নয়া দিল্লি : মাথার উপর চোখ রাঙাচ্ছে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট – ওমিক্রন। প্রধানমন্ত্রী বার বার বলছেন, টিকাকরণে আরও গতি আনার কথা। ‘হর ঘর দস্তক’-এর কথা বলছেন। আর এরই মধ্যে টিকাকরণের রাজ্য ভিত্তিক পরিসংখ্যান বলছে, কংগ্রেস বা তার শরিক দলগুলি শাসিত রাজ্যে টিকাকরণ অনেকটা স্লথ। এখনও পর্যন্ত কোনও কংগ্রেস বা ইউপিএ শরিক দল শাসিত রাজ্যে প্রথম ডোজ় ৯০ শতাংশের গণ্ডি পার করতে পারেনি। দ্বিতীয় ডোজ় পাওয়া জনসংখ্যাও ৫০ শতাংশের কম।
সরকারি সূত্র মারফত খবর, অন্তত সাতটি বিজেপি শাসিত রাজ্যে প্রথম ডোজ়ের টিকা পেয়েছেন ৯০ শতাংশের বেশি মানুষ। আর ৫০ শতাংশের বেশি মানুষ দ্বিতীয় ডোজ় পেয়েছেন অন্তত আটটি বিজেপি শাসিত রাজ্যে।
ঝাড়খণ্ডে এখন সরকারে রয়েছে ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা এবং কংগ্রেসের জোট সরকার। সেখানে মাত্র ৬৬.২ শতাংশ মানুষ করোনার প্রথম ডোজ় পেয়েছেন এবং দ্বিতীয় ডোজ় পেয়েছেন ৩০.৮ শতাংশ মানুষ। পঞ্জাবে আবার ৭২.৫ শতাংশ মানুষ পেয়েছেন প্রথম ডোজ়, দ্বিতীয় ডোজ় পেয়েছেন ৩২.৮ শতাংশ। তামিলনাড়ুতে প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ় পেয়েছেন যথাক্রমে ৭৮.১ শতাংশ এবং ৪২.৬৫ শতাংশ মানুষ। মহারাষ্ট্রে এই পরিসংখ্যান যথাক্রমে ৮০.১১ শতাংশ এবং ৪২.৫ শতাংশ। ছত্তিশগঢ়ে প্রথম ডোজ় পেয়েছেন ৮৩.২ শতাংশ এবং দ্বিতীয় ডোজ় পেয়েছেন ৪৭.২ শতাংশ। রাজস্থানে প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ় পেয়েছেন যথাক্রমে ৮৪.২ শতাংশ এবং ৪৬.৯ শতাংশ মানুষ।
সংবাদ সংস্থা এএইআই-তে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, পশ্চিমবঙ্গে বর্তমান প্রথম ডোজ় পেয়েছেন ৮৬.৬ শতাংশ মানুষ এবং দ্বিতীয় ডোজ় পেয়েছেন ৩৯.৪ শতাংশ মানুষ।
এদিক থেকে দেখতে গেলে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে টিকাকরণের ছবিটা অনেকটা ভাল। হিমাচল প্রদেশ এবং গোয়া – এই দুই রাজ্য়ের ১০০ শতাংশ প্রথম ডোজ় সম্পন্ন হয়েছে। হিমাচল প্রদেশে দ্বিতীয় ডোজ় পেয়েছেন ৯১.৯ শতাংশ মানুষ এবং গোয়াতে দ্বিতীয় ডোজ় পেয়েছেন ৮৭.৯ শতাংশ মানুষ। গুজরাটের করোনা টিকাকরণেও যথেষ্ট গতি রয়েছে। সেখানে প্রথম ডোজ় এবং দ্বিতীয় ডোজ় পেয়েছেন যথাক্রমে ৯৩.৫ শতাংশ এবং ৭০.৩ শতাংশ মানুষ। উত্তরাখণ্ডে ৯৩ শতাংশ মানুষ পেয়েছেন প্রথম ডোজ় এবং ৬১.৭ শতাংশ মানুষ পেয়েছেন দ্বিতীয় ডোজ়। একইরকমভাবে মধ্য প্রদেশে যথাক্রমে ৯২.৮ শতাংশ এবং ৬২.৯ শতাংশ, কর্নাটকে ৯০,৯ শতাংশ এবং ৫৯.১ শতাংশ, হরিয়ানায় ৯০.০৪ শতাংশ এবং ৪৮.৩ শতাংশ, অসমে ৮৮.৯ শতাংশ এবং ৫০ শতাংশ, ত্রিপুরায় ৮০.৫ শতাংশ এবং ৬৩.৫ শতাংশ মানুষ প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ় পেয়েছেন।
উল্লেখ্য, কিছুদিন আগেই দেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে পর্যালোচনা বৈঠকে বসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বৈঠকে আধিকারিকরা প্রধানমন্ত্রীকে টিকাকরণের গতি এবং ‘হর ঘর দস্তক’ প্রকল্পের সাম্প্রতিক অগ্রগতি সম্পর্কে জানান। প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন, করোনা টিকার দ্বিতীয় ডোজ়ের কভারেজ আরও বাড়ানো দরকার। কেউ যাতে বাদ না যান, সেই বিষয়ে নজর রাখতে বলা হয়েছে। এর পাশাপাশি রাজ্যগুলিকেও নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে, যারা প্রথম ডোজ় পেয়েছেন, তাঁদের সময়মতো দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হয়েছে কি না। তিনি রাজ্য এবং জেলা পর্যায়ে যথাযথ সচেতনতা নিশ্চিত করার জন্য রাজ্য সরকারগুলির সঙ্গে কেন্দ্রীয় আধিকারিকদের ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।
আরও পড়ুন : Omicron: বিশ্লেষণ: দাঁত-নখ বের করছে ওমিক্রন, কতটা ভয়ের কারণ হতে পারে?