জোশীমঠ: গতকাল ভয়াবহ তুষারধস নামে উত্তরাখণ্ডে (Uttarakhand)। কেদারনাথের স্মৃতি উসকে দিয়ে প্রায় একইভাবে হিমবাহের একাংশ ভেঙে পড়েছে জোশীমঠে। গতকাল চামোলি জেলার তপোবন এলাকায় রানি গ্রামে ঋষিগঙ্গা বিদ্যুৎ প্রকল্পের উপর আচমকাই হিমবাহটি ভেঙে পড়ে। প্রবল জলের তোড়ে ভেঙে যায় ধৌলিগঙ্গা (Dhauliganga) নদীর উপর বাঁধ। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছে আশেপাশের কয়েকটি বাড়ি। প্রাথমিকভাবে সরকারের তরফে প্রায় ৫০ থেকে ৭৫ জন বাসিন্দার নিখোঁজ হওয়ার কথা বললেও পরে জানানো হয়, নিখোঁজ প্রায় ২০০। যদিও অসমর্থিত সূত্রে জানা যাচ্ছে নিখোঁজের সংখ্যা কমপক্ষে ৯০০। বিপর্যয়ের দ্বিতীয় দিনেও এই ভয়াবহ ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্য একদম গ্রাউন্ড জিরো থেকে তুলে ধরছে TV9 বাংলা। চোখ রাখুন লাইভ ব্লগে (Uttarakhand Joshimath Dam News LIVE)।
জোশীমঠের বিপর্যয়ের কারণ হিসাবে উঠে আসছে নানা মত। কেউ বলছেন, বিশ্বায়নের কারণেই হিমবাহের একাংশ ভেঙে পড়েছে। আবার কারোর মতে, সরকারের অবহেলাতেই এই বিপর্যয় ঘটেছে। আরও পড়ুন: জোশীমঠে বিপর্যয়ের নেপথ্যে কার হাত? উঠে আসছে ‘নানা মুনির নানা মত’
সুড়ঙ্গে আটকে পড়া নিখোঁজদের উদ্ধার করতে মরিয়া চেষ্টা সেনার। ৩০০ জন আইটিবিপি ও ২০০-রও বেশি সেনা জওয়ান উদ্ধার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
#Uttarakhand#Update: #UttarakhandGlacialBurst
टनल में फंसे लोगों के लिए बचाव कार्य जारी। टनल के अंदर पहुंच कर रास्ता खोलने का प्रयास किया जा रहा है। pic.twitter.com/coCBZGsjUS
— ADG PI – INDIAN ARMY (@adgpi) February 8, 2021
শেষবার কথা হয়েছিল শনিবার। ফোনে কয়েক মিনিট। প্রত্যেক দিনই ছেলেদের সঙ্গে কেবলমাত্র ওইটুকুই কথা বলতে পারতেন বৃদ্ধ বাবা-মা। রাতে কথা বলার পর আর পাঁচ দিনের মতোই খাওয়া দাওয়া সেরে শুতে চলে গিয়েছিলেন। রবিবার সকালে কথা হয়নি। কিন্তু তাতে বিশেষ আমল দেননি তাঁরা। কারণ সারাদিনই ব্যস্ত থাকেন দুই ছেলে, সেটাই ভেবে নিয়েছিলেন তাঁরা। বিপর্যয়ের খবর প্রতিবেশীদের কাছ থেকে শুনেই ছুটে গিয়ে টিভি চালিয়েছিলেন। আর তারপর থেকে ফোনের পর ফোন! প্রত্যুত্তরে ‘নো নেটওয়ার্ক’ রেকর্ডিং। উত্তরাখণ্ডে কাজে গিয়ে নিখোঁজ হয়ে যাওয়া পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদলের তিন সন্তানের বৃদ্ধ দরিদ্র বাবা-মায়ের কাছে এখন গোটা পৃথিবীটাই যেন অন্ধকার। উত্তরাখণ্ডের প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে (Uttarakhand Glacier Bursts) এখনও পর্যন্ত নিখোঁজের সংখ্যা শতাধিক। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন মহিষাদলের সুদীপ গুড়িয়া, লালু জানা ও বুলা জানা।
আরও পড়ুন: দুটো পয়সার জন্য রোববারও কাজ করতেন, উত্তরাখণ্ডের অভিশপ্ত দিনে নিখোঁজ বাংলার ৩ ছেলে
বিপর্যয়ের খবর পাওয়ার পরই ঘটনাস্থানে ছুটে গিয়েছিলেন উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী তিবেন্দ্র সিং রাওয়াত। আজও ঘটনাস্থান পরিদর্শনে যান তিনি। পরে তিনি টুইট করে জানান, পুরোদমে উদ্ধারকার্য চলছে। আটকে পড়া ব্যক্তিদের উদ্ধার করতে আমরা সাধ্যমতো প্রচেষ্টা করব।
#WATCH Uttarakhand CM Trivendra Singh Rawat at Tapovan, Joshimath, reviews relief efforts
“Our relief and rescue operations are continuing in full swing and we are doing best to save lives,” he tweets pic.twitter.com/TvCtoH3EKT
— ANI (@ANI) February 8, 2021
বিপর্যয়ের কারণ খুঁজতে আজ বিশেষ বৈঠকে বসেন উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী তিবেন্দ্র সিং রাওয়াত। বৈঠক শেষে তিনি জানান, ত্রাণ ও উদ্ধারকার্যে সাহায্যের জন্য রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা তহবিল থেকে ২০ কোটি টাকা দেওয়া হবে।
