Bihar Storm: প্রাণ গেল ৩৩ জনের! বজ্রপাত-শিলাবৃষ্টিতে বিপর্যস্ত বিহার, কী বললেন নীতীশ

Bihar storms, lightning: বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিহারের ১৬টি জেলা জুড়ে প্রবল ঝড়, শিলাবৃষ্টি এবং মুহুর্মুহু বজ্রপাতের ফলে মোট ৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার, মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার নিহতদের পরিবারের জন্য ৪ লক্ষ টাকা করে নগদ সহায়তা প্যাকেজ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন।

Bihar Storm: প্রাণ গেল ৩৩ জনের! বজ্রপাত-শিলাবৃষ্টিতে বিপর্যস্ত বিহার, কী বললেন নীতীশ
গাছ পড়ে বন্ধ বহু রাস্তা
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: May 20, 2022 | 10:36 PM

পাটনা: বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিহারের ১৬টি জেলা জুড়ে প্রবল ঝড়, শিলাবৃষ্টি এবং মুহুর্মুহু বজ্রপাতের ফলে মোট ৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। সর্বাধিক মৃত্যু হয়েছে ভাগলপুর জেলায়, ৭ জন। এছাড়া মুজফ্ফরপুরে ৬ জন এবং সরন ও লক্ষীসরাই জেলায় ৩ জন করে নিহত হয়েছেন। শুক্রবার, মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার এই ঘটনায় নিহতদের পরিবারের জন্য ৪ লক্ষ টাকা করে নগদ সহায়তা প্যাকেজ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন। মুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, ফসল এবং ঘরবাড়ির ক্ষতি যাচাই করেই পরিবারগুলিকে সাহায্য করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

১৯ মে বিকেলে বিহারের বেশ কয়েকটি জেলার উপর দিয়ে অল্প সময়ের জন্য প্রবল ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যায়। সঙ্গে ছিল বজ্র-বিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি। কোথাও কোথাও শিলাবৃষ্টিও হয়েছে। গাছ উপড়ে এবং বৈদ্যুতিক খুঁটি পড়ে গিয়ে বহু জায়গায় রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। বৃহস্পতিবার রাত থেকে বেশ কয়েক ঘন্টার জন্য বিহারের বিভিন্ন এলাকায় যানবাহন চলাচল এবং বিদ্যুৎ সংযোগে বিঘ্ন ঘটে।

পাটনা আবহাওয়া কেন্দ্র অনুসারে, গুনাহাতে ১৫.২ মিমি এবং আরারিয়ায় ৫ মিমি বৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া, সমস্তিপুরে ২২ মিমি, ভাগলপুরে ১৮.২ মিমি বৃষ্টি হয়। বিকালের ঝড়-বৃষ্টির আগে অবশ্য গ্রীষঅমের প্রবল দাবদাহে পুড়ছিল বিহার। ঔরঙ্গাবাদে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪৪.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস, নওয়াদাতে ৪২.৮ ডিগ্রি, শেখপুরায় ৪৩.৬ ডিগ্রি, নালন্দায় ৪১.৫ ডিগ্রি, গয়ায় ৪০ ডিগ্রি এবং পাটনাতে ৪০.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

এদিকে, শুক্রবার সকাল থেকেই ঝড়-বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত এলাকাগুলির খবরাখবর নেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। নিহতদের পরিবারের জন্য ৪ লক্ষ টাকা করে এক্স-গ্রাশিয়া প্রদানের ঘোষণার পাশাপাশি প্রাণহানির ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘প্রাকৃতিক দুর্যোগের এই সময়ে আমি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির পাশে আছি’। একইসঙ্গে তিনি প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের শিলাবৃষ্টিতে ঘরবাড়ি এবং ফসলের ক্ষতি সম্পর্কে দ্রুত মূল্যায়ন করার নির্দেশ দিয়েছেন। বিপর্যয় মোকাবিলা বিভাগ ঘরবাড়ির ক্ষতির মূল্যায়ন করবে, আর কৃষি বিভাগ ফসলের ক্ষতির মূল্যায়ন করবে।

ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলিকে প্রয়োজনীয় আর্থিক সহায়তা দেওয়ার কাজও দ্রুত করার নির্দেশ দিয়েছেন নীতীশ। গাছ ও বিদ্যুতের খুঁটি পড়ে যাওয়ার কারণে যে জায়গাগুলিতে যানবাহন চলাচল বিঘ্নিত হয়েছিল, সেইসব এলাকায় পরিবহণ ব্যবস্থা দ্রুত চালু করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে বলা হয়েছে কর্মকর্তাদের।

তবে, বিহারে ঝড়-বৃষ্টির দুর্যোগ এখনই কাটার সম্ভাবনা নেই। পাটনার আবহাওয়া দফতরের আধিকারিক কামিনী কুমারী বলেছেন, ‘রাজ্যে আগামী ২৩ মে পর্যন্ত বৃষ্টি এবং বজ্রবিদ্যুৎ-সহ ঝড় চলবে’। শুক্রবারও পশ্চিম চম্পারন, পূর্ব চম্পারন, গোপালগঞ্জ, শেওহর, সীতামারহি, মুজফ্ফরপুর, দ্বারভাঙ্গা, মধুবনি, সহর্স, মাধেপুরা, সুপল, আরারিয়া, কিষাণগঞ্জ, পূর্ণিয়া এবং কাটিহার জেলায় বজ্রপাত এবং বজ্রগর্ভ মেঘ-সহ ঝড়-বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দফতর।

মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার, রাজ্যবাসীর কাছে এই খারাপ আবহাওয়ার সময় সম্পূর্ণ সতর্কতা বজায় রাখার আহ্বান করেছেন। সেই সঙ্গে, বিপর্যয় মোকাবিলা বিভাগ, সময়ে সময়ে যে পরামর্শগুলি জারি করছে, সেগুলি জনগণকে কঠোরভাবে অনুসরণ করার কথা বলেছেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘প্রাণ বাঁচাতে খারাপ আবহাওয়ার সময় বাড়ির ভিতরে থাকুন’।

প্রসঙ্গত, বিগত কয়েক বছরে বিহারে বজ্রপাত এবং বৃষ্টির জেরে মৃত্যুর সংখ্যা একলাফে অনেকটা বেড়ে গিয়েছে। শুধু বজ্রপাতেই ২০২০ সালের এপ্রিল মাস থেকে ২০২১ সালের মার্চ মাসের মধ্যে বিহারে ৪০১ জনের মৃত্যু হয়েছিল। এর আগের বছর এই সংখ্যাটা ছিল ২৩৮।