পটনা: স্কুলের গণ্ডি এখনও পেরোয়নি। এর মধ্যেই ধূমপান করা শুরু করেছিল ১৫ বছরের বজরঙ্গী কুমার। প্রকাশ্যেই বন্ধুদের সঙ্গে ধূমপান (Smoke) করছিল সে। সেই ‘অপরাধে’ প্রাণ দিতে হল বজরঙ্গীকে। ধূমপান করায় স্কুলের চেয়ারম্যান ও শিক্ষকেরা মিলে বজরঙ্গীকে বেধড়ক মারধর করে এবং তার জেরেই বজরঙ্গীর মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ। মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে বিহারের (Bihar) পূর্ব চম্পারণ জেলায়। যদিও বজরঙ্গীকে মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন স্কুলের অভিযুক্ত চেয়ারম্যান।
পুলিশ জানায়, মৃত কিশোর বজরঙ্গী কুমার (১৫) পূর্ব চম্পারণ জেলার মধুবন এলাকার বাসিন্দা। ওই এলাকারই একটি বেসরকারি স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র ছিল বজরঙ্গী। গত শনিবার ধূমপান করতে গিয়ে স্কুলের চেয়ারম্যান ও এক শিক্ষকের হাতে ধরা পড়ে যায় বজরঙ্গী। তারপর স্কুল শিক্ষকদের বেধড়ক মারধরেই বজরঙ্গীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ। কিশোরের মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। বজরঙ্গীর দেহটি ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে এবং স্কুলটি সিল করে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মায়ের মোবাইল ফোন দোকানে সারাতে নিয়ে যাওয়ার জন্য শনিবার সকালে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল বজরঙ্গী। তারপর বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে হারদিয়া সেতুর নীচে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতে যায় বজরঙ্গী। সেখানেই বন্ধুদের সঙ্গে দাঁড়িয়ে সে ধূমপান করছিল। ঠিক তখনই ওই এলাকা দিয়ে যেতে গিয়ে ঘটনাটি নজরে পড়ে বজরঙ্গীর স্কুলের চেয়ারম্যান ও এক শিক্ষকের। স্কুল ছাত্রের ধূমপান করার বিষয়টি মেনে নিতে পারেননি তাঁরা। সেখান থেকেই তাঁরা সোজা বজরঙ্গীকে স্কুলে টেনে নিয়ে যান। তার বাবাকেও স্কুলে ডেকে পাঠান তাঁরা। তারপর ওই চেয়ারম্যান ও অন্য শিক্ষকেরা মিলে বজরঙ্গীকে বেধড়ক মারধর করেন এবং তার জেরে সে অসুস্থ হয়ে পড়ে বলে অভিযোগ বজরঙ্গীর মা ও দিদির।
বজরঙ্গীর মা উসমিলাদেবীর অভিযোগ, স্কুলের চেয়ারম্যান ও শিক্ষকেরা মিলে বেল্ট দিয়ে বজরঙ্গীকে মারধর করে। তার গায়ে বেল্টের দাগও রয়েছে। বেধড়ক মারধরে অসুস্থ হয়ে পড়ে বজরঙ্গী। তখন তাকে মধুবনের এক বেসরকারি নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় সেখান থেকে বজরঙ্গীকে মুজফফরপুর হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানে চিকিৎসা চলাকালীনই মৃত্যু হয় বজরঙ্গীর। তার পরিবারের আরও অভিযোগ, বজরঙ্গীর ঘাড় ও হাতে ক্ষতচিহ্ন রয়েছে। তার গোপনাঙ্গ থেকে রক্তক্ষরণও শুরু হয়েছিল।
বজরঙ্গীকে মারধরের অভিযোগ অবশ্য অস্বীকার করেছেন স্কুলের অভিযুক্ত চেয়ারম্যান। তাঁর দাবি, ধূমপান করার সময় ধরা পড়ে যাওয়ায় আতঙ্কে বিষ পান করে বজরঙ্গী। তার জেরেই বজরঙ্গীর মৃত্যু হয়। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। তদন্তের স্বার্থেই আপাতত স্কুলটি সিল করে দেওয়া হয়েছে এবং অভিযুক্ত চেয়ারম্যান সহ শিক্ষকদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে পুলিশ জানিয়েছে।