Rajkumar Roat: ‘মঙ্গলসূত্র পরি না, সিঁদুর লাগাই না, আমরা হিন্দু নই’, উঠল নতুন রাজ্য গঠনের দাবি

Jul 19, 2024 | 2:05 PM

Rajkumar Roat: 'পশ্চিম ভারতে মাথাচাড়া দিচ্ছে আরও এক বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন। সাংসদ রাজকুমার রোট জানিয়েছেন, শিগগিরই তাঁদের এক প্রতিনিধি দল তাঁদের দাবি নিয়ে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দেখা করবে। মঙ্গলসূত্র না পরতে এবং সিঁদুর না লাগানোর জন্য আদিবাসী মহিলাদের কাছে আর্জি জানান মানেকা দামোর।

Rajkumar Roat: মঙ্গলসূত্র পরি না, সিঁদুর লাগাই না, আমরা হিন্দু নই, উঠল নতুন রাজ্য গঠনের দাবি
মানগড় ধামে ভিল সম্প্রদায়ের সমাবেশে
Image Credit source: Twitter

Follow Us

জয়পুর: পশ্চিম ভারতে মাথাচাড়া দিচ্ছে আরও এক বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন। উঠল রাজস্থান, মহারাষ্ট্র, গুজরাট ও মধ্য প্রদেশের ৪৯টি জেলাকে একত্রিত করে এক নতুন ভিল রাজ্য গঠনের দাবি। বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই), রাজস্থানের বাঁশওয়ারা জেলার মানগড় ধামে ভিল সম্প্রদায়ের এক বড় সমাবেশে, এই দাবি তুললেন সাংসদ রাজকুমার রোট। তিনি জানিয়েছেন, শিগগিরই তাঁদের এক প্রতিনিধি দল এই দাবি নিয়ে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দেখা করবে। শুধু রাজস্থান নয়, গুজরাট এবং প্রতিবেশী রাজ্যগুলি থেকেও আদিবাসী ভিল সম্প্রদায়ের মানুষ এই সমাবেশে যোগ দেন। মানগড় ধাম আদিবাসী সম্প্রদায়ের একটি শ্রদ্ধেয় স্থান।

ভিল সম্প্রদায়ের নেতারাই এই সমাবেশের আয়োজন করেছিলেন। এবারের লোকসভা নির্বাচনে, ভারতীয় আদিবাসী পার্টির টিকিটে সাংসদ হয়েছেন রাজকুমার রোট। সভায় তিনি জানান, দীর্ঘদিন ধরেই পৃথক ভিল রাজ্যের দাবি জানিয়ে আসছে ভারতীয় আদিবাসী পার্টি। তিনি বলেন, “ভিল প্রদেশের দাবি নতুন নয়। বিএপি এই দাবি জোরালোভাবে তুলেছে। মহরালি শেষে একটি প্রতিনিধি দল এই প্রস্তাব নিয়ে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করবে।’ তিনি লোকসভাতেও এই প্রসঙ্গ তুলবেন বলে জানিয়েছেন।

মধ্য প্রদেশ, গুজরাট এবং রাজস্থান – এই তিনটি রাজ্যের সীমান্তে অবস্থিত মানগড় ধাম। ১৯১৩ সালে এখানেই ব্রিটিশ শাসকদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রাণ দিয়েছিলেন ভিল সম্প্রদায়ের ১৫০০-রও বেশি মানুষ। সেই সময় এই অঞ্চলে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছিল। ব্রিটিশদের কাছে কৃষির উপর আরোপিত কর কমানোর দাবি জানিয়েছিল ভিল সম্প্রদায়। তারা সাফ বলেছিল, তাদের ঐতিহ্যকে স্বীকৃতি দিতে হবে। সেই সঙ্গে জোর করে কাজ করানোর নামে হেনস্থা করা যাবে না। আদিবাসী নেতা গোবিন্দ গুরুর নেতৃত্বে এই দাবির সমর্থনে ১৯১৩ সালের ১৭ নভেম্বর মানগড়ে জড়ো হয়েছিলেন ভিল সপ্রদায়ের প্রচুর মানুষ। ব্রিটিশরা জানতে পেরে পুরো এলাকা ঘেরাও করে এবং তাদের সেখান থেকে চলে যেতে বলেছিল। কিন্তু, নিজেদের দাবিতে অনড় ছিল ভিলরা। কর্নেল শাটন আচমকা গুলি চালানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন। গোবিন্দ গুরুকে আটক করে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। পরে সাজা কমিয়ে তাঁতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। মানগড় ধামেই তাঁর সমাধি রয়েছে।


সেই মানগড়ে দাঁড়িয়েই ১৯১৩ সালের ঘটনা স্মরণ করে রাজকুমার রোট বলেন, “১৯১৩ সালে মানগড়ে ভিলদের বলিদান শুধুমাত্র ভক্তি আন্দোলনের জন্য নয়, ভিল প্রদেশের দাবির জন্যও ছিল।” ভিল সম্প্রদায়ের নেত্রী, মানেকা দামোর দাবি করেন, আদিবাসী ও হিন্দু সম্প্রদায়ের সংস্কৃতি আলাদা। আদিবাসীরা হিন্দু নয়। মঙ্গলসূত্র না পরতে এবং সিঁদুর না লাগানোর জন্য আদিবাসী মহিলাদের কাছে আর্জি জানান তিনি। তিনি বলেন, “আমি মঙ্গলসূত্র পরি না, সিঁদুরও লাগাই না। আমি কোনও উপবাসও করি না।” বিদ্যালয়ে বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠান হওয়ার বিরোধিতা করেন তিনি। তিনি বলেন, “যেখানে বিদ্যালয়গুলি শুধুমাত্র শিশুদের শিক্ষার জন্য ব্যবহার করা উচিত, সেখানে এগুলিকে মন্দিরে পরিণত করা হয়েছে। স্কুলগুলোয় দেব-দেবীর বাড়ি বানানো হয়েছে। এটা শিক্ষার মন্দির, সেখানে কোনও ধর্মীয় অনুষ্ঠান করা উচিত নয়।”

রাজস্থানের বিজেপি সরকার অবশ্য ভিল সম্প্রদায়ের পৃথক রাজ্যের দাবি এক কথায় উড়িয়ে দিয়েছে। তারা বলেছে, শুধুমাত্র জাতপাতের ভিত্তিতে আলাদা রাজ্য তৈরির দাবি তোলা যায় না। তাই রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে কেন্দ্রের কাছে এই ধরনের কোনও প্রস্তাব পাঠানো হবে না।

Next Article