Uttarkhand CM Trivendra Singh Rawat conducts review meeting on disaster relief operation following glacier burst in Chamoli; releases Rs 20 crores from State Disaster Response Fund for relief and rescue operation: CMO pic.twitter.com/kteHQRqoVL
— ANI (@ANI) February 8, 2021
সকাল থেকে দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর অবশেষে পরিষ্কার হল তপোবনের সুড়ঙ্গ। গতকাল হড়পা বানে বন্ধ হয়ে যাওয়া সুড়ঙ্গের মধ্যে আটক শ্রমিকদের খোঁজে সুড়ঙ্গে প্রবেশ করল আইটিবিপি, এনডিআরএফ, এসডিআরএফ ও সেনাবাহিনীর জওয়ানরা।
A joint team of ITBP, Army, SDRF and NDRF has entered the Tapovan tunnel in Chamoli for recce: ITBP. #Uttarakhand pic.twitter.com/svqYtsbvob
— ANI (@ANI) February 8, 2021
রবিবার সকালে জোশীমঠে বিপর্যয়ে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে চামোলি জেলার ১৩টি গ্রাম। হেলিকপ্টারের সাহায্যে সেই গ্রামগুলিতে ত্রাণ পৌঁছে দিচ্ছেন আইটিবিপির জওয়ানরা।
#WATCH | Uttarakhand: ITBP personnel provide support to the villages that have been cut off due to the flash floods in Chamoli. Five sorties carrying relief material have been sent.
Visuals from Lata Helipad. pic.twitter.com/0GI4YjQKhs
— ANI (@ANI) February 8, 2021
গতকাল হড়পা বানের পর থেকেই লাগাতার উদ্ধারকার্য চলছে। আটকে পড়া মানুষের খোঁজে দুর্গম পাহাড়ি পথ ছাড়াও বায়ুসেনা সকাল থেকেই আকাশপথেও নজরদারি চালাচ্ছে। বিপর্যয়ের পরে উপত্যকার কী হাল, তা ধরা পড়ল বায়ুসেনার ক্যামেরায়-
#WATCH | Aerial view of the devastation site in Chamoli, #Uttarakhand from the helicopter deployed for distribution of relief material. pic.twitter.com/UIx9FTcyo0
— ANI (@ANI) February 8, 2021
উত্তরাখণ্ডের তপোবনে সুড়ঙ্গে আটকে পড়া শ্রমিকদের উদ্ধারকার্যে ব্যস্ত আইটিবিপি। সকাল থেকেই শুরু হয়েছে উদ্ধারকার্য। সুড়ঙ্গে জমে থাকা কাদামাটি জেসিবির সাহায্যে কেটে পরিষ্কার করা হচ্ছে।
#WATCH Uttarakhand: ITBP jawans clearing the tunnel in Tapovan, Joshimath.
(Video Source: Indo-Tibetan Border Police) pic.twitter.com/a0PZknhpvc
— ANI (@ANI) February 8, 2021
গতকাল রাত আটটা নাগাদ সেনাবাহিনী ও আইটিবিপির জওয়ানরা হাইড্রোপাওয়ার প্রজেক্টের কাছে সুড়ঙ্গে উদ্ধারকার্য চালাচ্ছিল। নজরদারির দায়িত্বে থাকা স্থানীয় প্রশাসনের আধিকারিকরা দেখেন, ফের ধৌলিগঙ্গা নদীতে জলপ্রবাহ বাড়ছে, পাল্লা দিয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে জলস্তরও। আরও পড়ুন: নিশ্চিহ্ন তপোবনের বাঁধ, রাত থেকেই ফের বাড়ছে ধৌলিগঙ্গার জলস্তর
রবিবার রাতভর উদ্ধারকাজ চালিয়েছে আইটিবিপি। এখনও অবধি ১৪ জনের মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। হদিশ নেই ১৭০ জনের। ১৩টি গ্রামের সঙ্গে যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। প্রকৃতির রোষে তছনছ হয়ে গিয়েছে তপোবন বাঁধ। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পিপলকোটি পাওয়ার প্রজেক্ট, ঋষিগঙ্গা বিদ্যুৎ প্রকল্প। আরও পড়ুন: দেবভূমিতে ধ্বংসলীলা! জোশীমঠে এখনও অবধি উদ্ধার ১৪ মৃতদেহ, নিখোঁজ ১৭০
প্রথম যখন নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতায় এসেছিলেন, তখন মোদী সরকারের জলসম্পদ ও নদী উন্নয়ন মন্ত্রী ছিলেন উমা ভারতী। জোশীমঠ বিপর্যয়ে এ বার বিদ্যুৎ প্রকল্পকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করালেন প্রাক্তন মন্ত্রী। টুইট করে তিনি অভিযোগ করেছেন, গঙ্গার যে অংশে এই প্রকল্প গড়ে উঠেছিল তা উপযোগী নয়।
