নয়া দিল্লি: ২০১৯ সালের ৫ অগস্ট। কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে নেওয়া হয় এক ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত। সংবিধান থেকে অবলুপ্ত করে দেওয়া হয় ৩৭০ অনুচ্ছেদ(Article 370), বিশেষ মর্যাদা হারায় জম্মু-কাশ্মীর(Special Status of Jammu Kashmir)। দেখতে দেখতে কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের সাড়ে তিন বছর পার হয়ে গিয়েছে। সেই সময়ে বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহারের এই সিদ্ধান্ত ঘিরে যাতে জম্মু-কাশ্মীরে উত্তেজনা না ছড়ায়, তার জন্য বিপুল সংখ্যক অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করা হয়েছিল। সূত্রের খবর, বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহারের সাড়ে তিন বছর পর উপত্যকা থেকে সেই সেনা প্রত্যাহারের (Withdrawal of Army) চিন্তাভাবনা করছে কেন্দ্রীয় সরকার। ইতিমধ্যেই একটি প্রস্তাবনা নিয়ে আলোচনা করা হচ্ছে। যদি এই প্রস্তবনা গ্রহণ করা হয়, তবে জম্মু-কাশ্মীরে ভারত-পাকিস্তান আন্তর্জাতিক সীমান্ত লাগোয়া নিয়ন্ত্রণ রেখা (Line of Control) ছাড়া আর কোথাও সেনা মোতায়েন থাকবে না।
দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, কাশ্মীর থেকে সম্পূর্ণ সেনা প্রত্য়াহার নিয়ে প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে। বিগত দুই বছর ধরে এই প্রস্তাবনা নিয়ে আলোচনা চলছে। বর্তমানে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক, সেনা বাহিনী ও জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের মধ্যে এই বিষয় নিয়ে শেষ ধাপের আলোচনা চলছে। কেন্দ্রের প্রস্তাবনা অনুযায়ী, উপত্যকা থেকে সম্পূর্ণরূপে সেনা প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে। তার বদলে সেখানে সিআরপিএফ বাহিনী মোতায়েন করা হবে। দুই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে ও সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলার জন্যই সিআরপিএফ মোতায়েন করা হবে বলে জানানো হয়েছে। যদিও সিআরপিএফ, সেনাবাহিনী বা জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের তরফে এখনই এই বিষয়ে মন্তব্য় করতে অস্বীকার করা হয়েছে।
সেনা সূত্রে খবর, বর্তমানে জম্মু-কাশ্মীরে প্রায় ১ লক্ষ ৩০ হাজার সেনা জওয়ান মোতায়েন রয়েছে। এরমধ্যে ৮০ হাজার জওয়ান আন্তর্জাতিক সীমান্ত রক্ষার দায়িত্বে রয়েছেন। অন্য়দিকে, রাষ্ট্রীয় রাইফেলসের ৪০ থেকে ৫০ হাজার বাহিনী কাশ্মীরে সন্ত্রাসবাদ দমন অভিযান চালাচ্ছে। জম্মু ও কাশ্মীর মিলিয়ে মোট প্রায় ৬০ হাজার সিআরপিএফ মোতায়েন রয়েছে, এরমধ্যে ৪৫ হাজার শুধু কাশ্মীরেই মোতায়েন রয়েছেন। জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের সংখ্য়াও বিপুল। মোট ৮৩ হাজার পুলিশ বাহিনী রয়েছে, এছাড়া সেন্ট্রাল আর্মড পুলিশ ফোর্সেরও বেশ কিছু কোম্পানি মোতায়েন রয়েছে।
জানা গিয়েছে, শুধুমাত্র কাশ্মীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতেই নয়, এই স্বাভাবিক পরিস্থিতি যাতে সাধারণ মানুষের নজরে পড়ে, তার জন্য়ই সেনা প্রত্য়াহার করার বিষয়ে আলোচনা করা হচ্ছে। সরকারের দাবি, ২০১৯ সালের ৫ অগস্টের পর থেকে এখনও অবধি জম্মু-কাশ্মীরে নিরাপত্তা বাহিনীর উপরে হামলা, হত্যা ও সন্ত্রাসবাদমূলক কার্যকলাপ প্রায় ৫০ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।