নয়া দিল্লি: অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসা করাবেন না আয়ুর্বেদ-তা ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। কোনও চিকিৎসা পদ্ধতিকেই অপমান করা উচিত নয়। পতঞ্জলি বিতর্ক নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে এমনটাই জানাল কেন্দ্রীয় সরকার। পতঞ্জলি আয়ুর্বেদ ও তার প্রতিষ্ঠাতা যোগগুরু রামদেব ও সহকারী বালকৃষ্ণের বিরুদ্ধে বিভ্রান্তিমূলক বিজ্ঞাপন প্রচার করার মামলা দায়ের হয়েছিল। সেই মামলাতেই কেন্দ্রের তরফে জানানো হল, করোনিলকে কোনওদিনই করোনার ওষুধ বলে প্রচার করার অনুমতি দেওয়া হয়নি বলেও জানানো হয় কেন্দ্রের তরফে। সুপ্রিম কোর্ট জানায়, কেন্দ্রের এই জবাবে তারা সন্তুষ্ট নন।
সঠিকভাবে হলফনামা জমা না দেওয়ায়, এদিন পতঞ্জলি সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা রামদেব ও বালকৃ্ষ্ণকে তীব্র ভৎসর্না করেছিল শীর্ষ আদালত। গত মাসেই পতঞ্জলি ক্ষমা চেয়ে যে পত্র দাখিল করেছিল, তাও গ্রহণ করতে অস্বীকার করে আদালত। আজ তাদের নতুন করে হলফনামা জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। একইসঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছেও জানতে চাওয়া হয়েছিল যে তারা কেন এই বিজ্ঞাপন নিয়ে চোখ বুজে ছিল?
এদিন কেন্দ্রের তরফে জবাবে বলা হয়, ম্যাজিক শুশ্রষা সংক্রান্ত বিজ্ঞাপনের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার দায়িত্ব রাজ্যের কাঁধে।
করোনিল, করোনাকালে তৈরি এই আর্যুবেদিক ওষুধ করোনা সংক্রমণ থেকে সুস্থ করে দিতে পারে বলে দাবি করেছিল পতঞ্জলি। কেন্দ্রের তরফে হলফনামায় বলা হয়, আয়ুষ মন্ত্রকের তদন্ত না হওয়া অবধি এই ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করতে বারণ করা হয়েছিল। কেন্দ্রের জবাবে আরও বলা হয়েছে, রাজ্যের লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছিল যে করোনিল ট্যাবলেটকে করোনা প্রতিরোধের ওষুধ হিসাবে নয়, বরং চিকিৎসায় সহযোগী ওষুধ হিসাবে গণ্য করা যেতে পারে। করোনার চিকিৎসা নিয়ে মিথ্যা দাবি ঘিরেও সক্রিয় পদক্ষেপ করে কেন্দ্রীয় সরকার। রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে করোনা চিকিৎসায় আয়ুষ সংক্রান্ত দাবি নিয়ে বিজ্ঞাপন প্রচার বন্ধ করতেও নির্দেশ দেওয়া হয়।
কেন্দ্রের হলফনামায় সাফ বলা হয়েছে, “বর্তমান নীতি আয়ুষ ও অ্যালোপ্যাথির সমন্বিত চিকিৎসা মডেলকেই সমর্থন করে। এটা কোনও ব্যক্তি বা চিকিৎসা চান, এমন ব্যক্তির ব্যক্তিগত পছন্দ যে তিনি আয়ুষ নাকি অ্যালোপ্যাথিক ওষুধে ভরসা রাখবেন। নাগরিকদের স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য সরকার প্রতিটি স্বাস্থ্য পরিষেবাকে শক্তিশালী করতে চায়।”
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালে ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন সুপ্রিম কোর্টে পতঞ্জলির মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর বিজ্ঞাপনের বিরুদ্ধে মামলা করে। মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের তরফে জানানো হয়, এই ধরনের একাধিক বিজ্ঞাপনে অ্যালোপ্যাথি ও চিকিৎসকদের সম্পর্কে নেতিবাচক প্রচার করা হয়েছিল।
উত্তরাখণ্ড সরকারের তরফেও সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা জমা দিয়ে জানানো হয়েছে, পতঞ্জলি যাতে আইনানুযায়ী কার্যকলাপ করে, তার জন্য যথাযথ পদক্ষেপ ও কড়া নজরদারি করা হয়েছে। রাজ্য সরকারের তরফে পতঞ্জলিকে একাধিক নোটিস পাঠানো হয়েছে।