जोशीमठ से 24 किलोमीटर पैंग गाव ज़िला चमोली उत्तराखंड के ऊपर का ग्लेशियर फिसलने से ऋषि गंगा पर बना हुआ पावर प्रोजेक्ट ज़ोर से टूटा और एक तबाही लेकर आगे बढ़ रहा है । मै गंगा मैया से प्रार्थना करती हूँ की माँ सबकी रक्षा करे तथा प्राणिमात्र की रक्षा करे ।
— Uma Bharti (@umasribharti) February 7, 2021
জোর কদমে চলছে উদ্ধারের কাজ
মৃতের পরিবারের উদ্দেশে সরকারি ক্ষতিপূরণের ঘোষণা করলেন উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী ত্রিবেন্দ্র সিং রাওয়াত। জোশীমঠ প্রলয়কাণ্ডে মৃতদের পরিবারকে ৪ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী ন্যাশনাল রিলিফ ফান্ড থেকে বিপর্যয়ে মৃতদের পরিবারের জন্য ২ লক্ষ টাকা দেওয়ার কথা জানিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী। আরও জানতে পড়ুন: জোশীমঠ প্রলয়: মৃতদের পরিবার পিছু ৪ লক্ষ ক্ষতিপূরণ ত্রিবেন্দ্রর, মোদী দেবেন ২ লক্ষ
অলকানন্দা নদীই গঙ্গায় মিলিত হওয়ায় জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কায় রয়েছে উত্তর প্রদেশ ও বিহারের মতো রাজ্য। তবে উত্তরাখণ্ড সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, আপাতত নিয়ন্ত্রণেই চলে এসেছে নদীর জলস্তর। আরও পড়ুন: নন্দপ্রয়াগের পর থেকেই বাগ মানছে অলকানন্দা, তবুও সতর্ক বিহার-উত্তর প্রদেশ
ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে পরিস্থিতি। হড়পা বানের আশঙ্কা করা হলেও নন্দাপ্রয়াগের পর থেকে অলকানন্দা নদীর জলস্তর অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে জানানো হয়েছে সরকারি সূত্রে।
Water flow in Alaknanda river has become normal past Nandprayag. Water level of the river is now 1 meter above normal but flow is decreasing. Chief Secretary, Disaster Secretary, Police officials & my all teams are monitoring the situation in disaster control room: CM TS Rawat pic.twitter.com/SYTxR9z8ZY
— ANI (@ANI) February 7, 2021
ঘটনাস্থলে পৌঁছছেন মুখ্যমন্ত্রী তিবেন্দ্র সিং রাওয়াত। তিনি রেনি গ্রাম ও আশেপাশের অঞ্চল পরিদর্শন করে তিনি বলেন, “চামোলি অবধি পৌঁছতে পৌঁছতে জলস্রোত অনেকটাই কমে গিয়েছে। দ্রুতগতিতে উদ্ধারকার্য চলছে। সরকারের তরফে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই মেডিক্যাল টিম ঘটনাস্থানে পৌঁছেছে। জোশীমঠের হাসপাতালে ৩০টি বেডও প্রস্তুত রাখা হয়েছে আহতদের চিকিৎসার জন্য। এছাড়াও শ্রীনগর, ঋষিকেশ, জলিঘাট ও দেরাদুনের হাসপাতালগুলিকেও প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
Uttarakhand CM Trivendra Singh Rawat reaches near Reni village in Tapovan area of Chamoli; takes stock of the situation. pic.twitter.com/Slw1Vn2Qx9
— ANI (@ANI) February 7, 2021
সকালেই জানা গিয়েছিল নির্মীয়মান সুড়ঙ্গে আটকে রয়েছে একাধিক শ্রমিক। জলস্রোত একটু কমতেই উদ্ধারকার্যে নেমেছে সেনাবাহিনী ও আইটিবিপি।
ITBP men on a rescue mission near Tapovan, Joshimath Uttarakhand where 16 to 17 persons reported trapped inside a tunnel after a devastating flood in #Dhauliganga Ganga, #Uttarakhand occurred. 3 teams and more than 250 ITBP personnel are deployed in the rescue mission. pic.twitter.com/QdZASY057u
— ITBP (@ITBP_official) February 7, 2021
২০১৩ সালের ১৬ জুন এবং ২০২১ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি। মাঝে ফারাক কেবল আট বছরের। কেদারনাথের স্মৃতিই উসকে দিচ্ছে জোশীমঠের বিপর্যয়। দুটি ঘটনাতেই নেমেছিল মেঘভাঙা বৃষ্টিতে, সেই বৃষ্টিতেই “তাল” উপচে পড়ে বন্যা নামে। আরও পড়ুন:জোশীমঠেও কি হতে চলেছে কেদারনাথের পুনরাবৃত্তি?
