জোশীমঠেও কি হতে চলেছে কেদারনাথের পুনরাবৃত্তি?

২০১৩ সালের পর ফের ২০২১। একইধরনের মেঘ ভাঙা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত উত্তরাখণ্ড।

জোশীমঠেও কি হতে চলেছে কেদারনাথের পুনরাবৃত্তি?
অলঙ্করণ: অভীক দেবনাথ।
Follow Us:
| Updated on: Feb 07, 2021 | 6:12 PM

জোশীমঠ: ২০১৩ সালের ১৬ জুন এবং ২০২১ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি। মাঝে ফারাক কেবল আট বছরের। কেদারনাথের স্মৃতিই উসকে দিচ্ছে জোশীমঠের বিপর্যয়। আশ্চর্যজনকভাবে মিলও রয়েছে দুটি ঘটনার মধ্যে।

২০১৩ সালের জুন মাসে পর্যটকে উপচে পড়ছিল কেদারনাথ মন্দির। আচমকাই মেঘ ভাঙা বৃষ্টিতে উপচে পড়ে চোরাবাড়ি লেক। লাগাতার বৃষ্টি ও জলোচ্ছ্বাসে একটি বিশাল পাথর ভেঙে পড়ে ঠিক মন্দিরের পিছনেই আটকে যাওয়ায় কোনওমতে রক্ষা পায় মন্দির, কিন্তু চোখের নিমেশে জলের তোড়ে ভেসে যায় আশেপাশের সমস্ত হোটেল, বাড়িঘর। সেই বন্যায় যাঁরা কোনওমতে রক্ষা পেয়েছিলেন, তাঁদের কান্নাভেজা আর্ত আবেদন আজও স্থানীয় বাসিন্দারা ভুলতে পারেননি।

একইভাবে শনিবার রাত ১১টা নাগাদ জোশীমঠ থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে তপোবন ও রাইনি গ্রামের কাছে মেঘ ভাঙা বৃষ্টি শুরু হয়। একইসঙ্গে নন্দাদেবী হিমবাহের একটি অংশও ভেঙে পড়ে স্থানীয় “তাল”-এ (জলাশয়কে তাল বলা হয়)। তাল থেকে উপচে পড়া জলেই এরপরই ঋষিগঙ্গা নদীতে বান আসে, দ্রুতগতিতে পাথর ভেঙে কাদামাটি সহ নদীর জল নামতে শুরু করে। প্রবল জলোচ্ছাসে ক্ষতিগ্রস্ত হয় লতা ও রেনি গ্রাম। অসমর্থিত সূত্রে খবর, সেখানে প্রায় ১০০ জন বাসিন্দার মৃত্যু হয়েছে।

অন্যদিকে, ঋষিগঙ্গা বিদ্যুৎ প্রকল্পের একাংশও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভিডিয়োয় বিদ্যুৎ প্রকল্পের একটি টাওয়ারও ভেসে যেতে দেখা যায়। জানা গিয়েছে, সেইসময় প্রায় ১৫০ জন শ্রমিক কাজ করছিলেন, তাঁরাও নিখোঁজ। ইতিমধ্যেই উদ্ধারকার্য শুরু হয়েছে, নেমেছে সেনা ও বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। এখনও অবধি মোট তিনজন শ্রমিকের দেহ উদ্ধার করা গিয়েছে বলে জানানো হয়েছে।

কেদারনাথের বন্যার সময়ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল জোশীমঠ। এবার কেদারনাথে কোনও ক্ষয়ক্ষতি না হলেও সরাসরি প্রভাব পড়েছে জোশীমঠে। নদীর আশেপাশের গ্রামের অধিকাংশ বাড়িরই ভেঙে পড়ায় বিপুল ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে বলেই আশঙ্কা সরকারি আধিকারিকদের।

পাহাড়ি অঞ্চল এমনিতেই যেকোনও সময়ে ধস নামতে পারে বলে সতর্ক থাকতে বলা হয়। সেখানেই নদীপথ সরু করে আশেপাশের অঞ্চলে নির্মাণকার্য কিংবা নদী পথে বাধা সৃষ্টি করার ফলে বন্যার সময়ে চরম বিপদের মুখে পড়েন স্থানীয় বাসিন্দারা, এমনটাই মত বিশেষজ্ঞদের। তাঁদের মতে, কেদারনাথেও যেভাবে মেঘভাঙা বৃষ্টিতে জলাশয় উপচে পড়ে বন্যা দেখা দিয়েছিল, প্রায় একইভাবে জোশীমঠেও হিমবাহের একাংশ ভেঙে পড়ে বিপদ ঘটেছে।

আরও পড়ুন: দেবভূমিকে সবরকমভাবে সাহায্য করবে সরকার: অমিত শাহ