নয়া দিল্লি : ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলায় আর্থিক তছরুপের অভিযোগে কংগ্রেসের সভানেত্রী সনিয়া গান্ধী ও কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীকে নোটিস পাঠিয়েছিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (Enforcement Directorate)। ইডি সূত্রে জানা গিয়েছিল গত ২ জুন রাহুল গান্ধীকে ও ৮ জুন সনিয়া গান্ধীকে জেরা করতে চেয়ে ইডি দফতরে হাজিরা দিতে বলা হয়েছে। কথামতো ২ জুন ইডির দফতরে হাজিরা দেননি রাহুল। তিনি তখন বিদেশে ছিলেন এই অজুহাতে ইডির দফতরে হাজিরা দেওয়ার দিন পরিবর্তন করেন। আর এদিকে গত ১ জুন ইডির নোটিস পাওয়ার পরদিনই জানা যায় সনিয়া গান্ধী করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। বর্তমানে তিনি নিভৃতবাসে রয়েছেন। তাই স্বভাবতই ৮ তারিখের ইডির হাজিরা করোনা কাঁটায় বাতিল হয়েছে। ইডি-র দেওয়া তারিখ মতো উপস্থিত থাকতে পারেনি মা-পুত্রের কেউই। তাই বিজেপির প্রশ্ন, কোনও ছলনায় ইডি-র তলব এড়াতে চাইছে না তো সনিয়া-রাহুল! এদিকে এক সপ্তাহ আগেই বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা বলেছিলেন, ‘দোষী কখনও নিজের অপরাধ স্বীকার করে না।’
প্রথম হাজিরা কোনওভাবে ফসকে গেলেও গতকালই কংগ্রেসের তরফে জানানো হয়েছে, সামনেই সনিয়া গান্ধী ও রাহুল গান্ধীর হাজিরা দেওয়ার কথা। তবে এদিন জানা গিয়েছে এখনও করোনামুক্ত হননি তিনি। করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ না আসা পর্যন্ত তিনি সময় চেয়েছেন। ইডির তলবের পরই মায়ের করোনা আক্রান্ত হওয়া ও পুত্রের ভ্রমণ কিছুটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এড়িয়ে যাওয়ার জন্যই কিনা তা যদিও পরিষ্কার নয়। তবে আগামী ১৩ জুন রাহুল গান্ধীর ইডি-র দফতরে হাজিরা দেওয়ার কথা। তা নিয়েও বিতর্ক দেখা গিয়েছে। রাহুলের হাজিরার দিন ইডি-র দফতর অবধি একটি প্রতিবাদ মিছিল করার পরিকল্পনা করেছে কংগ্রেস। কংগ্রেসের এই পদক্ষেপে গান্ধী পরিবারের তরফে কিছুটা বিরূপ বার্তাই যায়। গান্ধী পরিবারের কাউকে কেন্দ্রীয় সংস্থার জিজ্ঞাসাবাদ করা উচিত নয়- প্রতিবাদ মিছিল করার সিদ্ধান্ত থেকে এই বার্তায় উঠে আসে।
এক্ষেত্রে উল্লেখ্য, ২০১০ সালে তদন্তের মুখোমুখি হতে হয়েছিলেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকেও। কিন্তু তিনি তদন্তকারী সংস্থাকে সবরকম সাহায্য করেছিলেন সেইসময়। ২০০২ সালের গুজরাটের হিংসার ঘটনায় তৎকালীন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল হিংসা থামানোর জন্য যথেষ্ট পদক্ষেপ করেননি তিনি। সেই সংক্রান্ত মামলায় সুপ্রিম কোর্টের নিয়োজিত তদন্তকারী দল ২০১০ সালে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠায়। সেই সময় তিনি সংবাদ মাধ্যমে বলেছিলেন, ‘আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নন এবং বিশেষ তদন্তকারী দলের জিজ্ঞাসাবাদে আমি উপস্থিত থাকব।’ তাঁর কথায়, ‘আইন ও সংবিধান সর্বোচ্চ। এদেশের একজন নাগরিক হিসেবে আমি তাদের কাছে আবদ্ধ।’ তারপর এই ঘটনায় তাঁকে লাগাতার ৯ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তিনি সেই তদন্তে সবরকমভাবে সাহায্যে করেন বলেই জানা গিয়েছিল।