নয়া দিল্লি: মঙ্গলবার, গম রফতানির বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা কিছুটা শিথিল করল ভারত সরকার। গত ১৩ মে গম রফতানির উপর বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছিল। মঙ্গলবার, কেন্দ্রীয় বাণিজ্য মন্ত্রকের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ১৩ মে এবং তার আগে, পরীক্ষা এবং তাদের সিস্টেমে নথিভুক্ত করার জন্য গমের যেসব চালান শুল্ক বিভাগের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে, সেই চালানগুলি রপ্তানি করার অনুমতি দেওয়া হবে। এছাড়া, নিষেধাজ্ঞা জারির সময়ে মিশরে রপ্তানির জন্য, গুজরাটের কান্ডালা বন্দরে একটি জাহাজে গম তোলা চলছিল। সেই, চালানও মিশরে রফতানি করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
জানা গিয়েছে, এই চালানটি রপ্তানির অনুমতি দেওয়ার জন্য মিশর সরকারের পক্ষ থেকেই কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে অনুরোধ জানানো হয়েছিল। রফতানির দায়িত্বে রয়েছে ‘মেসার্স মেরা ইন্টারন্যাশনাল ইন্ডিয়া প্রাইভেট লিমিটেড’ নামে এক সংস্থা। তারাও কেন্দ্রীয় সরকারকে জানিয়েছিল, ৬১,৫০০ মেগাটন গমের মধ্যে ৪৪,৩৪০ মেগাটন গম ইতিমধ্যেই জাহাজে তোলা হয়ে গিয়েছে। তোলা বাকি মাত্র ১৭,১৬০ মেগাটন। এই জোড়া আবেদনের ভিত্তিতে সরকার, পুরো ৬১,৫০০ মেগাটন গমই রফতানির অনুমতি দিয়েছে।
ভারত এই মুহূর্তে ভয়ঙ্কর মুদ্রাস্ফীতির মোকাবিলা করছে। দেশে গমের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখার লক্ষ্য়েই গত ১৩ মে গম রফতানির উপর বেশ কিছু বিধিনিষেধ জারি করেছিল কেন্দ্র। একইসঙ্গে, সরকার জানিয়েছিল, যুদ্ধের আবহে গোটা বিশ্বেই গমের জোগান প্রভাবিত হয়েছে। বেশ কিছু প্রতিবেশী দেশ এবং দুর্বল অর্থনীতির দেশগুলি প্রয়োজনীয় গমের জোগান পাচ্ছে না। রফতানি নিয়ন্ত্রণ করে এই সকল দেশের প্রতি সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেওয়া হবে।
সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী, দুটি ক্ষেত্রে গম রফতানির অনুমতি ছিল। অনেক বেসরকারি বাণিজ্যিক সংস্থাই ১৩ মে বা তার আগে, গম রফতানির প্রতিশ্রুতির বিষয়ে লেটার অব ক্রেডিটের মাধ্যমে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। লেটার অব ক্রেডিট পরিবর্তন করা যায় না। তাই এই সকল চুক্তিবদ্ধ সংস্থাগুলিকে গম রফতানিতে নিষেধাজ্ঞার আওতা থেকে ছাড় দেওয়া হয়েছিল। এছাড়া, খাদ্য সুরক্ষার কারণে কিংবা অন্য়ান্য দেশের অনুরোধ সাপেক্ষে কেন্দ্রের পক্ষ থেকে যেসব দেশে গম রফতানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে, সেইসব দেশেও গম রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা ছিল না।
প্রসঙ্গত, ফেব্রুয়ারি মাসের শেষে ইউক্রেনে রুশ বিশেষ সামরিক অভিযান শুরু হওয়ার পর থেকেই গোটা বিশ্বেই গমের জোগানে টান পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল। ফলে বিশ্বের বাজারে গনের দাম বাড়তে শুরু করেছিল। এরপর, গত সপ্তাহে ভারত গম রফতানি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর ইউরোপিয় বাজারে গমের দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। সোমবার বাজার খোলার পরই ইউরোপিয় বাজারে গমের দাম এক ধাক্কায় ৬ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। একই সময়ে, ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে গমের দাম ৪ থেকে ৮ শতাংশ পর্যন্ত কমেছে।