নয়া দিল্লি : নৌ সেনার ডুবোজাহাজ সংক্রান্ত তথ্য ফাঁস করার অভিযোগের তদন্তে বড় পদক্ষেপ সিবিআইয়ের। নৌসেনার এক কমান্ডার এবং দুই অবসরপ্রাপ্ত নৌসেনা আধিকারিক সহ ছয় জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা করল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সূত্রের খবর, তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, নৌসেনার কিলো ক্লাস সাবমেরিন সংক্রান্ত কিছু গোপন তথ্য ফাঁস করে দেওয়ার। ওই সব তথ্য দেখার বা জানার অনুমোদন নেই এমন ব্যক্তির হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে ডুবোজাহাজের গোপন তথ্য।
সূত্রের খবর, ওই ছয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন আইনের আওতায় চার্জশিট জমা করা হয়েছে। সিবিআই জানিয়েছে, ওই অভিযুক্ত ব্যক্তিরা ভারতের কিলো ক্লাস সাবমেরিনের মিডিয়াম রেফিট লাইফ সার্টিফিকেশন বা এমআরএলসি প্রোগ্রামের গোপন তথ্য জানার এক্তিয়ার নেই এমন ব্যক্তির হাতে তুলে দিয়েছে।
৩ সেপ্টেম্বর সিবিআই আধিকারিকরা নৌসেনার অবসরপ্রাপ্ত আধিকারিক রণদীপ সিং এবং এসজে সিংকে গ্রেফতার করার পরই মামলাটি প্রকাশ্যে আসে। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার প্রথম চার্জশিটে এই দুই জনের নামেরই উল্লেখ করা হয়েছে। দ্বিতীয় চার্জশিটে হায়দরাবাদের এক কম্পানির এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর সহ তিন জন ডিরেক্টরের নামের উল্লেখ করা হয়েছে।
অবসরপ্রাপ্ত কমোডর রণদীপ সিংয়ের বাড়ি থেকে পরবর্তী সময়ে তল্লাশি চালিয়ে প্রায় ২ কোটি নগদ টাকা উদ্ধার করা হয়েছিল বলে সূত্র মারফত জানা গিয়েছে জানিয়েছে।
তদন্তের ভিত্তিতে সিবিআই সেই সময় ওয়েস্টার্ন নেভাল কমান্ড হেডকোয়ার্টারে কর্মরত কমান্ডার অজিত কুমার পান্ডেকে গ্রেফতার করে। অন্য একজন কমান্ডার, যিনি পান্ডের অধীনে সদর দফতরে কর্মরত ছিলেন, তাঁকেও গ্রেফতার করা হয়েছিল।
সিবিআই সূত্রের মতে, এই দুই সার্ভিং কমান্ডারই কিলো ক্লাস সাবমেরিনের রিফিট সম্পর্কে গোপনীয় বাণিজ্যিক তথ্য নৌবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত আধিকারিকদের কাছে পাঠিয়েছিলেন। ওই অবসরপ্রাপ্ত আধিকারিকরা বিদেশি কম্পানির জন্য কাজ করছেন বলে সন্দেহ গোয়েন্দাদের।
কমান্ডার এস জে সিং, যিনি চলতি বছরের শুরুতে অবসর নিয়েছেন,বর্তমানে একটি কোরিয়ান কম্পানির জন্য কাজ করছেন। ওই সংস্থার ভারতীয় নৌবাহিনীর প্রকল্প সম্পর্ক আগ্রহ রয়েছে বলে সূত্রের খবর। এই মামলায় নৌসেনার একজন রিয়ার অ্যাডমিরাল সহ অন্তত ছয় জন ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।
গ্রেফতার হওয়া অভিযুক্তরা যাতে জামিন না পেতে পারে, তার জন্ আজই চার্জশিট পেশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিবিআই। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সিবিআই সূত্র জানিয়েছে, ” ঘটনাটি নিয়ে আরও বিশদে গিয়ে তদন্ত চলছে।”
মামলাটি সঙ্গে জাতীয় নিরাপত্তার প্রশ্ন জড়িত। আর সেই কথা মাথায় রেখেই তদন্ত প্রক্রিয়া এগোচ্ছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার আধিকারিকরা। সবকিছুতেই ভীষণ রাখঢাক করা হচ্ছে। সিবিআই ২ সেপ্টেম্বর যে এফআইআর দায়ের করেছিল, সেই এফআইআরের কপিও প্রকাশ্যে আনেননি তদন্তকারী আধিকারিকরা। সিবিআইয়ের সর্বোচ্চ স্তরের আধিকারিকরা এই তদন্ত চালাচ্ছেন।
আরও পড়ুন : Narendra Modi: কোথায় টিকার ডোজ় কম, জেলা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলবেন খোদ প্রধানমন্ত্রী