নয়া দিল্লি: ওমিক্রন (Omicron) নিয়ে ক্রমশই বাড়ছে উদ্বেগ। ইতিমধ্যেই দেশে ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যা ৪০০ পার করেছে। বেশ কয়েকটি রাজ্যে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের (COVID Positive) সংখ্যাও। পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে এবার কেন্দ্রের তরফে বিভিন্ন রাজ্যে বিশেষজ্ঞের দল (Central Expert Team) পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক(Union Health Ministry)-র তরফে জানানো হয়েছে, যে রাজ্যগুলিতে করোনা ও ওমিক্রন সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং টিকাকরণের গতি ধীর, এমন ১০টি রাজ্যে প্রতিনিধি দল পাঠানো হবে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রকের নির্দেশিকা অনুযায়ী, যে রাজ্যগুলিতে বিশেষ প্রতিনিধি দল পাঠানো হবে, সেগুলি হল কেরল, মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু, পশ্চিমবঙ্গ, উত্তর প্রদেশ, মিজোরাম, কর্নাটক, বিহার, ঝাড়খণ্ড ও পঞ্জাব। এর মধ্য়ে মহারাষ্ট্র, কেরল, তামিলনাড়ু, কর্নাটকের মতো রাজ্য়গুলিতে ক্রমশ ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। অন্যদিকে, পঞ্জাব ও উত্তর প্রদেশে আগামী বছরের শুরুতেই বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে।
কেন্দ্রের পাঠানো দলগুলি ৫ দিনের জন্য উল্লেখিত রাজ্যে যাবে। সেখানে তারা রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে মিলিতভাবে করোনা পরীক্ষার হার বৃদ্ধি, নজরদারি বাড়ানো ও করোনাবিধি সঠিকভাবে পালন হচ্ছে কিনা, তা খতিয়ে দেখবেন এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেবেন। একইসঙ্গে তারা রাজ্যে টিকাকরণের হার, হাসপাতালগুলির পরিকাঠামো, রোগীদের চিকিৎসার জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক শয্যা ও অক্সিজেন মজুত রয়েছে কিনা, তা যাচাই করে দেখবেন।
স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, যে রাজ্যগুলিতে ওমিক্রন সংক্রমণ ধরা পড়েছে বা করোনা সংক্রমণ বাড়ছে, সেখানে জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের হারও পর্যালোচনা করবেন কেন্দ্রের প্রতিনিধি দল। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে মিলিতভাবে পরিদর্শনের পর প্রয়োজনীয় সুপারিশও দেবেন তারা। প্রতিদিন সন্ধে ৭টার মধ্যে তাদের রিপোর্ট জমা দিতে হবে।
ইতিমধ্যেই এলাহাবাদ হাইকোর্টের তরফে নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়া নিয়ে সওয়াল তোলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার ওমিক্রন ও করোনা পরিস্থিতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যে জরুরি বৈঠকে বসেছিলেন, সেখানে তিনি সাধারণ মানুষকে সাবধান ও সতর্ক থাকার অনুরোধ জানিয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার সেই প্রসঙ্গ টেনেই এলাহাবাদ হাইকোর্টের বিচারপতি শেখর কুমার যাদব বলেন, “উত্তর প্রদেশের বিধানসভার নির্বাচন এগিয়ে আসছে। রাজনৈতিক দলগুলি সমাবেশ করছে। জনসভা হচ্ছে এবং লাখো মানুষের সমাগম হচ্ছে। এই ধরনের রাজনৈতিক কর্মসূচিতে কোভিড প্রোটোকল পালন করা সম্ভব নয়। যদি সময়মতো এটি বন্ধ করা না হয়, তবে তার ফলাফল দ্বিতীয় ঢেউয়ের চেয়ে আরও ভয়ঙ্কর হবে।”
দেশের নিরিখে সর্বোচ্চ ওমিক্রন আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে দিল্লি ও মহারাষ্ট্র থেকেই। আপাতত সংক্রমণের শীর্ষে রয়েছে মহারাষ্ট্র, সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা ১০৮। এরপরই রয়েছে দিল্লি, সেখানে ৭৯ জন ওমিক্রন আক্রান্ত হয়েছেন। গুজরাটেও বেড়েছে ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যা। সেখানে বর্তমানে আক্রান্তের সংখ্যা ৪৩।
এরপরেই রয়েছে তেলঙ্গনা(৩৮), কেরল (৩৭), তামিলনাড়ু (৩৪), কর্নাটক (৩১), রাজস্থান (২২)-র মতো রাজ্যও। পশ্চিমবঙ্গেও গতকাল নতুন করে দুইজন আক্রান্তের খোঁজ মেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাড়িয়েছে ৬-এ। হরিয়ানা, ওড়িশা ও অন্ধ্র প্রদেশেও ৪ জন করে আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে। জম্মু-কাশ্মীরে ৩ জন, উত্তর প্রদেশে ২ জন আক্রান্ত হয়েছেন ওমিক্রনে। চণ্ডীগঢ়, লাদাখ ও উত্তরাখণ্ডেও একজন করে আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে।