নয়া দিল্লি: স্মার্টফোন বাজারে আসার পর এক আমূল পরিবর্তন এসেছে দেশে। এবার আরও এক বিপ্লব আসতে চলেছে। সিম কার্ড বা ইন্টারনেট সংযোগ ছাড়াই দিব্যি চলবে ভিডিয়ো স্ট্রিমিং। সে দিন আর বেশি দূরে নেই। এসে যেতে পারে ‘ডি২এম’ সুবিধা। অর্থাৎ ডিরেক্ট টু মোবাইল ব্রডকাস্টিং। কোনও সিমকার্ড বা ইন্টারনেট কানেকশনের ঝক্কি ছাড়াই আপনি দেখতে পারবেন ভিডিয়ো স্ট্রিমিং। অদূর ভবিষ্যতে এমন কিছু ঘটলে কিন্তু অবাক হবেন না।
কী এই ডিরেক্ট টু মোবাইল প্রযুক্তি? কীভাবে কাজ করে এই প্রযুক্তি? বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, এই ডিরেক্ট টু মোবাইল প্রযুক্তির পিছনে যে বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তি রয়েছে, তা অনেকটা রেডিয়োর এফএমের মতো। ঠিক যেমন রেডিয়োর মধ্যে একটি রিসিভার থাকে, যা ভিন্ন ভিন্ন রেডিয়ো ফ্রিকোয়েন্সি ধরতে পারে। এক্ষেত্রেও কাজটা ঠিক তেমনই। বিশেষজ্ঞদের মতে, ব্রডব্যান্ড ও ব্রডকাস্ট – এই দুইয়ের মেলবন্ধন হল ডিরেক্ট টু মোবাইল প্রযুক্তি। এর মাধ্যমে মোবাইলে ডিজিটাল টিভির সিগন্যাল ধরা পড়ে। ওয়াকিবহাল মহলের একাংশের ব্যাখ্যা, এটির মাধ্যমে কোনও খেলার লাইভ সম্প্রসারণ থেকে শুরু করে বিবিধ মাল্টিমিডিয়া কনটেন্ট দেখা যাবে ইন্টারনেট ছাড়াই।
সম্প্রতি এক ব্রডকাস্টিং সম্মেলনে কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের সচিব অপূর্ব চন্দ্র ‘ডিরেক্ট টু মোবাইল’ প্রযুক্তি নিয়ে এক বড় ঘোষণা করেছেন। জানিয়েছেন, খুব শীঘ্রই দেশের ১৯টি শহরে এই ডিরেক্ট টু মোবাইল প্রযুক্তির ট্রায়াল চালানো হবে। এই প্রযুক্তি সম্পূর্ণ দেশীয়ভাবে তৈরি করা হয়েছে। তাঁর কথায়, এই ডিরেক্ট টু মোবাইল প্রযুক্তি দেশের ডিজিটাল বিপ্লবে দুর্দান্ত গতি আনবে। একইসঙ্গে, কনটেন্ট ডেলিভারির ক্ষেত্রও আরও উন্নত ও সহজ-সরল হবে বলে মনে করছেন তিনি।
এই ডিরেক্ট টু মোবাইল প্রযুক্তি নিয়ে অনেকদিন ধরেই কাজ চলছে ভারতে। গত বছরেও পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে বেঙ্গালুরু, কর্তব্য পথ ও নয়ডায় এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছিল। সবথেকে বড় বিষয় হল, এই প্রযুক্তি একবার সফলভাবে পরীক্ষিত হয়ে উঠে এলে দেশে এক বিরাট পরিবর্তন আসবে। কারণ, বর্তমানে ২৮ কোটি বাড়ির মধ্যে ১৯ কোটি বাড়িতে টিভি রয়েছে। সেক্ষেত্রে এই প্রযুক্তি চলে এলে, প্রায় ৮-৯ কোটি বাড়ি, যেখানে টেলিভিশন সেট নেই, সেই সব বাড়িগুলি উপকৃত হবে বলে মনে করছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের সচিব।
তাঁর যুক্তি, দেশে বর্তমানে ৮০ কোটি বেশি স্মার্টফোন ব্যবহার করেন। তার মধ্যে প্রায় ৬৯ শতাংশ কনটেন্ট দেখা হয় ভিডিয়ো ফরম্যাটে।