মুম্বই : মহারাষ্ট্র গোয়েন্দা বিভাগের হাতে থাকা পুলিশকর্মীদের বদলি সংক্রান্ত গোপন তথ্য ফাঁস কাণ্ডের বিষয়ে কী কী তথ্য রয়েছে সিবিআই ডিরেক্টরের কাছে? জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আগামী বৃহস্পতিবারই সিবিআই ডিরেক্টর সুবোধ কুমার জয়সওয়ালকে তাঁকে ডেকে পাঠিয়েছে মুম্বই পুলিশের সাইবার সেল। আজ এক ই-মেল মারফত সিবিআই প্রধানকে হাজিরার নির্দেশ দিয়েছে মুম্বই পুলিশ।
উল্লেখ্য, মহারাষ্ট্র গোয়েন্দা সংস্থার যে গোপন তথ্য ফাঁস হয়েছে, সেই সময় সুবোধ কুমার মহারাষ্ট্র পুলিশের প্রধান হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন। সেই সময়েই ওই তথ্য ফাঁস হয়েছিল বলে অভিযোগ। এবার সেই ঘটনার তদন্তে নেমে সিবিআই প্রধান সুবোধ কুমারকে তলব করেছে মুম্বই পুলিশ।
মুম্বই পুলিশ সূত্রে খবর, মহারাষ্ট্রের গোয়েন্দা বিভাগের অধীনে থাকা পুলিশকর্মীদের বদলি সংক্রান্ত তথ্য ফাঁসের ঘটনায় বৃহস্পতিবার তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
এর আগে, মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল দেশমুখের মামলার তদন্ত চলাকালীন সিবিআই প্রতিনিধি দল সম্প্রতি তথ্য ফাঁস মামলায় মহারাষ্ট্রের পুলিশের ডিরেক্টর জেনারেল সঞ্জয় পান্ডে এবং মহারাষ্ট্রের মুখ্যসচিব সীতারাম কুন্তেকে তলব করেছিল।
২৬ মার্চ, মহারাষ্ট্র গোয়েন্দা বিভাগ (এসআইডি) অজ্ঞাত পরিচয় কিছু ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে। অভিযোগ ছিল, গোয়েন্দা বিভাগের প্রাক্তন কমিশনার রশ্মি শুক্লার জমা দেওয়া রিপোর্ট ফাঁসের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে ওই অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিরা।
রশ্মি শুক্লা সুবোধ জয়সওয়ালের কাছে রিপোর্টটি জমা দিয়েছিলেন যখন তিনি মহারাষ্ট্রের পুলিশের ডিরেক্টরেট জেনারেল (ডিজিপি) ছিলেন। সেই রিপোর্টে অভিযোগ করা হয়েছিল, যে মহারাষ্ট্র পুলিশের বদলি সংক্রান্ত যাবতীয় বিবরণ ছিল। আর সেই তথ্য নগদ অর্থ ঘুষের বিনিময়ে ফাঁস করা হয়েছিল।
মহারাষ্ট্রের বিরোধী দলের নেতা দেবেন্দ্র ফড়নবিশ এর আগে অভিযোগ করেছিলেন যে, তাঁর কাছে এমন একটি পেনড্রাইভ রয়েচে, যেখানে মহারাষ্ট্রের তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল দেশমুখের ঘনিষ্ঠ পুলিশ আধিকারিক এবং রাজনীতিবিদদের মধ্যে বেশ কিছু ফোনালাপের রেকর্ড রয়েছে।
সেই সময় অবশ্য, রাজ্য প্রশাসনের কর্তৃপক্ষ রশ্মি শুক্লার জমা করা ওই অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে মনে করেছিল।
মহারাষ্ট্র গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান হিসেবে রশ্মি শুক্লা ছয় জন সন্দেহভাজন ব্যক্তির উপর নজরদারি চালিয়েছিলেন বিভিন্ন অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে। তারপরে কিছু বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ, মধ্যস্বত্বভোগী এবং পুলিশের কিছু পদস্থ আধিকারিকের বিরুদ্ধে একটি রিপোর্ট জমা দিয়েছিলেন যারা নিজেদের পছন্দমতো জায়গায় বদলির জন্য আবেদন করেছিলেন। রিপোর্টে বলা হয়েছে, রাজনীতিবিদদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে এমন কিছু পুলিশ আধিকারিক বদলি ও পোস্টিংয়ের জন্য মধ্যসত্ত্বাভোগীদের টাকা দিয়েছিলেন।
এর পরেই, প্রশ্ন উঠতে শুরু করে ওই ছয় পদস্থ পুলিশ আধিকারিকের বিরুদ্ধে নজরদারি চালানোর কোনও অনুমতি রশ্মি শুক্লার সঙ্গে ছিল কিনা। ফড়নবিশ দাবি করেছিলেন, রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতরের তৎকালীন অতিরিক্ত মুখ্যসচিবের কাছ থেকে শুক্লা অনুমতি নিয়েছিলেন। ডেপুটেশনে থাকা শুক্লাকেও আগে এই মামলায় তলব করা হয়েছিল।