Deeply shocked and very saddened at the loss of lives in the disaster that took place in Uttarakhand. My deepest condolences to the families of the deceased. Wishing a speedy and full recovery for those injured in the calamity.
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) February 7, 2021
Deeply worried about the glacier burst near Joshimath, Uttarakhand, that caused destruction in the region. Praying for well being and safety of people. Am confident that rescue and relief operations on ground are progressing well.
— President of India (@rashtrapatibhvn) February 7, 2021
টুইটবার্তায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী লেখেন “গোটা দেশ উত্তরাখণ্ডের পাশে রয়েছে এবং সকলের সুরক্ষার জন্য প্রার্থনা করা হচ্ছে। উদ্ধারকার্যের বিষয়ে জানতে নিয়মিত আধিকারিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে।” আরও পড়ুন: জোশীমঠে বিপর্যয়: উদ্বিগ্ন প্রধানমন্ত্রী, বললেন ‘পাশে রয়েছে গোটা দেশ’
টুইটারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লেখেন, ‘উত্তরাখণ্ডের প্রাকৃতিক দুর্যোগ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী, ডিজি আইটিবিপি ও ডিজি এনডিআরএফ-এর সঙ্গে কথা হয়েছে। সকলেই যুদ্ধকালীন তৎপরতায় পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছেন। এনডিআরএফ উদ্ধারকাজে নেমে পড়েছে। দেবভূমিকে আমরা সবরকমভাবে সাহায্য করব।’ আরও পড়ুন: দেবভূমিকে সবরকমভাবে সাহায্য করবে সরকার: অমিত শাহ
জোশীমঠ পোস্টের হেড কনস্টেবল মঙ্গল সিংহ জানান, গতকাল রাত ১০ টা ৫৫ মিনিটে জোশীমঠে নন্দাদেবী হিমবাহের একটি অংশ ভেঙে পড়ার খবর আসে। ফোনে খবর পাওয়ার পরই রাত ১১ টা ১১ মিনিটে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। রাতেই গাউচার, রতুদাদল সেনার তরফে সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছে। হিমবাহ ভেঙে পড়ার পর সকালেও পাহাড় থেকে প্রবল তোড়ে জল নেমে আসতে দেখা যায়।
গতবছরের বর্ষাকালেও হড়পা বানের সতর্কতা জারি করা হয়েছিল। সেই সময় কোনও বিপর্যয় না ঘটলেও গতকাল থেকেই দেরাদুনে লাগাতার বৃষ্টি চলেছিল বলে জানা গিয়েছে। সেই কারণেও এই বিপর্যয় ঘটতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। অলকানন্দা নদীতেও ইতিমধ্যেই জলস্তর বৃদ্ধি পেয়েছে। সেই কারণে অলকানন্দা নদীর আশেপাশের গ্রামগুলিতেও বিশেষ সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
ধৌলিগঙ্গার দুই পাশের গ্রামগুলি ফাঁকা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। উদ্ধারকার্য ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে, সাহায্য করতে মাঠে নামছে সেনাবাহিনীও। এনডিআরএফ, এসডিআরএফকেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে প্রস্তুত থাকতে, প্রয়োজনে তাঁরাও উদ্ধারকার্যে অংশ নেবেন। নদীতে জলস্তর বৃদ্ধি পাওয়ায় সতর্কতা জারি করা হয়েছে দেরাদুন, হরিদ্বার অবধি। উদ্ধারকার্য পরিদর্শন করতে ঘটনাস্থলের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী টি এস রাওয়াত।
২০১৩ সালে কেদারনাথ যেভাবে বন্যায় ভেসে গিয়েছিল, ঠিক একইভাবে গতকাল রাতে চামোলি জেলায় হিমবাহ ভেঙে পড়ে। বাঁধের কাছেই প্রায় ২৫০ জন শ্রমিক ছিল। জলের তোড়ে আশেপাশের কয়েকটি বাড়ি ও স্থানীয় বাসিন্দারাও ভেসে গিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। ইতিমধ্যেই উদ্ধার কার্য শুরু হয়েছে, প্রয়োজনে সেনাবাহিনীও নামানো হতে পারে বলে প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে।
