CWC meeting: সকল কংগ্রেস শাসিত রাজ্যে ‘জাতিভিত্তিক জনগণনা’, বড় সিদ্ধান্ত ওয়ার্কিং কমিটির

CWC in caste census: হিমাচল প্রদেশ, রাজস্থান, কর্নাটক এবং ছত্তীসগঢ় - চার কংগ্রেস শাসিত রাজ্যে জাতি ভিত্তিক আদমশুমারি করা হবে। রাহুল গান্ধী একে 'দেশের দরিদ্র জনগণের মুক্তির জন্য অত্যন্ত প্রগতিশীল পদক্ষেপ' বলেছেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন এবং আগামী লোকসভা নির্বাচনে জাতিভিত্তিক আদমশুমারি বিরোধী শিবিরের বড় অস্ত্র হতে চলেছে।

CWC meeting: সকল কংগ্রেস শাসিত রাজ্যে 'জাতিভিত্তিক জনগণনা', বড় সিদ্ধান্ত ওয়ার্কিং কমিটির
কংগ্রেস শাসিত রজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে রাহুল গান্ধীImage Credit source: PTI
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Oct 09, 2023 | 7:35 PM

নয়া দিল্লি: কংগ্রেস শাসিত সকল রাজ্যে জাতিভিত্তিক জনগণনা পরিচালনা করা হবে। সোমবার (৯ অক্টোবর), চার ঘণ্টা ধরে বৈঠক করে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটি। সেই বৈঠকেই এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেন চার কংগ্রেস শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা। বৈঠকের পর এক সাংবাদিক সম্মেলন করে রাহুল গান্ধী জানান, এদিনের বৈঠকে মূলতঃ জাতিভিত্তিক আদমশুমারি নিয়েই আলোচনা হয়েছে। কংগ্রেস শাসিত রাজ্যগুলিতে জাতিভিত্তিক আদমশুমারি পরিচালনার সিদ্ধান্ত, তাঁর মতে ‘ঐতিহাসিক’। রাহুল গান্ধী বলেন, “এটা একটা ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত। ওয়ার্কিং কমিটির সকলে সম্মিলিতভাবে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আমাদের মুখ্যমন্ত্রীরা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, হিমাচল প্রদেশ, রাজস্থান, কর্নাটক এবং ছত্তীসগঢ়ে জাতি ভিত্তিক আদমশুমারি পরিচালনা করবেন। দেশের দরিদ্র জনগণের মুক্তির জন্য এটা একটা অত্যন্ত প্রগতিশীল পদক্ষেপ।”

রাহুল গান্ধী আরও দাবি করেছেন, ধর্ম বা জাতিভেদকে উসকে দিতে নয়, জাতি ভিত্তিক জনগণনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ভারতের অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল অংশের স্বার্থে। কংগ্রেসের অভিযোগ, জি২০ গোষ্ঠীর দেশগুলির মধ্যে ভারতই একমাত্র দেশ, যেখানে এই ধরনের আদমশুমারি হয়নি। এটা ‘লজ্জার বিষয়’। তাদের দাবি, ২০১১ সালের আর্থ-সামাজিক ও জাতিভিত্তিক আদমশুমারির তথ্য প্রকাশ না করেনি বিজেপি। নতুন আদমশুমারিও এখনও হয়নি। এইভাবে দেশের বঞ্চিত অংশের মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করছে বিজেপি। ওয়ার্কিং কমিটির রেজোলিউশনে বলা হয়েছে, “২০২১ সাল বা তার পরপরই জনগণনা করা উচিত ছিল। এটা না করে সরকার তার সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে।”

কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির সিদ্ধান্ত হলেও, সূত্রের খবর, কংগ্রেস শাসিত রাজ্যগুলিতে জাতিভিত্তিক জনগণনা পরিচালনার ভাবনাটি মূলতঃ রাহুল গান্ধীর মস্তিষ্কপ্রসূত। এদিন রাহুল স্পষ্ট করে দিয়েছেন, গোটা দেশে জাতিভিত্তিক জনগণনা পরিচালনার জন্য বিজেপি সরকারকে চাপ দেবে ইন্ডিয়া জোট। রাহুল গান্ধী বলেছেন, “এটা কোনও রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নয়। এটা নিঃস্বদের ন্যায়বিচার দেওয়ার সিদ্ধান্ত। আমরা জাতিভিত্তিক আদমশুমারির প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, কারণ আমরা আন্তরিকভাবে এই প্রক্রিয়ায় বিশ্বাস করি।” ইন্ডিয়া জোটের দলগুলি মোদী সরকারকে জাতিভিত্তিক জনগণনার জন্য চাপ দেবে বলে রাহুল গান্ধী দাবি করলেও, ইন্ডিয়া জোটের দলগুলির মধ্যে এই বিষয়ে মতপার্থক্য আছে। তবে, রাহুলের মতে, তাতে কংগ্রেস দলের কোনও অসুবিধা নেই। রাহুল বলেন, “বিরোধী জোটের সংখ্যাগরিষ্ঠ দল এই ধারণাটিকে সমর্থন করে। কয়েকটি দলের সমস্যা থাকতেই পারে, তবে তাতে কংগ্রেসের অসুবিধা নেই। আমরা নমনীয়, আমরা ফ্যাসিবাদী দল নই।”

গত কয়েক মাস ধরে জাতিভিত্তিক আদমশুমারি নিয়ে সোচ্চার হয়েছে কংগ্রেস। তাদের দাবি, এটাই সামাজিক কল্যাণের সঠিক এবং ন্যায়সঙ্গত উপায়। গত এপ্রিলে মল্লিকার্জুন খাড়্গে চিঠি লিখে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে জাতিভিত্তিক আদমশুমারি বাস্তবায়িত করার দাবি জানিয়েছিলেন। তিনি লিখেছিলেন, হাতে সঠিক জাতি-ভিত্তিক তথ্য থাকলে, কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারগুলি কল্যাণমূলক এবং সামাজিক সুরক্ষামূলক প্রকল্পগুলি আরও ভালভাবে বাস্তবায়িত করতে পারবে। এদিন, সনিয়া গান্ধীও জাতিভিত্তিক আদমশুমারিকে একশো শতাংশ সমর্থনের কথা জানিয়েছেন।

সোমবারই, ছত্তীসগঢ়, মধ্য প্রদেশ, মিজোরাম, রাজস্থান এবং তেলঙ্গানার বিধানসভা নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। এর কয়েক ঘণ্টা পরই জাতিভিত্তিক আদমশুমারি নিয়ে কংগ্রেস এই বড় সিদ্ধান্ত জানাল। এই পাঁচ রাজ্যের মধ্যে রাজস্থান, ছত্তীসগঢ় এবং মধ্য প্রদেশ – তিনটি রাজ্যেই ভোটে বড় ভূমিকা নেয় জাতিভিত্তিক রাজনীতি। কংগ্রেসের সিদ্ধান্ত ভোটের ফলে কতটা প্রভাব ফেলে, সেটাই এখন দেখার। তবে শুধু পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনেই নয়, চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনেও জাতিভিত্তিক জনগণনা বিরোধী রাজনীতির প্রধান অস্ত্র হয়ে উঠবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। বিজেপি অবশ্য জাতিভিত্তিক জনগণনার বিরোধিতাই করেছে। গেরুয়া শিবিরের মতে, এই ধরনের আদমশুমারির মাধ্যমে হিন্দু সম্প্রদায়ে বিভাজন সৃষ্টি করতে চাইছে কংগ্রেস এবং ইন্ডিয়া জোটের অন্যান্য দলগুলি। এখনও পর্যন্ত বিহার রাজ্য সরকার এই ধরনের জনগণনা পরিচালনা করেছে এবং তার ফল প্রকাশ করেছে। কর্নাটকেও জাতিভিত্তিক জনগণনা হলেও, এখনও তার ফল প্রকাশ করা হয়নি।