নয়া দিল্লি: সিম কার্ড লাগবে না, লাগবে না ইন্টারনেটও। মোবাইল বা ওয়াইফাই ইন্টারনেট সংযোগ ছাড়াই ভিডিয়ো চলবে আপনার মোবাইলে। অবাক লাগছে? অদূর ভবিষ্যতেই কিন্তু বাস্তবে এই দৃশ্য দেখা যেতে পারে। কারণ ডিরেক্ট-টু-মোবাইল ব্রডকাস্টিং-এর পরিকল্পনা করছে মোদী সরকার। এক সম্মেলনে ভাষণ দেওয়ার সময়, কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের সচিব অপূর্ব চন্দ্র বলেছেন, শীগগিরই দেশের ১৯টি শহরে ডিরেক্ট-টু-মোবাইল বা ডিটুএম (D2M) প্রযুক্তির ট্রায়াল হবে। এই নয়া প্রযুক্তির জন্য ৪৭০-৫৮২ মেগাহার্ট্জ স্পেকট্রাম সংরক্ষণ করা হতে পারে।
অপূর্ব চন্দ্র আরও জানিয়েছেন, ভিডিয়ো দেখেন যাঁরা, তাঁদের ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ যদি ডিটুএম প্রয়ুক্তি ব্যবহার করে ভিডিয়ো দেখা শুরু করেন, সেই ক্ষেত্রে ৫জি নেটওয়ার্কের উপর চাপ কমবে। এর ফলে, ভারতের ডিজিটাল বিবর্তন ত্বরান্বিত হবে। একই সঙ্গে সকলের কাছে নাগালের মধ্যে চলে আসবে ভিডিয়ো কনটেন্টগুলি। প্রসঙ্গত, গত বছর পাইলট প্রকল্প হিসেবে বেঙ্গালুরু, নয়া দিল্লির কর্তব্যপথ এবং নয়ডা ডিটুএম প্রযুক্তির পরীক্ষা করা হয়েছিল। তিনি আরও দাবি করেছেন, সারা দেশে প্রায় ৮-৯ কোটি পরিবারের বাড়িতে টিভি নেই। দেশের ২৮ কোটি পরিবারের মধ্যে মাত্র ১৯ কোটি মত পরিবারে টিভি আছে। ডিটুএম প্রযুক্তি এই বাড়িগুলিতে ভিডিয়ো কনটেন্ট পৌঁছে দেবে।
তিনি জানিয়েছেন, দেশে ৮০ কোটি মানুষের হাতে স্মার্টফোন রয়েছে। এই সকল স্মার্টফোন ইউজাররা যে যে কনটেন্ট ব্যবহার করেন, তার ৬৯ শতাংশই হল ভিডিয়ো। ভিডিয়োর এই অত্যধিক ব্যবহারের ফলে মোবাইল নেটওয়ার্কগুলির উপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে। নেটওয়ার্কগুলি আটকে যায়। যার ফলে কনটেন্টে বাফারিং হয়। অর্থাৎ, ভিডিয়ো আটকে গিয়ে মাঝখানে একটি গোল চিহ্ন ঘুরতে থাকে। এই সমস্যা দূর করবে ডিটুএম প্রযুক্তি বলে মনে করা হচ্ছে।
সাংখ্য ল্যাবস এবং আইআইটি কানপুর এই প্রযুক্তি তৈরি করেছে। টেলিকমিউনিকেশন পরিকাঠামো এবং পাবলিক ব্রডকাস্টারদের স্পেকট্রাম ব্যবহার করে ডিটুএম সম্প্রচার প্রযুক্তির মাধ্যমে ভিডিয়ো, অডিয়ো এবং ডেটা সিগন্যাল সরাসরি মোবাইল এবং স্মার্ট ডিভাইসগুলিতে পাঠায়। এই প্রযুক্তিতে মসৃণভাবে ১০০কোটিরও বেশি মোবাইল ডিভাইসে সিগনাল সম্প্রচার করা যাবে। সেই সঙ্গে ডেটা ট্রান্সমিশন বা তথ্য পাঠানোর খরচও অনেকটাই কমবে বলে, মনে করা হচ্ছে। এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে দেশব্যাপী জরুরি সতর্কতাও পাঠানো হতে পারে।