এদিকে, স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, পরিস্থিতি অত্যন্ত ভয়াবহ। গোটা গ্রাম প্লাবিত হয়ে গিয়েছে, কাউকে গ্রামে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। যাঁরা আটকে রয়েছেন, তাঁদের উদ্ধার করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। যোশীমঠে ভারত সেবাশ্রম সংঘের যে আশ্রম রয়েছে, সেখানে উপস্থিত মহারাজ বলেন, “বিপর্যয়ে কমপক্ষে ৯০০ জন নিখোঁজ হয়ে গিয়েছেন।”
জোশীমঠ: গতকাল ভয়াবহ তুষারধস নামে উত্তরাখণ্ডে (Uttarakhand)। কেদারনাথের স্মৃতি উসকে দিয়ে প্রায় একইভাবে হিমবাহের একাংশ ভেঙে পড়েছে জোশীমঠে। গতকাল চামোলি জেলার তপোবন এলাকায় রানি গ্রামে ঋষিগঙ্গা বিদ্যুৎ প্রকল্পের উপর আচমকাই হিমবাহটি ভেঙে পড়ে। প্রবল জলের তোড়ে ভেঙে যায় ধৌলিগঙ্গা (Dhauliganga) নদীর উপর বাঁধ। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছে আশেপাশের কয়েকটি বাড়ি। প্রাথমিকভাবে সরকারের তরফে প্রায় ৫০ থেকে ৭৫ জন বাসিন্দার নিখোঁজ হওয়ার কথা বললেও পরে জানানো হয়, নিখোঁজ প্রায় ২০০। যদিও অসমর্থিত সূত্রে জানা যাচ্ছে নিখোঁজের সংখ্যা কমপক্ষে ৯০০। বিপর্যয়ের দ্বিতীয় দিনেও এই ভয়াবহ ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্য একদম গ্রাউন্ড জিরো থেকে তুলে ধরছে TV9 বাংলা। চোখ রাখুন লাইভ ব্লগে (Uttarakhand Joshimath Dam News LIVE)।
জোশীমঠের বিপর্যয়ের কারণ হিসাবে উঠে আসছে নানা মত। কেউ বলছেন, বিশ্বায়নের কারণেই হিমবাহের একাংশ ভেঙে পড়েছে। আবার কারোর মতে, সরকারের অবহেলাতেই এই বিপর্যয় ঘটেছে। আরও পড়ুন: জোশীমঠে বিপর্যয়ের নেপথ্যে কার হাত? উঠে আসছে ‘নানা মুনির নানা মত’
সুড়ঙ্গে আটকে পড়া নিখোঁজদের উদ্ধার করতে মরিয়া চেষ্টা সেনার। ৩০০ জন আইটিবিপি ও ২০০-রও বেশি সেনা জওয়ান উদ্ধার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
#Uttarakhand#Update: #UttarakhandGlacialBurst
टनल में फंसे लोगों के लिए बचाव कार्य जारी। टनल के अंदर पहुंच कर रास्ता खोलने का प्रयास किया जा रहा है। pic.twitter.com/coCBZGsjUS
— ADG PI – INDIAN ARMY (@adgpi) February 8, 2021
শেষবার কথা হয়েছিল শনিবার। ফোনে কয়েক মিনিট। প্রত্যেক দিনই ছেলেদের সঙ্গে কেবলমাত্র ওইটুকুই কথা বলতে পারতেন বৃদ্ধ বাবা-মা। রাতে কথা বলার পর আর পাঁচ দিনের মতোই খাওয়া দাওয়া সেরে শুতে চলে গিয়েছিলেন। রবিবার সকালে কথা হয়নি। কিন্তু তাতে বিশেষ আমল দেননি তাঁরা। কারণ সারাদিনই ব্যস্ত থাকেন দুই ছেলে, সেটাই ভেবে নিয়েছিলেন তাঁরা। বিপর্যয়ের খবর প্রতিবেশীদের কাছ থেকে শুনেই ছুটে গিয়ে টিভি চালিয়েছিলেন। আর তারপর থেকে ফোনের পর ফোন! প্রত্যুত্তরে ‘নো নেটওয়ার্ক’ রেকর্ডিং। উত্তরাখণ্ডে কাজে গিয়ে নিখোঁজ হয়ে যাওয়া পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদলের তিন সন্তানের বৃদ্ধ দরিদ্র বাবা-মায়ের কাছে এখন গোটা পৃথিবীটাই যেন অন্ধকার। উত্তরাখণ্ডের প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে (Uttarakhand Glacier Bursts) এখনও পর্যন্ত নিখোঁজের সংখ্যা শতাধিক। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন মহিষাদলের সুদীপ গুড়িয়া, লালু জানা ও বুলা জানা।
আরও পড়ুন: দুটো পয়সার জন্য রোববারও কাজ করতেন, উত্তরাখণ্ডের অভিশপ্ত দিনে নিখোঁজ বাংলার ৩ ছেলে
বিপর্যয়ের খবর পাওয়ার পরই ঘটনাস্থানে ছুটে গিয়েছিলেন উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী তিবেন্দ্র সিং রাওয়াত। আজও ঘটনাস্থান পরিদর্শনে যান তিনি। পরে তিনি টুইট করে জানান, পুরোদমে উদ্ধারকার্য চলছে। আটকে পড়া ব্যক্তিদের উদ্ধার করতে আমরা সাধ্যমতো প্রচেষ্টা করব।
#WATCH Uttarakhand CM Trivendra Singh Rawat at Tapovan, Joshimath, reviews relief efforts
“Our relief and rescue operations are continuing in full swing and we are doing best to save lives,” he tweets pic.twitter.com/TvCtoH3EKT
— ANI (@ANI) February 8, 2021
