উত্তর প্রদেশে লোকসভা নির্বাচনের ফল চমকে দিয়েছে দেশের রাজনৈতিক মহলকে। বিজেপি যেমন ধাক্কা খেয়েছে, তেমনই সে রাজ্যের ‘পিছড়ে’ বর্গের ভোটেও এসেছে পরিবর্তন। আর তাতেই কামাল করেছে সমাজবাদী পার্টি এবং কংগ্রেস। এত বছর ধরে উত্তর প্রদেশের দলিত মুখ হিসাবে পরিচিত ছিলেন, সেই মায়াবতীর দল বহুজন সমাজবাদী পার্টি (বিএসপি) ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে গিয়েছে। বিএসপি কোনও আসন তো জেতেইনি, উল্টে ভোট শতাংশও কমেছে তাদের। দলির সমাজের আস্থার পাত্রী যে মায়াবতী আর নেই- তা এই ফল থেকেই স্পষ্ট। সেই শূন্যস্থান দখল করলেন ভিম আর্মির প্রধান চন্দ্রশেখর আজাদ। উত্তর প্রদেশের নাগিনা লোকসভা কেন্দ্র থেকে তিনি জিতেছেন। ৩৬ বছর বয়সে পা রাখবেন দেশের সংসদে। তাঁর দল একটি আসন পেলেও উত্তর প্রদেশ জুড়েই দলিত ও পিছড়ে পড়া বর্গের আস্থা অর্জনে সমর্থ হয়েছেন।
২০১৫ সালে ভীম আর্মি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন চন্দ্রশেখর আজাদ। আইনে স্নাতক চন্দ্রশেখর দলিত এবং সমাজের প্রান্তিক মানুষের প্রতিনিধিত্ব করার জন্যই এই দল গঠন করে। এর পর উত্তর প্রদেশ এবং জাতীয় রাজনীতির বিভিন্ন ঘটনা নিয়ে সরব হতেন তিনি। তাঁকে গ্রেফতার করে এনএসএ আইনে মামলা করে যোগী সরকার। ২০১৭ সালে গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। যদিও ২০১৮তে জেল থেকে ছাড়া পান তিনি।
যে কেন্দ্র থেকে চন্দ্রশেখর জিতেছেন, সেখানেও পিছড়ে বর্গের ভোটারই বেশি। সংখ্যালঘু ভোটের পাশাপাশি দলিত ভোটও সেখানে প্রচুর। এছাড়া রাজপুত, জাঠ, ত্যাগী, ঠাকোর সম্প্রদায়ের বাস সেখানে। এই সব এলাকায় বিএসপি গড় ছিল বহুকাল। সেখানেই ৫১ শতাংশ ভোট পেয়ে জিতেছেন চন্দ্রশেখর। নিজে জেতার পাশাপাশি পিছড়ে বর্গের ভোট যাতে সমাজবাদী পার্টির ঝুলিয়ে যায়, সে প্রচারও চালিয়েছেন। তাতে কাজও হয়েছে। এই নির্বাচনের মাধ্যমে চন্দ্রশেখর উত্থান হল জাতীয় রাজনীতিতে। আগামী দিনে উত্তর প্রদেশের দলিত মুখ হিসাবে নিজের জায়গা কতটা পাকা করতে পারেন, সেটাই এখন দেখার।