নয়াদিল্লি : ধানবাদ আদালতের বিচারক উত্তম আনন্দের মৃত্যু মামলায় আরও দু’টি এফআইআর দায়ের করল কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। বুধবার সিবিআইয়ের তরফে নতুন এফআইআরগুলি দায়ের করা হয়েছে। সিবিআইয়ের তরফে এই সংক্রান্ত একটি বিবৃতিও জারি করা হয়েছে।
ধানবাদ আদালতের বিচারক উত্তম আনন্দকে যে অটোটি ধাক্কা মেরেছিল, সেটির মালিক এক মহিলা। নাম সুগ্নি দেবী। মহিলার বক্তব্য, ঘটনার আগেই চুরি হয়ে গিয়েছিল ঘাতক অটোটি। অটোটি চুরির এফআইআরও দায়ের করা হয়েছিল স্থানীয় থানায়। এবার ঘাতক অটো এবং সেই সঙ্গে তিনটি মোবাইল খোয়া যাওয়ার ঘটনায় দু’টি পৃথক এফআইআর দায়ের করল সিবিআই। এখন আগের মামলাটির সঙ্গে, ধানবাদের বিচারকের মৃত্যুতে আরও দুটি মামলা রুজু করল কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। অর্থাৎ, এখন থেকে ঘটনায় একইসঙ্গে তিনটি মামলার তদন্ত করবে সিবিআই।
ঝাড়খণ্ডের পাথরডিহি এলাকার বাসিন্দা ছিলেন নিহত বিচারক উত্তম আনন্দ। দুর্ঘটনাস্থল থেকে ৫০০ মিটার দূরে হীরাপুরে জাজেস কলোনিতে থাকতেন। ঘটনার দিন সকালে তাঁকে মারাত্মক জখম অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। তবে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। তাঁর মাথার পিছন দিকে মারাত্মক জখম হয়ে গিয়েছিল। মুখও বিকৃত হয়ে যায়। তাঁর চালক শেষে দেহ শনাক্ত করেন।
প্রাথমিকভাবে গোটা বিষয়টি দুর্ঘটনা বলে মনে হলেও, পরে রহস্য ঘনীভূত হতে শুরু করে। সিসিটিভি ফুটেজ অটোর ধাক্কার ছবি সামনে আসে। মুহূর্তে ভিডিয়ো ভাইরাল হয়। সুপ্রিম কোর্ট থেকে ধানবাদ আদালতকে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখার জন্য বলা হয়। ঝাড়খণ্ড আদালত স্বতঃপ্রণোদিত মামলা শুরু করে। ঘাতক অটোর চালক ও তার সহকারীকে গ্রেফতারও করা হয়। তাদের দাবি, নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে অটোটি গিয়ে ধাক্কা মারে বিচারককে। কিন্তু সিসিটিভি ফুটেজ দেখে সন্দেহ করা হচ্ছে, গাড়িটি সোজা চলতে চলতে আচমকা নিজের পথ বদলে উত্তম আনন্দকে গিয়ে ধাক্কা মারে।
উল্লেখ্য, ঝরিয়ার প্রাক্তন বিধায়ক সঞ্জীব সিংয়ের সহযোগী রণজয় সিংয়ের খুনের মামলার শুনানি উত্তম আনন্দের এজলাসে চলছিল। আর দুই, তিনদিন আগেই উত্তরপ্রদেশের কুখ্যাত গ্যাংস্টার অনুভব সিং ও আমন সিংয়ের সঙ্গী রবি ঠাকুরের জামিনের আর্জি খারিজ করে দিয়েছিলেন আনন্দ।
নিছক ‘হিট অ্যান্ড রান’ নাকি প্রতিহিংসার বশেই এই খুন… তা এখনও স্পষ্ট নয়। এদিকে খুনের তত্ত্ব সামনে আসতেই আইনজীবী বিকাশ সিং সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানিয়েছিলেন। বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে তাঁর আবেদন ছিল, “অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। একজন বিচারপতি জগিং করছেন, আর কেউ পিছন থেকে এসে ধাক্কা মেরে দিল। উনি একাধিক গ্যাংস্টারের জামিনের মামলা দেখছিলেন। এটি সরাসরি আইন ব্যবস্থার উপর হামলা। এই ঘটনার তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেওয়া উচিত।”
এরপরই ঝাড়খণ্ড পুলিশের থেকে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার হাতে মামলাটি তুলে দেওয়ার নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট।
আরও পড়ুন : Dhanbad: বিচারকের হত্যা মামলায় সময়মতো তদন্ত শুরু হয়নি, সাসপেন্ড করা হল ওসিকে