বিপর্যয়ের কারণ খুঁজতে আজ বিশেষ বৈঠকে বসেন উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী তিবেন্দ্র সিং রাওয়াত। বৈঠক শেষে তিনি জানান, ত্রাণ ও উদ্ধারকার্যে সাহায্যের জন্য রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা তহবিল থেকে ২০ কোটি টাকা দেওয়া হবে।
Uttarkhand CM Trivendra Singh Rawat conducts review meeting on disaster relief operation following glacier burst in Chamoli; releases Rs 20 crores from State Disaster Response Fund for relief and rescue operation: CMO pic.twitter.com/kteHQRqoVL
— ANI (@ANI) February 8, 2021
সকাল থেকে দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর অবশেষে পরিষ্কার হল তপোবনের সুড়ঙ্গ। গতকাল হড়পা বানে বন্ধ হয়ে যাওয়া সুড়ঙ্গের মধ্যে আটক শ্রমিকদের খোঁজে সুড়ঙ্গে প্রবেশ করল আইটিবিপি, এনডিআরএফ, এসডিআরএফ ও সেনাবাহিনীর জওয়ানরা।
A joint team of ITBP, Army, SDRF and NDRF has entered the Tapovan tunnel in Chamoli for recce: ITBP. #Uttarakhand pic.twitter.com/svqYtsbvob
— ANI (@ANI) February 8, 2021
রবিবার সকালে জোশীমঠে বিপর্যয়ে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে চামোলি জেলার ১৩টি গ্রাম। হেলিকপ্টারের সাহায্যে সেই গ্রামগুলিতে ত্রাণ পৌঁছে দিচ্ছেন আইটিবিপির জওয়ানরা।
#WATCH | Uttarakhand: ITBP personnel provide support to the villages that have been cut off due to the flash floods in Chamoli. Five sorties carrying relief material have been sent.
Visuals from Lata Helipad. pic.twitter.com/0GI4YjQKhs
— ANI (@ANI) February 8, 2021
গতকাল হড়পা বানের পর থেকেই লাগাতার উদ্ধারকার্য চলছে। আটকে পড়া মানুষের খোঁজে দুর্গম পাহাড়ি পথ ছাড়াও বায়ুসেনা সকাল থেকেই আকাশপথেও নজরদারি চালাচ্ছে। বিপর্যয়ের পরে উপত্যকার কী হাল, তা ধরা পড়ল বায়ুসেনার ক্যামেরায়-
#WATCH | Aerial view of the devastation site in Chamoli, #Uttarakhand from the helicopter deployed for distribution of relief material. pic.twitter.com/UIx9FTcyo0
— ANI (@ANI) February 8, 2021
উত্তরাখণ্ডের তপোবনে সুড়ঙ্গে আটকে পড়া শ্রমিকদের উদ্ধারকার্যে ব্যস্ত আইটিবিপি। সকাল থেকেই শুরু হয়েছে উদ্ধারকার্য। সুড়ঙ্গে জমে থাকা কাদামাটি জেসিবির সাহায্যে কেটে পরিষ্কার করা হচ্ছে।
#WATCH Uttarakhand: ITBP jawans clearing the tunnel in Tapovan, Joshimath.
(Video Source: Indo-Tibetan Border Police) pic.twitter.com/a0PZknhpvc
— ANI (@ANI) February 8, 2021
গতকাল রাত আটটা নাগাদ সেনাবাহিনী ও আইটিবিপির জওয়ানরা হাইড্রোপাওয়ার প্রজেক্টের কাছে সুড়ঙ্গে উদ্ধারকার্য চালাচ্ছিল। নজরদারির দায়িত্বে থাকা স্থানীয় প্রশাসনের আধিকারিকরা দেখেন, ফের ধৌলিগঙ্গা নদীতে জলপ্রবাহ বাড়ছে, পাল্লা দিয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে জলস্তরও। আরও পড়ুন: নিশ্চিহ্ন তপোবনের বাঁধ, রাত থেকেই ফের বাড়ছে ধৌলিগঙ্গার জলস্তর
রবিবার রাতভর উদ্ধারকাজ চালিয়েছে আইটিবিপি। এখনও অবধি ১৪ জনের মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। হদিশ নেই ১৭০ জনের। ১৩টি গ্রামের সঙ্গে যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। প্রকৃতির রোষে তছনছ হয়ে গিয়েছে তপোবন বাঁধ। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পিপলকোটি পাওয়ার প্রজেক্ট, ঋষিগঙ্গা বিদ্যুৎ প্রকল্প। আরও পড়ুন: দেবভূমিতে ধ্বংসলীলা! জোশীমঠে এখনও অবধি উদ্ধার ১৪ মৃতদেহ, নিখোঁজ ১৭০
প্রথম যখন নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতায় এসেছিলেন, তখন মোদী সরকারের জলসম্পদ ও নদী উন্নয়ন মন্ত্রী ছিলেন উমা ভারতী। জোশীমঠ বিপর্যয়ে এ বার বিদ্যুৎ প্রকল্পকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করালেন প্রাক্তন মন্ত্রী। টুইট করে তিনি অভিযোগ করেছেন, গঙ্গার যে অংশে এই প্রকল্প গড়ে উঠেছিল তা উপযোগী নয়।
