিজনরা নিখোঁজ, তাদের এই হাসপাতালগুলিতে আসার অনুরোধ করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, দেহগুলির অবস্থা এতটাই খারাপ যে অধিকাংশের মুখ চেনা দায়। দেহগুলিকে শনাক্ত করার জন্য নম্বর দেওয়া হয়েছে। সেই ছবি হাসপাতালের জায়ান্ট স্ক্রিনে দেখানো হচ্ছে।
যেহেতু দেহগুলিতে পচন ধরতে শুরু করেছে, তাই আগামী কয়েকদিনের মধ্যে যদি মৃতদের পরিবার-পরিজনরা না আসেন, তবে দেহ শনাক্তকরণের জন্য ডিএনএ পরীক্ষাই একমাত্র পন্থা হতে পারে সরকারের।