আগরতলা: পাখির চোখ এখন ত্রিপুরা। উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যে ইতিমধ্যে পা বাড়াতে শুরু করেছে তৃণমূল। বাম-কংগ্রেস তো রয়েছেই। এই পরিস্থিতিতে ত্রিপুরা দখলে রাখতে প্রচারে কোনও খামতি দিতে নারাজ গেরুয়া শিবির। তাই প্রার্থী তালিকা প্রকাশের দিনই দলের শীর্ষস্থানীয় নেতা-নেত্রীদের ত্রিপুরা সফরে যাওয়ার সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করল গেরুয়া শিবির। যার মধ্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার শীর্ষস্তরের সদস্য থেকে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ, অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা যেমন রয়েছেন, তেমনই বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে.পি নড্ডা, হেমা মালিনী থেকে বঙ্গ বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বও রয়েছেন।
বিজেপি সূত্রে খবর, ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচনের তারকা প্রচারক হিসাবে বঙ্গ বিজেপির শীর্ষ স্থানীয় নেতা-নেত্রীদের বেছে নেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ, বিধায়ক অসীম সরকার, সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর, নিশীথ প্রামাণিক এবং তারকা-নেতা মিঠুন চক্রবর্তী। তবে এই তালিকায় নাম নেই রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের।
যদিও বঙ্গ বিজেপির এই নেতৃত্বের অনেকেই ইতিমধ্যে ত্রিপুরায় গিয়ে ভোটের দামামা বাজিয়ে এসেছেন। সম্প্রতি বিজেপির ৪৩ জনের একটি প্রতিনিধি দল ত্রিপুরা সফরে যান। যার মধ্যে অগ্নিমিত্রা পল, শুভেন্দু অধিকারী সহ বাংলার ৮ বিধায়ক রয়েছেন। এছাড়া মিঠুন চক্রবর্তীও ইতিমধ্যে ত্রিপুরা সফরে গিয়েছেন। তবে এবার একেবারে নির্বাচনী রণকৌশল স্থির করে দফায়-দফায় ত্রিপুরায় ভোট প্রচারে যাবেন বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব সহ গেরুয়া শিবিরের শীর্ষ স্তরের নেতারা। সবমিলিয়ে, ভোট প্রচারের এই তারকা নেতার তালিকায় মোট ৪০ জনকে বেছে নেওয়া হয়েছে বলে গেরুয়া শিবির সূত্রে জানা গিয়েছে। তবে রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের নাম এই তালিকায় না থাকার কারণ নিয়ে রাজনীতির অন্দরে নানান জল্পনা শুরু হয়েছে।
প্রসঙ্গত, বছর দশেক আগেও উত্তর-পূর্বের রাজ্য ত্রিপুরায় বিজেপির বিশেষ অস্তিত্ব ছিল না। ২০১৮ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বামেদের ২৩ বছরের শাসনের অবসান ঘটায় গেরুয়া শিবির। তারপর মুখ্যমন্ত্রী হন বিজেপি নেতা বিপ্লব দেব। কয়েক বছরেই অবশ্য পালাবদল হয়। বর্তমানে বিজেপি নেতা মানিক সাহার হাতেই রয়েছে রাজ্যের ব্যাটন। আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের দায়িত্বও মানিক সাহার উপর দিয়েছে গেরুয়া শিবির। তিনি সেই দায়িত্ব পালনে কতটা সফল হন, রাজ্যের দখল ধরে রাখতে পারেন কিনা, সেটাই দেখার।