নয়া দিল্লি: ভিসা কেলেঙ্কারি মামলায় সুরক্ষা পেলেন না কার্তি চিদম্বরম। কংগ্রেস নেতার বিরুদ্ধে এক চিনা সংস্থার কর্মীদের ঘুষের বিনিময়ে ভিসা পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগে নতুন করে মামলা রুজু করেছে সিবিআই। এই মামলার প্রেক্ষিতে বিশেষ সিবিআই আদালতে আগাম জামিনের আবেদন জানিয়েছিলেন কংগ্রেস সাংসদ কার্তি চিদম্বরম। শুক্রবার (৩ জুন), সেই আবেদনই প্রত্যাখ্যান করল আদালত। গত সপ্তাহেই এই মামলার শুনানি শেষ করেছিল সিবিআই আদালত। তবে, এখনও রায় ঘোষণা করা হয়নি। সিবিআই মামলা রুজু করার পর, এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডির পক্ষ থেকে এই কংগ্রেস নেতার বিরুদ্ধে অর্থপাচারের একটি পৃথক মামলাও দায়ের করা হয়েছে।
কংগ্রেস দলের সঙ্গত্যাগ করলেও, এদিন আদালতে কার্তি চিদম্বরমের পক্ষে উপস্থিত হয়েছিলেন কপিল সিব্বল। আদালতে তিনি দাবি করেন, কার্তির বিরুদ্ধে কোনও প্রমাণ নেই। তাঁর যুক্তি, যে অবৈধ লেনদেনের কথা বলা হচ্ছে, তা ২০১১ সালের। সিবিআই-এর কাছে এই মামলার বিষয়ে সমস্ত ইমেইল ছিল। কিন্তু, তারা এই বিষয়ে কোনও তদন্ত করেনি। অনেক বছর পর, এই মামলা দায়ের করা হয়েছে। পাশাপাশি, মাত্র ৫০ লক্ষ টাকার অবৈধ লেনদেনের অভিযোগ উঠেছে। তাই, কার্তি চিদম্বরমকে আগাম জামিন দেওয়া উচিত।
অন্যদিকে ইডি-র তরফে আদালতে ছিলেন অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল এসভি রাজু। তিনি বলেন, কার্তি চিদম্বরমের পক্ষ থেকেই জানানো হয়েছে যে তাঁর বিরুদ্ধে কোনও প্রমাণ নেই। মামলাটির তদন্ত এখনও চলছে। রাজু প্রশ্ন করেন, ‘তারপরও কেন তিনি নিজের গ্রেফতারির আশঙ্কা করছেন? কেন এমন মনে হল?’ এই ক্ষেত্রে উপযুক্ত সময়ের আগেই কার্তি চিদম্বরম জামিনের আবেদন করেছেন বলে দাবি করেন অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল।
গত বৃহস্পতিবারই (২৭ মে) এই মামলার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সিবিআই দফতরে ডাকা হয়েছিল কার্তি চিদম্বরমকে। কংগ্রেস সাংসদের বিরুদ্ধে সিবিআইয়ের অভিযোগ, ২০১১ সালে তিনি তাঁর ‘প্রভাবের অপব্যবহার’ করেছিলেন। পঞ্জাবে এক পাওয়ার প্রজেক্টে কর্মরত চিনা নাগরিকদের ঘুষের বিনিময়ে তিনি ভিসা পাইয়ে দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। প্রসঙ্গত সেই সময়ে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদে ছিলেন তাঁর বাবা পি চিদম্বরম। সিবিআই-এর দাবি, কার্তির এক সংস্থার মাধ্যমেই ওই চিনা নাগরিকদের ভিসার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছিল।
কার্তিকে সমন পাঠানোর বহু আগে থেকেই এই মামলার তদন্তে গতি এনেছিল সিবিআই। গত ১৭ মে এই মামলায় সিবিআইয়ের পক্ষ থেকে এস ভাস্কররমণ নামে এক চার্টার্ড অ্যাকাউন্টকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তিনি কার্তি চিদম্বরমের ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত। কার্তি ও পি চিদম্বরমের নাম জড়িয়ে রয়েছে, এমন ৭ টি জায়গায় তল্লাশি অভিযানও চালিয়েছিল সিবিআই। তবে, বরাবরই সিবিআই-এর অভিযোগ ‘মিথ্যা’ বলে দাবি করে এসেছেন কার্তি। তাঁর মতে, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই এই মামলা করা হয়েছে। আগাম জামিন বাতিল হওয়ার পর, রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, তাহলে কি কারাবাসই নাচছে কার্তির কপালে? প্রসঙ্গত ২০১৯ সালে তাঁর পি চিদম্বরমকেও আইএনএক্স মিডিয়া তহবিল তছরুপের মামলায় ১০৬ দিনের জন্য কারাবাস করতে হয়েছিল। জামিনে মুক্তি পেয়েছিলেন তিনি।