নয়া দিল্লি: শুধু খালিস্তান নয়, ধর্মের ভিত্তিতে ভারতকে ভেঙে টুকরো টুকরো করে অনেকগুলি দেশ তৈরি করাই গুরপতবন্ত সিং পান্নুনের লক্ষ্য। বিস্ফোরক তথ্য পাওয়া গেল জাতীয় তদন্ত সংস্থা বা এনআইএ-র এক সাম্প্রতিক দলিল থেকে। গত শনিবারই এই বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতার চণ্ডীগঢ়ের বাড়ি এবং অমৃতসরের খানকোট গ্রামে অবস্থিত কৃষি জমি বাজেয়াপ্ত করেছিল এনআইএ। তাদের দাবি, নিষিদ্ধ সংগঠন শিখ ফর জাস্টিস বা এসএফজে-র মাধ্যমে ভারতকে বিভক্ত করা এবং কাশ্মীরকে ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন করাই পান্নুনের মূল লক্ষ্য। শিখদের পাশাপাশি, মুসলিম এবং অন্যান্য ধর্মের জন্য পৃথক পৃথক দেশ গঠন করতে চায় সে।
এনআইএ-র দলিল উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থা আইএএনএস জানিয়েছে, “ধর্মের ভিত্তিতে ভারতকে বিভক্ত করার লক্ষ্য নিয়েছে পান্নুন। সে মুসলমানদের জন্য পৃথক দেশ গঠন করতে চায়। এর জন্য ভারতীয় মুসলিমদের উসকাচ্ছে সে। দেশটির নাম সে রাখতে চায় ‘গণপ্রজাতন্ত্রী উর্দুস্তান’। এছাড়া, কাশ্মীরকে ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন করার লক্ষ্যে, কাশ্মীরি জনগণকে উগ্রপন্থায় উৎসাহ দিতে সক্রিয় ভূমিকা নিচ্ছে সে। একের পর এক অডিয়ো বার্তার মাধ্যমে ভারতের ঐক্য ও অখণ্ডতাকে চ্যালেঞ্জ করছে সে। সাইবারস্পেসের অপব্যবহার করে যুবকদের সন্ত্রাসবাদী কার্যক্রমে এবং স্বাধীন খালিস্তান রাষ্ট্রের জন্য লড়াই করতে প্ররোচনা দিচ্ছে।” এনআইএ-র দলিল অনুযায়ী, দিল্লি, পঞ্জাব, হিমাচল প্রদেশ, হরিয়ানা এবং উত্তরাখণ্ড-সহ সারা গোটা দেশে এই খালিস্তানি নেতার বিরুদ্ধে অন্তত ১৬টি গুরুতর ফৌজদারি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
গুরপতবন্ত সিং পান্নুনের অসংখ্য অপরাধের মধ্যে রয়েছে, ইন্ডিয়া গেটে খালিস্তানি পতাকা উত্তোলনের ডাক। পতাকা তুলতে পারলে ২৫ লক্ষ মার্কিন ডলার পুরস্কার ঘোষণা করেছিল সে। ২০২১-এর ১৫ অগস্ট, লাল কেল্লায় ভারতের জাতীয় পতাকা তোলার সময়, তাতে বাধাদানের জন্য পুলিশ অফিসারদেরও আহ্বান জানিয়েছিল সে। তার জন্যও ছিল পুরস্কার, ১০ লক্ষ মার্কিন ডলার। সম্প্রতি, খালিস্তানি সন্ত্রাসবাদী নেতা হরদীপ সিং নিজ্জরের হত্যার প্রেক্ষিতে ভারত ও কানাডার মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের অবনতর মধ্যে কানাডায় মোতায়েন ভারতীয় কূটনীতিক এবং সরকারি কর্মকর্তাদের দেশে ফিরে যাওয়ার জন্য হুমকি দিয়েছে।
পঞ্জাব-সহ গোটা দেশের বিভিন্ন জায়গায় সন্ত্রাস ছড়ানো এবং নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের প্রচারের জন্য, ২০১৯ সাল থেকেই পান্নুনকে খুঁজছে এনআইএ। ২০২২-এ এক এনআইএ আদালতের নির্দেশে, তাকে সন্ত্রাসবাদী হিসেবে ঘোষণা করেছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। ইন্টারপোলকে তার বিরুদ্ধে রেড কর্নার নোটিশ জারি করার জন্য অনুরোধও করেছে ভারত সরকার। কিন্তু, পর্যাপ্ত তথ্য নেই বলে দুবার সেই অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছেসইন্টারপোল। তার আগে, ২০১৯ সালেই তার সংগঠন শিখস ফর জাস্টিসকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিল ভারত।