নয়া দিল্লি: মোদী পদবি মানহানি মামলায় আপাতত স্বস্তি পেলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi)। সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) তরফে সুরাট আদালতের সাজার নির্দেশে স্থগিতাদেশ দেওয়া হল। ২০১৯ সালে মোদী পদবি (Modi Surname Case) নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করে মানহানির মামলায় জড়িয়ে পড়েছিলেন রাহুল গান্ধী। চলতি বছরই গুজরাটের সুরাট আদালত ওই মামলায় রাহুল গান্ধীকে দোষী সাব্যস্ত করে এবং দুই বছরের কারাদণ্ডের সাজা দেয়। সেই সাজায় স্থগিতাদেশ চেয়েই একের পর এক আদালতের দ্বারস্থ হচ্ছিলেন রাহুল। তাঁর শেষ ভরসা ছিল সুপ্রিম কোর্ট। সম্পূর্ণ না হলেও, আপাতত স্বস্তি পেলেন রাহুল গান্ধী।
এ দিন সুপ্রিম কোর্টের তরফে মোদী পদবি মানহানি মামলায় রাহুল গান্ধীর সাজার শুনানিতে বলা হয়, “ওই মামলায় রাহুল গান্ধীকে সর্বোচ্চ সাজা দেওয়ার কোনও কারণ ছিল না”। বিচারপতি বিআর গাভাই, বিচারপতি পিএস নরসিমহা ও বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চে এই মামলার শুনানি চলছিল। রাহুল গান্ধীর তরফে উপস্থিত আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি শীর্ষ আদালতে জানান, মোদী পদবি নিয়ে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী যে মন্তব্য করেছিলেন, তা সমাজবিরোধী অপরাধ নয়। অভিষেক মনু সিংভি বলেন, “এটা কোনও ধর্ষণ বা খুনের অপরাধ নয়। তবে সর্বোচ্চ সাজা কেন দেওয়া হল?”
তিন বিচারপতির বেঞ্চের তরফে বলা হয়, “এই সাজায় স্থগিতাদেশের জন্য আরও ব্যাখ্যা প্রয়োজন”। এর জবাবে রাহুল গান্ধীর আইনজীবী বলেন, “এই প্রথমবার ৩০ কোটি জনগণকে এক শ্রেণিভুক্ত করা হল, যদিও তারা সকলে ভিন্ন বৈশিষ্ট্যের। মোদীর অধীনে শ্রেণি, বর্ণ ও গোষ্ঠী সম্পূর্ণ আলাদা।”
মামলাকারী পূর্ণেশ মোদীর স্বপক্ষে হাজির আইনজীবী মহেশ জেঠমালানি বলেন, “মোদী পদবি নিয়ে রাহুল গান্ধী যে মন্তব্য করেছিলেন, তা প্রধানমন্ত্রী মোদী সহ সমস্ত ব্যক্তি যাদের পদবি মোদী, তাদের মানহানি করার উদ্দেশ্য নিয়েই বলেছিলেন। শুধুমাত্র বিদ্বেষ থেকে গোটা একটা শ্রেণিকে অপমান করেছেন।”
এর জবাবে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী সুপ্রিম কোর্টে জানান, মামলাকারী পূর্ণেশ মোদী আদতে মোদী পদবির নন। তিনি মোধ বানিকা সমাজের অংশ।
২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনের আগে কর্নাটকের কোলারে একটি নির্বাচনী প্রচারে রাহুল গান্ধী বলেছিলেন, “সমস্ত চোরেদের পদবিই মোদী হয় কেন? নীরব মোদীকেই দেখুন বা ললিত মোদী কিংবা নরেন্দ্র মোদী…”। রাহুলের এই মন্তব্যের পরই গুজরাটের বিজেপি বিধায়ক পূর্ণেশ মোদী রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে অপরাধমূলক মানহানি মামলা দায়ের করেন।
চলতি বছরের ২৩ মার্চ সুরাট কোর্টের তরফে রাহুল গান্ধীকে ওই মামলায় দোষী সাব্যস্ত করে এবং দুই বছরের সাজা দেওয়া হয়। এর পরের দিনই জনপ্রতিনিধি আইনের অধীনে রাহুল গান্ধীর সাংসদ পদ খারিজ করে দেওয়া হয়। সুরাট কোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে গুজরাট হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন রাহুল গান্ধী। গত ৭ জুলাই গুজরাট হাইকোর্ট রাহুল গান্ধীর সাজার উপরে স্থগিতাদেশের আর্জি খারিজ করে দেয়। এরপর ওই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে গত ১৫ জুলাই শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হন কংগ্রেস নেতা।