নয়া দিল্লি: করোনা সংক্রমণ বাড়তেই একাধিক রাজ্যের তরফে টিকা সরবরাহে ঘাটতির অভিযোগ তোলা হয়েছিল। কেন্দ্রের তরফে বারংবার পর্যাপ্ত পরিমাণ ভ্যাকসিন বরাদ্দের কথা জানানো হলেও রাজ্যগুলির দাবি ছিল ভিন্ন। নিজেদের দাবি সত্য প্রমাণ করতে এ বার ভ্যাকসিনের হিসেব-নিকেশ প্রকাশ করল কেন্দ্র। কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, রাজ্যগুলিতে এখনও এক কোটি ভ্যাকসিন মজুত রয়েছে। এছাড়াও আগামী দু-তিনদিনের মধ্যেই আরও ২০ লক্ষ ভ্যাকসিন পৌঁছে দেওয়া হবে।
বৃহস্পতিবার কেন্দ্রের তরফে একটি লিখিত বিবৃতি প্রকাশ করে জানানো হয়, করোনা সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পাঁচটি পন্থা অনুসরণ করছে কেন্দ্র। এগুলি হল পরীক্ষা, চিহ্নিতকরণ, চিকিৎসা, করোনাবিধি অনুসরণ ও টিকাকরণ। আগামী ১ মে থেকে দেশে তৃতীয় ধাপের টিকাকরণ প্রক্রিয়া শুরু হবে। ইতিমধ্যেই গতকাল থেকে টিকাকরণের জন্য রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়াও শুরু হয়ে গিয়েছে। উপযুক্ত বয়সী ব্য়ক্তিরা সরাসরি কো-উইন অ্যাপ কিংবা আরোগ্য সেতু অ্যাপের মাধ্যমে টিকা নিতে পারবেন বলে জানানো হয়েছে।
করোনা টিকার হিসাব দিয়ে কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়, এখনও অবধি মোট ১৬.১৬ কোটি ভ্যাকসিনের ডোজ় বিনামূল্যে রাজ্য়গুলিকে দেওয়া হয়েছে। ডোজ নষ্ট সহ এখনও অবধি মোট ১৫ কোটি ১০ লক্ষ ৭৭ হাজার ৯৩৩ টি ডোজ় প্রয়োগ করা হয়েছে। সেই হিসাবে এখনও রাজ্য ও কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলগুলির কাছে ১ কোটিরও বেশি টিকা থাকা উচিত। কেন্দ্রের তরফে এও জানানো হয় যে, আগামী তিনদিনের মধ্যেই রাজ্যগুলি অতিরিক্ত ২০ লক্ষ ৪৮ হাজার ৮৯০টি ভ্যাকসিনের ডোজ় পৌছে যাবে।
মহারাষ্ট্র সরকারের নাম উল্লেখ করেই বলা হয়, “বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের রিপোর্টে বলা হয়েছে যে মহারাষ্ট্র সরকারের আধিকারিকরা জানিয়েছেন রাজ্যে মজুত থাকা টিকা শেষ এবং সেই কারণে রাজ্যে টিকাকরণে প্রভাব পড়ছে। ২৮ এপ্রিল অবধি মহারাষ্ট্র সরকার মোট ১ কোটি ৬৩ লক্ষ ৬২ হাজার ৪৭০ডোজ় ভ্যাকসিন পেয়েছে। এরমধ্যে ০.২২ শতাংশ টিকা নষ্ট হয়েছে। সব মিলিয়ে রাজ্যে মোট ১ কোটি ৫৬ লক্ষ ১২ হাজার ৫১০টি ভ্যাকসিনের ডোজ় প্রয়োগ করা হয়েছে। রাজ্যের কাছে এখনও ৭ লক্ষ ৪৯ হাজার ৯৬০টি ভ্যাকসিনের ডোজ় পড়ে রয়েছে।” কেন্দ্রের তরফে আরও জানানো হয়, আগামী তিনদিনের মধ্যে আরও ২০ লক্ষ ৪৮ হাজার ৮৯০ ডোজ় ভ্যাকসিন পৌছে দেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, গত মাসের শেষ ভাগ থেকেই মহারাষ্ট্র সরকার অভিযোগ তোলে যে, রাজ্যে ভ্যাকসিনের ঘাটতি দেখা দিয়েছে। কেন্দ্রের তরফে দ্রুত টিকা না পাঠালে সম্পূর্ণ টিকাকরণ প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যাবে। মুম্বই সহ একাধিক জেলার বিভিন্ন টিকাকরণ কেন্দ্র বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরবর্তী সময়ে দিল্লি, রাজস্থান, তামিলনাড়ু, ওড়িশা সহ একাধিক রাজ্যও ভ্যাকসিন শেষ হয়ে এসেছে বলে জানায়।