নয়া দিল্লি: দিন দিন বিপদ বাড়ছে ইউক্রেনে(Ukraine)। ৯ দিন পরও ক্রমাগত হামলা চালিয়েই যাচ্ছে রুশ সেনা (Russian Army)। দখল নেওয়ার চেষ্টা করছে ইউক্রেনের রাজধানী সহ বড় বড় শহর। এই কঠিন পরিস্থিতির মাঝেই জোরকদমে চলছে সে দেশে আটকে পড়া ভারতীয়দের উদ্ধার (Evacuation) করে আনার কাজ। গত সপ্তাহে ইউক্রেনে রাশিয়া সামরিক অভিযান শুরু করার পরই বিদেশ মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছিল, ইউক্রেনে প্রায় ১৮ থেকে ২০ হাজার ভারতীয় আটকে পড়েছেন, এদের মধ্যে ১৬ হাজারই পড়ুয়া। পরিস্থিতি জটিল হতেই কেন্দ্রের তরফে তড়িঘড়ি বিশেষ বিমানের ব্যবস্থা করে ভারতীয়দের ফিরিয়ে আনার কাজ শুরু হয়। ইউক্রেনের এয়ারস্পেস বন্ধ থাকায় প্রতিবেশী দেশগুলি থেকেই ওই বিশেষ বিমান ছাড়ছে। শুক্রবার কেন্দ্রের তরফে জানানো হল, প্রায় ১০ হাজারেরও বেশি ভারতীয়কে এখনও অবধি ফিরিয়ে আনা সম্ভব হলেও, এখনও প্রায় ২-৩ হাজার ভারতীয় ইউক্রেনে আটকে রয়েছে। তাদের দ্রুত উদ্ধার করে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে।
কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছে, কমপক্ষে ১ হাজার ভারতীয়, যাদের মধ্যে ৭০০ জন সুমিতে এবং ৩০০ জন খারকিভে আটকে রয়েছে। পূর্ব ইউক্রেনের এই জায়গাগুলিতেই মূলত সংঘর্ষ চলছে রুশ ও ইউক্রেনীয় সেনার মধ্যে। আটকে পড়া ভারতীয়দের নিরাপদভাবে বের করে আনার জন্য বাসের ব্যবস্থা করাই সবথেকে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে জানায় কেন্দ্র।
বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচী প্রেস বিবৃতিতে বলেন, “যতক্ষণ অবধি ইউক্রেন থেকে শেষ ভারতীয়কে উদ্ধার করে আনা হচ্ছে, ততদিন অবধি অপারেশন গঙ্গা চালু থাকবে। এখনও অবধি প্রায় ২-৩ হাজার ভারতীয় ইউক্রেনে আটকে রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। এই সংখ্যাটি কম-বেশি হতে পারে। আপাতত আমাদের প্রাথমিক লক্ষ্য ভারতীয় পড়ুয়াদের পূর্ব ইউক্রেনের সংঘর্ষস্থলগুলি থেকে বের করে আনা। আমরা দুই পক্ষের (রাশিয়া ও ইউক্রেন) কাছেই সাহায্যের আবেদন জানিয়েছি যাতে আমাদের দেশের নাগরিকদের সুরক্ষিতভাবে ফিরিয়ে আনতে পারি। যদি সংঘর্ষস্থলগুলিতে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হয়, তবে খুবই ভাল হয়।”
অরিন্দম বাগচী জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় মিশন গঙ্গার অধীনে ১৫টি বিমান দেশে এসে পৌঁছেছে, তাতে ৩ হাজার ভারতীয় ফিরে এসেছেন। আগামী ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৬টি বিমান ইউক্রেনের প্রতিবেশী দেশগুলি থেকে ভারতের উদ্দেশে রওনা দেবে।
গতকালই সুমিতে আটকে পড়া ভারতীয় ডাক্তারি পড়ুয়ারারা ভিডিয়ো প্রকাশ করে সরকারের কাছে সাহায্য প্রার্থনা করেন। ওই ভিডিয়ো বার্তায় পড়ুয়ারা জানিয়েছেন, তারা প্রায় ৮০০-৯০০ জন হস্টেলে আটকে রয়েছেন। খাবার বা পানীয় জলটুকুও নেই তাদের কাছে। এদিকে বাইরে একদিকে যেমন প্রবল ঠাণ্ডা, তেমনই গোলাগুলি চলছে। সরকারের কাছ থেকে সাহায্যের আশা করলেও, এখনও অবধি কোনও তথ্যই জানতে পারেননি। কেউ কেউ রাশিয়ার সীমান্তে বাস অপেক্ষা করছে বলে জানালেও, তা হস্টেল থেকে ৫০ কিমি দূরে হওয়ায়, গোলাবর্ষণের মাঝে সেখানে পৌঁছনো অসম্ভব হয়ে উঠেছে। এয়ারস্ট্রাইকেরও আশঙ্কা করা হচ্ছে।