जोशीमठ से 24 किलोमीटर पैंग गाव ज़िला चमोली उत्तराखंड के ऊपर का ग्लेशियर फिसलने से ऋषि गंगा पर बना हुआ पावर प्रोजेक्ट ज़ोर से टूटा और एक तबाही लेकर आगे बढ़ रहा है । मै गंगा मैया से प्रार्थना करती हूँ की माँ सबकी रक्षा करे तथा प्राणिमात्र की रक्षा करे ।
— Uma Bharti (@umasribharti) February 7, 2021
জোর কদমে চলছে উদ্ধারের কাজ
মৃতের পরিবারের উদ্দেশে সরকারি ক্ষতিপূরণের ঘোষণা করলেন উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী ত্রিবেন্দ্র সিং রাওয়াত। জোশীমঠ প্রলয়কাণ্ডে মৃতদের পরিবারকে ৪ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী ন্যাশনাল রিলিফ ফান্ড থেকে বিপর্যয়ে মৃতদের পরিবারের জন্য ২ লক্ষ টাকা দেওয়ার কথা জানিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী। আরও জানতে পড়ুন: জোশীমঠ প্রলয়: মৃতদের পরিবার পিছু ৪ লক্ষ ক্ষতিপূরণ ত্রিবেন্দ্রর, মোদী দেবেন ২ লক্ষ
অলকানন্দা নদীই গঙ্গায় মিলিত হওয়ায় জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কায় রয়েছে উত্তর প্রদেশ ও বিহারের মতো রাজ্য। তবে উত্তরাখণ্ড সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, আপাতত নিয়ন্ত্রণেই চলে এসেছে নদীর জলস্তর। আরও পড়ুন: নন্দপ্রয়াগের পর থেকেই বাগ মানছে অলকানন্দা, তবুও সতর্ক বিহার-উত্তর প্রদেশ
ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে পরিস্থিতি। হড়পা বানের আশঙ্কা করা হলেও নন্দাপ্রয়াগের পর থেকে অলকানন্দা নদীর জলস্তর অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে জানানো হয়েছে সরকারি সূত্রে।
Water flow in Alaknanda river has become normal past Nandprayag. Water level of the river is now 1 meter above normal but flow is decreasing. Chief Secretary, Disaster Secretary, Police officials & my all teams are monitoring the situation in disaster control room: CM TS Rawat pic.twitter.com/SYTxR9z8ZY
— ANI (@ANI) February 7, 2021
ঘটনাস্থলে পৌঁছছেন মুখ্যমন্ত্রী তিবেন্দ্র সিং রাওয়াত। তিনি রেনি গ্রাম ও আশেপাশের অঞ্চল পরিদর্শন করে তিনি বলেন, “চামোলি অবধি পৌঁছতে পৌঁছতে জলস্রোত অনেকটাই কমে গিয়েছে। দ্রুতগতিতে উদ্ধারকার্য চলছে। সরকারের তরফে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই মেডিক্যাল টিম ঘটনাস্থানে পৌঁছেছে। জোশীমঠের হাসপাতালে ৩০টি বেডও প্রস্তুত রাখা হয়েছে আহতদের চিকিৎসার জন্য। এছাড়াও শ্রীনগর, ঋষিকেশ, জলিঘাট ও দেরাদুনের হাসপাতালগুলিকেও প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
Uttarakhand CM Trivendra Singh Rawat reaches near Reni village in Tapovan area of Chamoli; takes stock of the situation. pic.twitter.com/Slw1Vn2Qx9
— ANI (@ANI) February 7, 2021
সকালেই জানা গিয়েছিল নির্মীয়মান সুড়ঙ্গে আটকে রয়েছে একাধিক শ্রমিক। জলস্রোত একটু কমতেই উদ্ধারকার্যে নেমেছে সেনাবাহিনী ও আইটিবিপি।
ITBP men on a rescue mission near Tapovan, Joshimath Uttarakhand where 16 to 17 persons reported trapped inside a tunnel after a devastating flood in #Dhauliganga Ganga, #Uttarakhand occurred. 3 teams and more than 250 ITBP personnel are deployed in the rescue mission. pic.twitter.com/QdZASY057u
— ITBP (@ITBP_official) February 7, 2021
২০১৩ সালের ১৬ জুন এবং ২০২১ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি। মাঝে ফারাক কেবল আট বছরের। কেদারনাথের স্মৃতিই উসকে দিচ্ছে জোশীমঠের বিপর্যয়। দুটি ঘটনাতেই নেমেছিল মেঘভাঙা বৃষ্টিতে, সেই বৃষ্টিতেই “তাল” উপচে পড়ে বন্যা নামে। আরও পড়ুন:জোশীমঠেও কি হতে চলেছে কেদারনাথের পুনরাবৃত্তি?
