মুম্বই: সেন্ট্রাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন বা সিবিআই-এর প্রধান সুবোধ কুমার জয়সওয়ালের নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন উঠে গেল। সিবিআই প্রধান হিসাবে এই আইপিএস অফিসারের নিয়োগকে চ্যালেঞ্জ করে একটি জনস্বার্থ মামলা করা হয়েছে। এই আবেদনের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার (৯ জুন), সুবোধ কুমার জয়সওয়াল-সহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গকে নোটিস পাঠালো বম্বে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত ও বিচারপতি এমএস কার্নিকের ডিভিশন বেঞ্চ। আগামী ১৮ জুলাইয়ের মধ্যে এই বিষয়ে জবাব দিতে বলা হয়েছে। এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে ১৮ জুলাই।
জনস্বার্থ মামলার আবেদনে বলা হয়েছে, ১৯৪৬ সালের দিল্লি পুলিশ এস্টাবলিশমেন্ট অ্যাক্ট অনুযায়ী সিবিআই প্রধান হওয়ার জন্য উপযুক্ত অভিজ্ঞতা নেই আইপিএস অফিসার সুবোধ কুমার জয়সওয়ালের। সেকশন ৪এ-তে দুর্নীতি বিরোধী মামলার ক্ষেত্রে যে দক্ষতা থাকা উচিত, তা তাঁর নেই। আরও অভিযোগ করা হয়েছে, এর আগে এক দায়রা আদালত এবং সুপ্রিম কোর্টও, এর আগে সুবোধ কুমারের নেতৃত্বে একটি বিশেষ তদন্তকারী দলের তদন্তের ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ জারি করেছিল। এটা তাঁর বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে সরাসরি প্রশ্ন তুলে দেয়। কিন্তু, সিবিআই-এর ডিরেক্টর নিয়োগের জন্য গঠিত কমিটি ওই বিষয়টি বিবেচনাই করেনি বলে দাবি করা হয়েছে।
এই বিষয়গুলি উল্লেখ করে অবিলম্বে সিবিআই ডিরেক্টর হিসাবে সুবোধ কুমার জয়সওয়ালের নিয়োগ খারিজ করার আবেদন করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, কোন কর্তৃত্বের জোরে তিনি সিবিআই-এর ডিরেক্টর পদে বসে আছেন, তাও জয়সওয়ালকে দেখাতে হবে বলে দাবি করা হয়েছে। সেই সঙ্গে, আবেদন করা হয়েছে যাতে এই মামলা চলাকালীন সিবিআই ডিরেক্টর হিসাবে তাঁকে কাজ করতে না দেওয়া হয়।
প্রসঙ্গত, ২০০২ সালে বিখ্য়াত ‘তেলগি স্ট্যাম্পপেপার কেলেঙ্কারি’ মামলার তদন্তে, বিশেষ তদন্তকারী দলের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন এই সুবোধ কুমার জয়সওয়াল। ২০০৩ সালে আব্দুল করিম তেলগি নামে এক জালিয়াতের বিরুদ্ধে ১৩০ কোটি টাকারও বেশি মূল্যের স্ট্য়াম্পপেপার জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছিল। এই ঘটনায় নাম জড়িয়েছিল বেশ কয়েকজন পুলিশ কর্তা এবং সরকারি কর্মীর বিরুদ্ধেও। এমনকি, সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছিল মুম্বই পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের তৎকালীন ডেপুটি কমিশনার প্রদীপ সাওয়ান্তকেও। পরে তিনি নির্দোষ প্রমাণিত হয়েছিলেন। ২০০৭ সালে তদন্তে গাফিলতির কারণে জয়সওয়াল এবং সুবোধ কুমারের নেতৃত্বে থাকা বিশেষ তদন্তকারী দলের তদন্তে বিধিনিষেধ জারি করেছিল আদালত।
১৯৮৫ সালের ব্যাচের এই আইপিএস অফিসার এর আগে মহারাষ্ট্র পুলিশের ডিরেক্টর জেনারেল হিসাবেও নিযুক্ত ছিলেন। তার আগে ছিলেন মুম্বই পুলিশের কমিশনার। ভারতীয় গুপ্তচর সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড অ্য়ানালিসিস উইং-এর অতিরিক্ত সচিব পদেও ছিলেন তিন বছর। তিনি ইনিটেলিজেন্স ব্যুরো এবং মহারাষ্ট্র পুলিশের সন্ত্রাসবাদ বিরোধী শাখার প্রধান হিসাবেও কাজ করেছেন। সিআইএসএফ বাহিনীর প্রধানের দায়িত্বও সামলেছেন।