নয়া দিল্লি : কিছুদিন আগেই দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল ঘোষণা করেছিলেন বিনামূল্যে রেশন পরিষেবার মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে সেখানে। কেন্দ্রও যাতে অনুরূপ ব্যবস্থা নেয়, সেই দাবিতে চিঠিও পাঠিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কাছে। আর এরই মধ্যে দিল্লি সরকারের বাড়ি বাড়ি গিয়ে রেশন পৌঁছে দেওয়ার প্রকল্পের বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হল কেন্দ্র। এর আগে দিল্লি হাইকোর্ট কেজরিওয়ালের সরকারকে এই বাড়ি বাড়ি গিয়ে রেশন বিলির প্রকল্পে সবুজ সংকেত দিয়েছিল। দিল্লি হাইকোর্টের সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে এবার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হল কেন্দ্র।
সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এল নাগেশ্বর রাও, বিচারপতি বি আর গাবাই এবং বিচারপতি বি ভি নাগরত্নের একটি বেঞ্চে মামলাটির শুনানি হবে। সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা অনুরোধ করেছিলেন কেন্দ্রের জমা করা এই আবেদনটি যাতে আগামিকাল শোনা হয়। কিন্তু দিল্লি সরকারের পক্ষে বর্ষীয়ান আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি আদালতে ব্যক্তিগত অসুবিধার কারণ দেখিয়ে অনুরোধ করেন অন্য একটি দিন ঠিক করার জন্য। সেই মতো ১২ নভেম্বর (শুক্রবার) মামলাটি শুনানির দিন ধার্য্য করা হয়েছে।
উল্লেখ্য বুধবার সুপ্রিম কোর্টে কোনওরকম ভার্চুয়াল শুনানি হয় না। বুধবারের গোটা বিচার প্রক্রিয়া চলে সশরীরে উপস্থিত থেকে। সেই নিয়ে কিছুটা হালকা মেজাজেই বিচারপতি রাও বলেন, “আমি বুঝতে পারছি অসুবিধার কথা। অভিষেক মনু সিংভি আগামিকাল আদালতে আসতে চাইছেন না।”
এর আগে চলতি বছরের ২৭ সেপ্টেম্বর দিল্লি হাইকোর্ট কেজরিওয়ালের সরকারকে অনুমতি দিয়েছিল, যাঁরা যাঁরা বাড়ি পর্যন্ত রেশন পৌঁছে দেওয়ার অপশনটি বেছে নিয়েছেন, সেই হিসেব মতো রেশনের সরবরাহ ন্যায্য মূল্যের দোকানগুলিতে না পাঠানোর। আদালত আরও জানিয়েছিল, বেশিরভাগ মানুষই বাড়ি পর্যন্ত রেশন পৌঁছে দেওয়ার সুবিধা বেছে নিয়েছেন।
যাঁরা যাঁরা এই সুবিধা বেছে নিয়েছেন, সেই সব উপভোক্তাদের নামের তালিকা প্রস্তুত করে ন্যায্যমূল্যের দোকানগুলিতে পাঠিয়ে দেওয়ার কথাও বলছিল দিল্লি হাইকোর্ট। হাইকোর্টের বিচারপতি বিপিন সংঘী এবং জসমিত সিং জানিয়েছিলেন, এই সব ন্যায্য মূল্যের দোকানগুলিতে ওই রেশন সরবরাহ করার আর দরকার নেই।
উল্লেখ্য এর আগে ২০২১ সালের ২২ মার্চ দিল্লি হাইকোর্ট একটি নির্দেশিকা জারি করেছিল। তাতে বলা হয়েছিল, দিল্লি সরকারি রেশন ডিলার্স সংঘের সদস্য যাঁরা রয়েছেন, তাঁদের কাছে খাদ্য শস্য ও আটার সরবরাহ বন্ধ করার দরকার নেই। পরে সেপ্টেম্বর মাসে সেই নির্দেশিকায় পরিবর্তন আনে দিল্লি হাইকোর্ট।
হাইকোর্টে দিল্লি সরকার অবশ্য এও জানিয়েছিল যে যদি কোনও গ্রাহক, যিনি একবার এই সুবিধা নিয়েছেন, কিন্তু এখন আর নিতে চান না, তিনি আবার ন্যায্যমূল্যের দোকান থেকে সেই রেশন পাবেন। কিন্তু কেন্দ্রের বক্তব্য দিল্লি সরকারের এই প্রকল্প এ ভাবে চালু করা সম্ভব নয়। এর জন্য জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা আইনে সংশোধন প্রয়োজন। আর সেই নিয়েই এবার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।