নয়া দিল্লি: ৭ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়েছে সংসদের শীতকালীন অধিবেশন (Winter Session of Parliament)। প্রথম দিনে থেকেই একাধিক ইস্যু নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন বিরোধীরা। মূল্যবৃদ্ধি থেকে শুরু করে একাধিক ইস্যুতে বারবার উত্তপ্ত হয়েছে সংসদের দুই কক্ষ। একাধিকবার মুলতুবিও হয়েছে অধিবেশন। এবার বাংলায় দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে লোকসভায় সরব হলেন হুগলির সাংসদ তথা বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক লকেট চট্টোপাধ্যায় (Locket Chatterjee)। তিনি সংসেদ দাঁড়িয়ে পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল সরকারের একাধিক দুর্নীতির অভিযোগের কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, গরিবদের জন্য রাজ্যে কিছু করা হয়নি।
তিনি বলেছেন, ‘বাংলায় নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় সরকারের একাধিক যোজনা ও প্রকল্প গিয়েছে। কিন্তু বাংলায় গিয়ে তার পরিবর্তন হয়ে যায়।’ তিনি তাঁর বক্তব্য ব্যাখ্যা করতে গিয়ে আরও বলেন, ‘কেন্দ্রের যা স্বচ্ছ ভারত অভিযান তা বাংলায় নির্মল বাংলা হয়ে যায়। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা হয়ে যায় বাংলা আবাস যোজনা।’ তিনি আরও জানান, ‘আপনারা শুনে থাকবেন প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় বড় রকমের দুর্নীতি হচ্ছে বাংলায়। আমরা চাইছি, পশ্চিমবঙ্গে এই মুহূর্তে যে দুর্নীতি হচ্ছে তার তদন্ত হওয়া উচিত এবং বিচার হওয়া উচিত। যে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা রয়েছে তা সকলের ঘরে ঘরে পৌঁছে যাওয়া উচিত। এক্ষেত্রে কোনও রাজনীতি কাম্য নয়।’ প্রসঙ্গত, সাম্প্রতিককালে কেন্দ্রের প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার বাড়ি নিয়ে পঞ্চায়েত স্তরে শাসক দলের একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ প্রকাশ্যে এসেছে। মালদা, উলুবেড়িয়া সহ একাধিক জায়গায় গ্রামবাসীদের পক্ষ থেকে অভিযোগ উঠেছে, প্রকৃত দরিদ্র যাঁদের আসলে এই যোজনার অধীনে বাড়ি পাওয়ার কথা তাঁরা তা পাচ্ছেন না। পরিবর্তে বিত্তবানদের নাম দেখা যাচ্ছে আবাস যোজনার তালিকায়।
এদিকে দিল্লিতে এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েও তিনি এই ইস্যু নিয়ে শাসকদলের উপর তোপ দাগেন। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় আমরা দেখেছি প্রতি রাজ্যে অফিসার নিয়োগ করার কথা বলা হয়েছে। আমরা দেখেছি প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় সমীক্ষা করার জন্য আশা কর্মীদের রাখা হয়েছে। এদিকে আশা কর্মীরে নিজেরা বলেছেন, তাঁদেরকে কেউ ধর্ষণের হুমকি দিচ্ছে। কারণ তাঁরা আসল ভিতরের ঘটনাগুলো জেনে যাবে। এক একটা পঞ্চায়েত সদস্য প্রধানের ৪-৫ টি করে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার বাড়ি রেখে দিয়েছে এবং টাকা রেখে দিয়েছে। আসল যাঁরা রয়েছেন তাঁরা বাড়ি পাননি। এই জন্য আশা কর্মীরা আজ অবরোধ করছেন এবং বলছেন তাঁরা এই কাজ করতে পারবেন না। আমাদের কিছু বলতে হবে না। আজ এই সরকারের আশা কর্মীরাই প্রতিবাদ করছে এবং আওয়াজ তুলছে।’
আর পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে রাজ্যের স্কুলে স্কুলেও বোমা উদ্ধার প্রসঙ্গে বিজেপি নেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, ‘টিভিতে ইরাক, পাকিস্তানে যেসব দেখতে পাই সেসব ছবি ধীরে ধীরে ভেসে আসছে। আমরা জানি, সামনে পঞ্চায়েত নির্বাচন আসছে। তার আগে সকলে বাড়িতে বোমার ভাণ্ডার তৈরি করেছে। এটা খুব কষ্টের যে ভোট পরবর্তী হিংসায় এত মানুষ কষ্ট ভোগ করল। দু থেকে তিন লক্ষ লোক বাংলা ছেড়ে চলে গেল। এক বছরেও অনেক মানুষ বাড়ি ফেরেনি। তাঁরা মানুষের বিশ্বাস হারিয়ে ফেলেছে। তাঁরা জানে, পঞ্চায়েত নির্বাচনে তাঁরা মানুষের কোনও ভোট পাবে না। গুলি, বোমা, বারুদ, আগুন দিয়ে লড়াই করে তাঁরা পঞ্চায়েত নির্বাচনে জেতাই তাঁদের প্রধান উদ্দেশ্যে। তৃণমূলের এই সন্ত্রাসে সাধারণ মানুষ এবার চোখে চোখ রেখে লড়াই করবে।’