Deeply shocked and very saddened at the loss of lives in the disaster that took place in Uttarakhand. My deepest condolences to the families of the deceased. Wishing a speedy and full recovery for those injured in the calamity.
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) February 7, 2021
Deeply worried about the glacier burst near Joshimath, Uttarakhand, that caused destruction in the region. Praying for well being and safety of people. Am confident that rescue and relief operations on ground are progressing well.
— President of India (@rashtrapatibhvn) February 7, 2021
টুইটবার্তায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী লেখেন “গোটা দেশ উত্তরাখণ্ডের পাশে রয়েছে এবং সকলের সুরক্ষার জন্য প্রার্থনা করা হচ্ছে। উদ্ধারকার্যের বিষয়ে জানতে নিয়মিত আধিকারিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে।” আরও পড়ুন: জোশীমঠে বিপর্যয়: উদ্বিগ্ন প্রধানমন্ত্রী, বললেন ‘পাশে রয়েছে গোটা দেশ’
টুইটারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লেখেন, ‘উত্তরাখণ্ডের প্রাকৃতিক দুর্যোগ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী, ডিজি আইটিবিপি ও ডিজি এনডিআরএফ-এর সঙ্গে কথা হয়েছে। সকলেই যুদ্ধকালীন তৎপরতায় পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছেন। এনডিআরএফ উদ্ধারকাজে নেমে পড়েছে। দেবভূমিকে আমরা সবরকমভাবে সাহায্য করব।’ আরও পড়ুন: দেবভূমিকে সবরকমভাবে সাহায্য করবে সরকার: অমিত শাহ
জোশীমঠ পোস্টের হেড কনস্টেবল মঙ্গল সিংহ জানান, গতকাল রাত ১০ টা ৫৫ মিনিটে জোশীমঠে নন্দাদেবী হিমবাহের একটি অংশ ভেঙে পড়ার খবর আসে। ফোনে খবর পাওয়ার পরই রাত ১১ টা ১১ মিনিটে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। রাতেই গাউচার, রতুদাদল সেনার তরফে সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছে। হিমবাহ ভেঙে পড়ার পর সকালেও পাহাড় থেকে প্রবল তোড়ে জল নেমে আসতে দেখা যায়।
গতবছরের বর্ষাকালেও হড়পা বানের সতর্কতা জারি করা হয়েছিল। সেই সময় কোনও বিপর্যয় না ঘটলেও গতকাল থেকেই দেরাদুনে লাগাতার বৃষ্টি চলেছিল বলে জানা গিয়েছে। সেই কারণেও এই বিপর্যয় ঘটতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। অলকানন্দা নদীতেও ইতিমধ্যেই জলস্তর বৃদ্ধি পেয়েছে। সেই কারণে অলকানন্দা নদীর আশেপাশের গ্রামগুলিতেও বিশেষ সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
ধৌলিগঙ্গার দুই পাশের গ্রামগুলি ফাঁকা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। উদ্ধারকার্য ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে, সাহায্য করতে মাঠে নামছে সেনাবাহিনীও। এনডিআরএফ, এসডিআরএফকেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে প্রস্তুত থাকতে, প্রয়োজনে তাঁরাও উদ্ধারকার্যে অংশ নেবেন। নদীতে জলস্তর বৃদ্ধি পাওয়ায় সতর্কতা জারি করা হয়েছে দেরাদুন, হরিদ্বার অবধি। উদ্ধারকার্য পরিদর্শন করতে ঘটনাস্থলের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী টি এস রাওয়াত।
২০১৩ সালে কেদারনাথ যেভাবে বন্যায় ভেসে গিয়েছিল, ঠিক একইভাবে গতকাল রাতে চামোলি জেলায় হিমবাহ ভেঙে পড়ে। বাঁধের কাছেই প্রায় ২৫০ জন শ্রমিক ছিল। জলের তোড়ে আশেপাশের কয়েকটি বাড়ি ও স্থানীয় বাসিন্দারাও ভেসে গিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। ইতিমধ্যেই উদ্ধার কার্য শুরু হয়েছে, প্রয়োজনে সেনাবাহিনীও নামানো হতে পারে বলে প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে।
এদিকে, স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, পরিস্থিতি অত্যন্ত ভয়াবহ। গোটা গ্রাম প্লাবিত হয়ে গিয়েছে, কাউকে গ্রামে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। যাঁরা আটকে রয়েছেন, তাঁদের উদ্ধার করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। যোশীমঠে ভারত সেবাশ্রম সংঘের যে আশ্রম রয়েছে, সেখানে উপস্থিত মহারাজ বলেন, “বিপর্যয়ে কমপক্ষে ৯০০ জন নিখোঁজ হয়ে গিয়েছেন।”