নয়া দিল্লি: তাঁর বৃদ্ধ বাবা-মা, ছোট ছোট ছেলেমেয়েদেরও ইডি-সিবিআই দিয়ে হেনস্থা করতে ছাড়েনি বিজেপি। বুধবার (২৪ জুলাই), লোকসভায় প্রস্তাবিত কেন্দ্রীয় বাজেটের উপর আলোচনা করতে গিয়ে এমনটাই অভিযোগ করলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সম্পাদক তথা ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন তিনি জানান, মোদী সরকার যেমন অ্যাক্রোনিম বা সংক্ষিপ্ত রূপ ব্যবহার করে, এই বাজেটের প্রতিটি অক্ষরকেও তিনি বিজেপির কার্যকলাপের সংক্ষিপ্ত রূপের মতো করেই ব্যাখ্যা করবেন। তাঁর ব্যাখ্যায় বাজেটের ‘টি’ অক্ষরটি ট্র্যাজেডির প্রতীক।
এই প্রসঙ্গে তিনি মোরবি ব্রিজ ভেঙে পড়া, দিল্লির এয়ারপোর্টের ছাদ ভেঙে পড়া, রাম মন্দিরের ছাদ থেকে জল পড়া, অটল সেতুতে ফাটল ধরা, উত্তরাখণ্ডের সূড়ঙ্গে শ্রমিকদের আটকে পড়া, বালাসোরে ট্রেন দুর্ঘটনা থেকে শুরু করে একের পর এক রেল দুর্ঘটনা, মণিপুরের হিংসার প্রসঙ্গ টানেন। এরপরই তিনি বলেন, আরেকটি ট্র্যাজেডি হল কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলিকে রাজনৈতিক স্বার্থে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা। ইডি-সিবিআই-এর মতো কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলিকে কাজে লাগিয়ে তিনি জানান, বিরোধী নেতাদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত ‘উইচ হান্ট’ চালান হচ্ছে।
তিনি বলেন, “আমাকেও হেনস্থা করা হয়েছে। শুধু আমার আর আমার স্ত্রীকে হেনস্থা করেই তারা থামেনি। আমার বৃদ্ধ বাবা-মা, আমার ব্যক্তিগত সহকারী, আমার আইনজীবীকেও ওরা ছাড়েনি। এমনকি আমার ১১ বছরের মেয়ে এবং ৪ বছরের ছেলেকেও ছাড়া হয়নি। বিজেপি আমার পিছনে ইডি আর সিবিআইকে লেলিয়ে দিয়ে গোটা দেশের সামনে একটা উদাহরণ তৈরি করতে চেয়েছিল।”
লোকসভায় অভিষেক দাবি করেন, বিজেপির এই পরিকল্পনা বানচাল করে দিয়েছে জনগণ। নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহদের সামনে জনতা এক অন্য উদাহরণ তৈরি করেছে। অভিষেক বলেন, “জনগণই দেশের মালিক, নেতারা নয়। বাংলার মানুষ, আমার লোকসভা কেন্দ্রর মানুষ আমায় তৃতীয়বারের জন্য ৭ লক্ষ ১০হাজার ভোটে জিতিয়েছে। তারা নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ এবং বাকি দেশের সামনে একটা উদাহরণ তৈরি করেছে। এটাই জনগণের শক্তি। আমায় মাথা নোয়াতে হলে আমি জনগণের শক্তির সামনে মাথা নোয়াবো, ক্ষমতায় যারা আছে তাদের সামনে মাথা নোয়াবো না। ওদের এটা বুঝতে হবে।”
প্রসঙ্গত, কয়লা কেলেঙ্কারি এবং বাংলার শিক্ষক নিয়োগ কেলেঙ্কারির তদন্তে, কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলি একাধিকবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের জেরা করেছে। কয়লা কেলেঙ্কারিতে ইডি জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল তাঁর স্ত্রী রুজিরা বন্দ্যোপাধ্য়ায়কে জেরা করেছিল ইডি। পশ্চিমবঙ্গে শিক্ষক নিয়োগ কেলেঙ্কারির ঘটনার তদন্তেও, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর বাবা-মাকেও জিজ্ঞাসাবাদ করেছে ইডি এবং সিবিআই।