লখনউ: মঙ্গলবার উত্তর প্রদেশের ব্যবসায়ী মণীশ গুপ্তা হত্যার ঘটনায় সিবিআইয়েরে স্পেশ্যাল ক্রাইম ব্রাঞ্চ শাখা ৬ জনের বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের করল। আগেই এই ঘটনার সিবিআই তদন্ত চেয়ে আবেদন জানিয়েছিল উত্তর প্রদেশ সরকার। এবার ধৃতদের বিরুদ্ধে সিবিআইয়ের খুনে মামলা দায়ের করা তদন্তের গতি প্রকৃতি নতুন দিকেই মোড় নেবে বলে মনে করা হচ্ছে।
ব্যবসায়ীর মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে উত্তর প্রদেশের রাজনীতিতে চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছিল। বিরোধীদের অভিযোগ ছিল, মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের (Yogi Adityanath) সরকার দোষীদের আড়াল করছে।
গত সেপ্টেম্বর মাসে গোরক্ষপুরের (Gorakhpur) এক হোটেলে পুলিশি অভিযানের সময় রহস্যজনকভাবে মৃত্যু হয় কানপুরের ব্যবসায়ী ৩৬ বছর বয়সী মণীশ গুপ্তার। এক সিনিয়র পুলিশ ইন্সপেক্টর সহ ৬ পুলিশ কর্মীকে এই ঘটনায় জন্য দায়ী করা হয়েছিল। মৃতের পরিবারে অভিযোগ ছিল পুলিশি নিগ্রহের কারণেই মণীশের মৃত্যু হয়েছিল। এমনকি আহত ব্যবসায়ীকে সঠিক সময়ে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়নি বলেও পরিবারের তরফে দাবি করা হয়। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে মৃতের দেহে একাধিক আঘাতের চিহ্ন মিলেছে। তারমধ্যে মাথার আঘাত ছিল গুরুতর।
বিরোধী দলের চাপের মুখে অভিযুক্ত ওই ৬ পুলিশ কর্মীকে সাসপেন্ড করা হয়েছিল। মৃতের পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্য ও ঘোষণা করে উত্তর প্রদেশ সরকার। কিন্তু এর মাঝেই একটি বিতর্কিত ভিডিয়ো সামনে আসার পর পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়। আম আদমি পার্টির (Aam Admi Party) রাজ্যসভা সাংসদ সঞ্জয় সিংয়ের (Rajya Sabha MP SAnjay Singh) টুইট করা ভিডিয়ো ঘিরে উত্তর প্রদেশের ব্যবসায়ী খুনের ঘটনা নতুন মাত্রা পেয়েছিল।
ভিডিয়োতে দেখা যায়, রাজ্য পুলিশের এক সিনিয়র অফিসার, মৃত ব্যবসায়ী মণীশ গুপ্তর পরিবারকে কোনও অভিযোগ দায়ের না করার পরামর্শ দিচ্ছেন। ওই ভিডিয়োতেই গোরক্ষপুরের জেলাশাসক বিজয় কিরণ আনন্দকে, মৃত ব্যবসায়ীর পরিবারের উদ্দেশে বলেন শোনা গিয়েছিল, তাঁরা যেন আদালতে মামলা না করেন। কারণ মামলা করলে সেই মামলা বছরের পর বছর ধরে চলে এতে হয়রানি বাড়বে।
এই ভিডিয়ো ঘিরে গোবলয়ের রাজনীতিতে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছিল। একযোগে সরকার ও মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে আক্রমণ করে বিরোধীরা। বিধানসভা নির্বাচনের কিছুদিন আগেই এই ঘটনা যোগী সরকারের অস্বস্তি বাড়িয়েছিল। শেষমেশ ব্যবসায়ী খুনের ঘটনায় অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপরেই সিবিআইয়ের কাছে এই ঘটনার তদন্ত করার আহ্বান জানায় উত্তর প্রদেশ সরকার।