তিরুবনন্তপুরম : তথ্য প্রমাণের অভাবে বেকসুর খালাস পেলেন কেরলের বিশপ ফ্র্যাঙ্কো মুলাক্কাল। তাঁর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগের মামলা চলছিল। কেরালার কোট্টায়ামের অতিরিক্ত জেলা দায়রা আদালত বেকসুর খালাস করে বিশপকে। বিশপ ফ্র্যাঙ্কো মুলাক্কালের বিরুদ্ধে এক নানকে দুই বছর ধরে একাধিকবার ধর্ষণ করেছেন তিনি। এই ঘটনা ঘিরে গোটা কেরালায় বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ হয়েছিল। আজ তাকেই বেকসুর খালাস দেওয়া হয়।
ফ্র্যাঙ্কো মুলাক্কাল হলেন ভারতের প্রথম ক্যাথলিক বিশপ যাঁর বিরুদ্ধে একজন নানের অভিযোগ মামলা চলেছে। ১০০ দিনের বেশি সময় ধরে এই বিচার চলেছে। আবশেষে আজ একটি এক লাইনের রায়ে আদালত জানিয়েছে, তিনি এই অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হননি। তাঁকে কোর্ট থেকে হাসিমুখে বের হতে দেখা গিয়েছে। এই গোটা ঘটনার সূত্রপাত ২০১৪ সালে। ২০১৮ সালে জলন্ধর ডায়োসিসের অধীনে মিশনারিস অফ জেসাস এর এক সন্ন্যাসিনী বিশপ ফ্রাঙ্কো মুলাক্কালের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। তিনি অভিযোগ করেন, বিশপ ফ্রাঙ্কো মিশনারিস অফ জেসাসের প্রধান থাকাকালীন তিনি ২০১৪ সাল থেকে ২০১৬ সাল অবধি ক্রমাগত তাঁকে ধর্ষণ করেছেন। যদিও বিশফ ফ্রাঙ্কো সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। এই অভিযোগের পরে সন্ন্যাসিনী চার্চ, পুলিশ এবং কেরালা সরকারের কাছে ন্যায়বিচার চেয়ে প্রতিবাদ শুরু করেন নান। হাইকোর্টের বাইরে পাঁচজন সন্ন্যাসিনী বিক্ষোভ দেখানোর কয়েক মাস পর পুলিশ এই ঘটনার তদন্ত শুরু করে। এই ঘটনায় ভ্যাটিকানের হস্তক্ষেপের আবেদন জানিয়ে ভ্যাটিকানে চিঠি লিখেছিলেন নান। তবে এই গোটা ঘটনায় চার্চের মধ্য়ে সমালোচনার মধ্যে পড়তে হয় নানদের। তাঁদের উদ্দেশ্যে হুমকি ও অভিযোগও আসে।
পরে এই ঘটনার তদন্তের জন্য বিশেষ তদন্তকারী দল (SIT) গঠন করা হয়। নানের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে বিশেষ তদন্তকারী দল। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বিশপকে গ্রেফতার করা হয় এবং মামলা রুজু হয়। তিনদিন জিজ্ঞাসাবাদের পর তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ২০১৯ সালের নভেম্বরে মামলার শুনানি শুরু হয়। তারপর আজ শুনানিতে তাঁকে বেকসুর খালাস করা হয়। কোট্টায়াম পুলিশের প্রধান এস হরি শঙ্কর আজকে আদালতের রায়ে স্তম্ভিত হয়েছেন। সুপ্রিম কোর্টের কাছে বিশপের বিরুদ্ধে রুজু হওয়া সমস্ত ধর্ষণের অভিযোগ খারিজ করার জন্য আবেদন জানিয়েছিলেন বিশপ। কিন্তু ২০২০ সালে সুপ্রিম কোর্ট বিশপের সেই অনুরোধ খারিজ করে দেয়। ফ্র্যাঙ্কো মুলাক্কাল সুপ্রিম কোর্টে জানিয়েছিলেন যে তাঁকে মিথ্যে মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। যে সন্ন্যাসিনী তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছিলেন তাঁর আর্থিক লেনদেন নিয়ে তিনি প্রশ্ন তুলেছিলেন। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট কোনও ভুল না পাওয়ায় রিভিউ পিটিশন খারিজ করে দিয়েছিল।
আরও পড়ুন : Mahua Moitra on BJP: ‘বিজেপিকে হারানো সময়ের চাহিদা’, গোয়া নির্বাচনের আগে বার্তা মহুয়ার